কর্ণফুলী নদী থেকে প্রায় দেড়শ বছর আগে ডুবে যাওয়া একটি জাহাজের অংশবিশেষ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে বন্দরের চ্যানেলে জাহাজ চলাচলে ঝুঁকি কিছুটা হলেও কমে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। হীরামনি স্যালভেজ লিমিটেড নামের একটি বেসরকারি উদ্ধারকারী প্রতিষ্ঠান শনিবার জাহাজটির দুই-তৃতীয়াংশ উদ্ধার করে।
সল্টগোলা ব্রিজ ও ডাঙ্গারচরের মাঝামাঝি কর্ণফুলী নদীর তলদেশে থেকে এসব অংশবিশেষ উদ্ধার করা হয়। জাহাজের ভেতরে পাওয়া গেছে আসবাবপত্র, অসংখ্য মদের বোতল, দূরবীন, হাতির দাঁত, কাপ-পিরিচ, হাঁড়ি-পাতিল, কয়েনসহ নানা রকম পুরোনো জিনিসপত্র। জাহাজের ইঞ্জিনসহ পেছনের কাঠামো উদ্ধার করা হয়েছে, যা স্ক্র্যাপ অবস্থায় নদীর তলদেশে ছিল। বালুতে আটকা অবস্থায় ছিল বাণিজ্যিক জাহাজটি। ডুবে যাওয়া জাহাজটির আরও একটি অংশ এখনো নদীতে রয়েছে। সেটিও উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
হীরামনি স্যালভেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জিহাদ হোসেন বলেন, জাহাজের ভেতরে আসবাবপত্র, হাতির দাঁত ও কিছু ধাতব মুদ্রাসহ তামা পিতলের তৈরি অনেক এনটিক জিনিসপত্র পাওয়া গেছে। যেগুলো ব্রিটিশ আমলের। কয়েকটি মুদ্রার গায়ে ১৮৬২ সাল উল্লেখ রয়েছে।
আমরা ধারণা করছি জাহাজটি প্রায় দেড়শ বছর আগে ডুবে গিয়েছিল। বাণিজ্যিক জাহাজটি পণ্য নিতে চট্টগ্রাম বন্দরে এসে ডুবে গিয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। ওই সময়কালে উপমহাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশে হাতির দাঁত রপ্তানি হতো। জাহাজটির ইঞ্জিন কয়লাচালিত। কয়লার মজুতও এখনও জাহাজটিতে রয়েছে।
তিনি জানান, কর্ণফুলী ও বন্দরের বহির্নোঙরে দীর্ঘদিন ধরে ডুবে থাকা ৩টি জাহাজ নিজস্ব খরচে উদ্ধারের জন্য ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে স্যালভেজ প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চুক্তি হয়। এর আওতায় তারা উদ্ধার অভিযানে নামে। উদ্ধারের নিজস্ব ডুবুরি দল ও বার্জ ব্যবহার করা হয়। হীরামনি স্যালভেজ চট্টগ্রাম বন্দর এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এখনো পর্যন্ত শতাধিক জাহাজ উদ্ধার করেছে।
উদ্ধার করা জাহাজটি স্ক্র্যাপ হিসাবে বিক্রি করে খরচ ওঠানো হবে বলে তিনি জানান।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, নানা কারণে কর্ণফুলী নদী ও বন্দরের বহির্নোঙরে মাঝেমধ্যে জাহাজডুবির ঘটনা ঘটে। ডুবে থাকা জাহাজের চারপাশে বালি জমে নাব্য সমস্যা দেখা দেয়। তাই ডুবে থাকা জাহাজ উদ্ধার করা গেলে বন্দরের লাভ। জাহাজ চলাচল ঝুঁকিমুক্ত হয়।