সারা বছরই লেগে থাকে ট্রেনের টিকিট সঙ্কট। কিন্তু কালোবাজারে টিকিটের অভাব নেই! কাউন্টারে টিকিট বিক্রি না করে, যাত্রীদের বলা হয় আসন খালি নেই। পরে ওই টিকিট নিজেরাই কিনে নেয় কাউন্টারের কর্মচারীরা। বেশি দামে বিক্রি করা হয় কালোবাজারে।
রেলের তদন্তে দিনাজপুর স্টেশনে টিকিট বিক্রিতে এমনই অনিয়ম ধরা পড়েছে। এতে জড়িত থাকার অভিযোগে দিনাজপুরের স্টেশন মাস্টার শঙ্কর কুমার গাঙ্গুলিসহ চারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
তবে স্টেশন মাস্টারের দাবি, টিকিট অবিক্রিত রাখার অভিযোগ ভিত্তিহীন। ভুলবশত কাউন্টারে টিকিট না থাকার বিজ্ঞপ্তি লাগানো হয়েছিল।
গত ৩-৫ ডিসেম্বর দিনাজপুর স্টেশনে বিজ্ঞপ্তি লাগানো ছিল ‘দ্রুতযান এপপ্রেস’, ‘পঞ্চগড় এপপ্রেস’ এবং ‘একতা এপপ্রেস’র ট্রেনের কোনো আসন খালি নাই। ৩ থেকে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত চার দিনে ওই তিনটি ট্রেনের দুই হাজার ৯০৮টি টিকিট বরাদ্দ ছিল দিনাজপুর স্টেশনের জন্য।
রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের নির্দেশে কর্মকর্তারা তদন্তে নেমে দেখতে পান, বরাদ্দের বিপরীতে এক হাজার ৮২১টি টিকেট বিক্রি হয়েছে। বাকি এক হাজার ১০৫টি টিকিট অবিক্রিত রেখে, ‘আসন খালি নেই’ বিজ্ঞপ্তি লাগানো হয়েছিল কাউন্টারে।
রেলের লালমনিরহাট বিভাগের বিভাগীয় ট্রাফিক তত্ত্বাবধায়ক (ডিটিএস) স্নেহাশিষ দাস গুপ্ত তার প্রতিবেদনে বলেছেন, যাত্রীদের সঙ্গে প্রতারণা ও রেলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের উদ্দেশ্যে টিকিট অবিক্রিত রাখা হয়েছিল বলে ধারণা করা যায়। স্টেশনর মাস্টার শঙ্কর কুমার গাঙ্গুলী, ভারপ্রাপ্ত বুকিং সহকারী মো. আব্দুল আল মামুন ও বুকিং সহকারী রেজওয়ান সিদ্দিক সরাসরি ষড়যন্ত্রে জড়িত। বুকিং সকারী মো: আব্দুল কুদ্দুসের কাউন্টারে অতিরিক্ত টাকা পাওয়া গেছে। তাদের চারজনকে রোববার সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
তদন্ত সংশ্নিষ্টরা জানিয়েছেন, কাউন্টারে টিকিট অবিক্রিত রাখার মাধ্যমে দুই ধরনের দুর্নীতি করা হয়। বুকিং সহাকারীরা নিজেরাই টিকিট কিনে তা বেশি দামে কালোবাজারে বিক্রি করেন। আর যেসব আসন খালি থাকে, তাতে টাকার বিনিয়মে টিকিটবিহীন যাত্রীদের বসায় ট্রেন পরিচালনায় নিয়োজিতরা।
শঙ্কর কুমার গাঙ্গুলী দাবি করেছেন, ৩-৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ‘দ্রুতযান এক্সপ্রেস’, এবং ‘একতা এক্সপ্রেস’র কোনো টিকিট অবিক্রিত ছিল না। তদন্তে ভিত্তিহীন প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। ‘পঞ্চগড় এক্সপ্রেস’র কিছু টিকিট অবিক্রিত ছিল। বুকিং সহকারীরা ভুলবশত বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল, ‘পঞ্চগড় এক্সপ্রেস’-এ আসন খালি নেই।