আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সময়ের প্রয়োজনে কাজের গতি বাড়াতে মন্ত্রিসভায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। কাজের সুবিধার জন্য দুই মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে।
সোমবার রাজধানীর বনানীতে সেতু ভবনে সেতু বিভাগের চলমান প্রকল্প সমন্বয় বিষয়ক বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তিনি এসব কথা বলেন। গত রোববার মন্ত্রিসভায় রদবদলের আগে থেকেই গুঞ্জন ছিল, কয়েকটি মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর বিরোধ ও ক্ষমতার টানাটানি চলছে। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ গুঞ্জন নাকচ করে দিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী টিম লিডার। তিনি জাহাজের ক্যাপ্টেন। জাহাজ যেন ভালোভাবে পূর্ণ গতিতে চলে, সুসমন্বিতভাবে চলতে পারে, সেজন্য সময়ের চাহিদা মেটাতে প্রধানমন্ত্রী পরিবর্তন এনেছেন।
গুরুতর হৃদরোগে আক্রান্ত ওবায়দুল কাদেরকে গত ৪ মার্চ উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। গত বুধবার দেশে ফেরেন তিনি। গতকাল রোববার থেকে কাজ শুরু করেছেন। সেদিন তিনি সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে এবং সোমবার সেতু বিভাগে অফিস করেন।
সেতু বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিভিন্ন প্রকল্পের পরিচালকের সঙ্গে বৈঠকের পর সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পের অগ্রগতি হয়েছে ৬৭ ভাগ। আগামীকাল মঙ্গলবার অথবা পরশু বুধবার সেতুর ১৩তম স্প্যান বসবে। সোমবার রাজধানীর বনানীতে সেতু ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তিনি এ তথ্য জানিয়েছেন।
মন্ত্রী জানান, পদ্মায় মূল সেতুর কাজ শেষ হয়েছে ৭৬ ভাগ। নদীশাসনের কাজ হয়েছে ৫৫ ভাগ। সেতুর ২৬২টি পাইলের ২৩৬টির কাজ শেষ হয়েছে। বাকি ২৬টি পাইলের কাজ শেষ হবে জুলাই মাসের মধ্যে। সেতুর ৪২টি খুঁটির (পিয়ার) মধ্যে ২৫টির কাজ শেষ। আগামী জুনের মধ্যে আরও ছয়টি পিয়ারের কাজ শেষ হবে। বাকি ১১ পিয়ারের কাজ চলছে। সেতুর দুই প্রান্তে, মাওয়া ও জাজিরা ভায়াডাক্টের পাইলিং এবং পিয়ারের কাজ শেষ হয়েছে। পিয়ার ক্যাপ ও গার্ডার স্থাপনের কাজ চলছে।
সেতুমন্ত্রী জানান, চট্টগ্রামের কর্ণফুলীর নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলেছে। এরই মধ্যে ১৬০ মিটার টানেল খননের কাজ শেষ হয়েছে। কর্ণফুলী টানেল প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি শতকরা ৩৮ ভাগ। ২০২২ সালে নির্মাণকাজ শেষ হবে।
ঢাকা এলিভেটেড এপপ্রেসওয়ের এক হাজার ৩৩৩টি পাইলের ৩০০টির পাইল ক্যাপ, ৭৯টি ক্রস-বিম ও ১৮৭টি কলামের কাজ শেষ হয়েছে। ১১৯টির আংশিক কাজ শেষ হয়েছে। ১৮৬টি আই গার্ডার নির্মিত হয়েছে।
অন্যদিকে, পাতাল রেল (সাবওয়ে) নির্মাণের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনার পরামর্শক প্রতিষ্ঠান প্রাথমিক প্রতিবেদন দাখিল করেছে। আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সমীক্ষার কাজ শেষ হবে। যমুনা নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে।