বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত খুনি ক্যাপ্টেন (অব.) আব্দুল মাজেদকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সোমবার দিবাগত রাতে গ্রেফতারের পর মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে পেশ করার পর তার মামলার সমস্ত নথি দেখে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। বর্তমানে তাকে আদালত থেকে কারাগারে নেওয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১২ টার দিকে ফৌজদারি কার্যবিধি ৫৪ ধারায় তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)। এসময় বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় গ্রেফতার না দেখানো পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে কাউন্টার টেরোরিজম। আবেদনে বলা হয়, আসামি ক্যাপ্টেন (অব.) আবদুল মাজেদ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। সে দীর্ঘদিন পলাতক ছিল। এই মামলায় তাকে গ্রেফতার না দেখানো পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখার আবেদন করছি। আদালত শুনানি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
গ্রেফতারের পর মাজেদ জানান,তিনি ২৪-২৫ বছর ধরে ভারতের কলকাতায় অবস্থান করছিলেন। সেখান থেকে তিনি নিজেই বাংলাদেশে এসেছেন। তবে কবে এসেছেন সে সম্পর্কে কিছু বলেননি তিনি।
এর আগে, সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটায় মিরপুর সাড়ে ১১ নম্বর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পলাতক ছয় আত্ম-স্বীকৃত খুনির মধ্যে তিনি অন্যতম। পলাতক বাকি পাঁচ খুনিরা হলো আব্দুর রশিদ, শরিফুল হক ডালিম, এম রাশেদ চৌধুরী, এসএইচএমবি নূর চৌধুরীও রিসালদার মোসলেম উদ্দিন।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ৩৪ বছর পর এ হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে ২০০৯ সালের ১৯ নভেম্বর। খুব ধীরে দীর্ঘ বারো বছরে নিম্ন আদালত থেকে শুরু করে আইনের প্রতিটি ধাপ স্বচ্ছতার সঙ্গে অতিক্রম করে সর্বোচ্চ আদালতের মাধ্যমে স্বঘোষিত খুনিদের মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়া হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১২ আসামির মধ্যে কারাবন্দি পাঁচ আসামির ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি দিবাগত রাতে ফাঁসি কার্যকর হয়। তারা হলেন সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, মুহিউদ্দিন আহমেদ, বজলুল হুদা ও এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদ।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অন্য পাঁচ আসামি এখনো পলাতক। তারা হলেন—খন্দকার আবদুর রশিদ, শরীফুল হক ডালিম, এ এম রাশেদ চৌধুরী, এস এইচ এম বি নূর চৌধুরী ও মোসলেম উদ্দিন। এদের মধ্যে লে. কর্নেল (অব.) খন্দকার আব্দুর রশিদ (বরখাস্ত) লিবিয়া ও বেলজিয়ামে অবস্থান করছেন। বেশিরভাগ সময় লিবিয়াতে থেকেই ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন। লে. কর্নেল (অব.) শরীফুল হক ডালিম (বরখাস্ত) পাকিস্তানে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। পাকিস্তান থেকে হংকংয়ে তার যাতায়াত রয়েছে বলে একাধিক সূত্রে প্রকাশ। লে. কর্নেল (অব.) এ এম রাশেদ চৌধুরী (বরখাস্ত) যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে, লে. কর্নেল (অব.) এন এইচ এমবি নূর চৌধুরী (বরখাস্ত) কানাডায় রয়েছেন। আরো একজন ভারতে কারাগারে আটক বলে অনেকে ধারণা প্রকাশ করা হয়েছে যার নাম রিসালদার মোসলেম উদ্দিন।