কারা বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন? লক্ষণ কী? কী করতে হবে ?
মানব দেহে ছত্রাকের আক্রমন নতুন কিছু নয়। চর্মরোগে অনেকেই আক্রান্ত হন। চিকিৎসকের পরামর্শে সেসব ভালোও হয়ে যায়।
তবে ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ বা কালো ছত্রাকে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়ে বিস্তারিত জানা জরুরী। কারণ এটা প্রাণহানীর কারণ হতে পারে।
মিউকরমাইকোসিস ছত্রাকের আক্রমণে এই রোগ হয়।
মিউকরমাইকোসিস কি?
যুক্তরাষ্ট্রের ‘সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল ‘সিডিসি’র দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, “দুর্লভ এই ছত্রাক সংক্রমণের জন্য দায়ী ‘মিউকরমাইসিটিস’ নামক এক শ্রেণীর ‘মোল্ড’ বা ছত্রাক।
ভারত ও চীনে এর আগেও এই রোগ দেখা গেছে ডায়াবেটিস, ক্যান্সার ও এইডস রোগীর মাঝে।
আর বর্তমানে যারা ‘কোভিড-১৯’ থেকে সুস্থ হচ্ছেন এবং বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, বৃক্ক বা ‘কিডনি’য়ের সমস্যা, ক্যান্সার ইত্যাদি দূরারোগ্য ব্যধি আছে তাদের এই ছত্রাকে সংক্রমণের শিকার হতে দেখা যাচ্ছে।
যেভাব ছত্রাক শরীরে প্রবেশ করে
ভারতীয় সংবাদ ভিত্তিক ওয়েবসাইট, ‘ফার্স্টপোস্ট’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, “ভারতে এই ছত্রাকে আক্রান্ত হওয়ার পেছনে মূল কারণ হল কৃত্রিম অক্সিজেন সরবরাহের অপরিচ্ছন্ন পদ্ধতি। সেই সঙ্গে ভূমিকা রাখছে ‘কোভিড-১৯’য়ে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় বাছবিচারহীন-ভাবে ‘স্টেরয়েড’য়ের ব্যবহার।”
কালো ছত্রাকের লক্ষণ
কালো ছত্রাক সংক্রমণের কারণে নাকে ব্যথা ও ফোলাভাব দেখা দেয়, গালে প্রদাহ সৃষ্টি হয়, মুখে এবং চোখের পাতায় ছত্রাকের ছোপ দেখা দেয়।
যাদের মধ্যে এর সংক্রমণ ঘটেছে, তাদের মাথা ব্যথা, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, নাক দিয়ে রক্ত পড়া, মুখের একপাশ ফুলে যওয়া, চোখ ফুলে যাওয়া বা চোখে ব্যথা করা, চোখের পাপড়ি ঝরে পড়া, ঝাপসা দেখা এবং এক সময় দৃষ্টি হারানোর মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
কারও কারও ক্ষেত্রে নাকের আশপাশে চামড়ায় কালচে দাগ দেখা দিতে পারে।
ছোঁয়াচে কিনা ?
এই ছত্রাক ছোঁয়াচে বা সংক্রামক নয়। একজন মানুষ থেকে আরেকজন মানুষের মাঝে ছড়ায় না।
কাদের ঝুঁকি বেশি
‘দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস’ বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে জানায়,
যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল, এক বা একাধিক দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত এবং বিনা সতর্কতায় ‘স্টেরয়েড’ ব্যবহার করেন, তাদের এই ছত্রাকে আক্রমণের শিকার হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
করণীয় কী
ছত্রাক সংক্রমণের উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপণ্ন হতে হবে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’য়ের প্রতিবেদন অনুসারে, “চিকিৎসকরা মস্তিষ্ক, সাইনাস ও নাকের ভেতরের অংশের ‘এমআরআই’ ও ‘সিটি স্ক্যান’ করবেন। পরে নাকের ভেতরের অংশে ‘এন্ডোস্কোপি’ করা হবে ছত্রাক সংক্রমণ শনাক্ত করা উদ্দেশ্যে।”
শনাক্ত হওয়ার পর সকল ‘ফাংগাল’ ও ‘নারকোটিক টিস্যু’ নাকের ভেতর থেকে অপসারণ করা হবে এবং ‘অ্যান্টিফাংগাল’ ওষুধের সাহায্যে চিকিৎসা চলতে থাকবে।