কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) প্রথম সমাবর্তনে গ্র্যাজুয়েটদের মধ্যে ভুলে ভরা মূল সনদপত্র বিতরণের অভিযোগ উঠেছে। অধিকাংশ সনদে কারও নিজের নাম, কারও বিভাগের নাম, আবার কারও হলের নামের বানানে ভুল রয়েছে।
সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ থেকে বিতরণ করা মূল সনদপত্রে এমন ভুল বানান মুদ্রণ নিয়ে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে বানানে ভুলের এমন সনদপত্রের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়েছে। এ নিয়ে মুখরোচক সমালোচনায় চাউর হচ্ছে ফেসবুকসহ নানা মাধ্যম। প্রতিষ্ঠার তের বছর পর গত ২৭ জানুয়ারি কুবির প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠান হয়।
বেশ কয়েকটি মূল সনদপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, Public Administration বিভাগের মোস্তফা কামালের সনদে (২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষ) Pablic Administration মুদ্রণ হয়েছে। বিভাগের নামের এমন ভুল রয়েছে ওই ব্যাচের সকল শিক্ষার্থীর মূল সনদপত্রে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য অনুযায়ী নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরাণী হলের ইংরেজি নামের বানান Nawab Foyzunnesa Chowdhurany Hall. কিন্তু ওই হলের শিক্ষার্থীদের মূল সনদপত্রে Nawab Faizunnissa Chaudhurani Hall বানান মুদ্রণ হয়েছে। শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের ইংরেজি নামের বানান দুইটি সনদপত্রে দুই ধরনের মুদ্রণ হয়েছে। এছাড়া সনদে Cumilla এর স্থলে Comilla, গ্র্যাজুয়েটদের অনেকের বিভিন্ন বিভাগ এবং তাদের নামেরও ভুল বানান মুদ্রণ হয়েছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
সনদ পাওয়া মোস্তফা কামাল বলেন, ‘একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল সনদে এরকম ভুল বানান মুদ্রণ করে বিতরণ করা হবে- তা ভাবা যায় না। আমাদের ব্যাচের সকলের সনদে এমনটি হয়েছে, যা দুঃখজনক।’
নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরাণী হলের শিক্ষার্থী লিমা আক্তার বলেন, ‘সনদে হল এর নামের বানানে এমন ভুল সত্যিই হতাশার। কুবি প্রশাসন কিংবা সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলগণ কোনোভাবেই এর দায় এড়াতে পারেন না।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্তত ৮ জন শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘মূলত গ্র্যাজুয়েটদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ করার জন্যেই সমাবর্তন অনুষ্ঠান করা হয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ থেকে এমন ভুল বানানের সনদ বিতরণ করায় আমরা মর্মাহত। এক্ষেত্রে গ্র্যাজুয়েটরা তাদের সনদের বানান সংশোধনে উল্টো ভোগান্তির মুখে পড়েছেন।’
এবিষয়ে কুবির উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এবং সনদ তৈরি ও বিতরণ উপ-কমিটির সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল-মামুন সাংবাদিকদের বলেন, ‘সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিতরণ করা মূল সনদে বানান ভুল থাকার বিষয়টি আমার জানা নেই। আমরা তো নাম ও রেজিস্ট্রেশন নম্বরসহ খুঁটিনাটি বিষয়গুলো গুরুত্ব সহকারে অনেকবার দেখেছি। এরপরও ভুল থেকে থাকলে রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
কুবি উপাচার্য প্রফেসর ড. এমরান কবির চৌধুরী বলেন, ‘এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠান হয়েছে। তাই কয়েক হাজার সনদ তৈরি করতে গিয়ে কিছু সনদে হয়তো বানানের ক্ষেত্রে এমন ভুল হতে পারে। তবে যেসব সনদে ভুল বানান মুদ্রণ হয়েছে সেগুলো কোনো ফি ছাড়াই সংশোধন/পরিবর্তন করে দেয়া হবে।’