গত জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়েই পেস তোপের মুখে পড়েছিল বাংলাদেশ। গুটিয়ে গিয়েছিল ৪৩ রানে। একইরকম অভিজ্ঞতা হলো এবার ইংল্যান্ডের। ইংলিশ ব্যাটিং বিধ্বস্ত হলো ক্যারিবিয়ান পেসে। বাংলাদেশের সেই ম্যাচের মতোই ওয়েস্ট ইন্ডিজের ধ্বংসযজ্ঞের নায়ক কেমার রোচ।
বারবাডোজ টেস্টে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৭৭ রানেই গুটিয়ে গেছে ইংল্যান্ড। অনেক ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকা মাঠ কেনসিংটন ওভালের ৮৯ বছরের পথচলায় সর্বনিম্ন টেস্ট স্কোর এটি।
এক স্পেলেই ৫ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে গুঁড়িয়ে দিয়েছিলেন যিনি, সেই রোচ এবারও দুর্দান্ত এক স্পেলে ২৭ বলের মধ্যে ৪ রানে নিয়েছেন ৫ উইকেট।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংসে তুলেছিল ২৮৯। দ্বিতীয় ইনিংসে বৃহস্পতিবার দিন শেষ করেছে তারা ৬ উইকেটের ১২৭ রান তুলে। দুই দিন শেষেই ক্যারিবিয়ানরা এগিয়ে ৩৩৯ রানে।
দিনের শুরুতে ৮ উইকেটে ২৬৪ রান নিয়ে প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এ দিন যোগ করতে পারে তারা আর ২৫ রান।
ওই ২৫ রানই করেছেন শিমরন হেটমায়ার। ৫৬ রানে দিন শুরু করা ব্যাটসম্যান শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন ৯ চার ও ২ ছক্কায় ১০৯ বলে ৮১ রান করে।
জেমস অ্যান্ডারসন নেন ৫ উইকেট। ২৭ বার ৫ উইকেট নিয়ে ইংলিশ রেকর্ডে স্পর্শ করেন কিংবদন্তি ইয়ান বোথামকে।
ক্যারিবিয়ানরাদের তিনশর নিচে থামিয়ে হয়তো স্বস্তিতেই ছিল ইংল্যান্ড। কে জানত, তাদের অপেক্ষায় এমন দুঃস্বপ্ন!
কিটন জেনিংসকে থামিয়ে ২৩ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন জেসন হোল্ডার। জেনিংসের ১৭ রানই পরে হয়ে থাকে ইনিংসের সর্বোচ্চ।
১ উইকেটে ৩০ রান নিয়ে লাঞ্চে গিয়েছিল ইংল্যান্ড। লাঞ্চের পর রোচের প্রথম চার বলে আসে পাঁচ রান। এরপরই শুরু ধ্বংসযজ্ঞের। বোল্ড করে দেন ররি বার্নসকে।
অসাধারণ স্পেলে এরপর একে একে রোচ তুলে নেন বেয়ারস্টো, স্টোকস, মইন ও বাটলারকে। মাঝে ইংলিশ অধিনায়ক জো রুটকে ফেরান ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক হোল্ডার। ১ উইকেটে ৩৫ থেকে চোখের পলকে যেন ইংল্যান্ড ৭ উইকেটে ৪৯!
নয়ে নেমে স্যাম কারানের ১৪ ও দশে নেমে আদিল রশিদের ১২ রানে তারা যেতে পারে ৭৭ পর্যন্ত।
রোচ ইনিংস শেষ করেছেন ১৭ রানে ৫ উইকেট। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেস চতুষ্টয়ের সবাই পেয়েছেন উইকেটের দেখা।
বড় লিডের পর দ্বিতীয় ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের শুরুটাও হয় ভালো। ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট ও অভিষিক্ত জন ক্যাম্পবেল গড়েন ৫২ রানের উদ্বোধনী জুটি।
স্টোকস ও মইনের বোলিং নৈপুণ্যে এরপর ধস নামে ক্যারিবিয়ান ব্যাটিংয়েও। ৯ রানের মধ্যে হারায় তারা ৫ উইকেট।
ষষ্ঠ উইকেটে ৫৯ রানের জুটিতে লিড আরও বাড়ান হেটমায়ার ও শেন ডাওরিচ। দুটি করে চার ও ছক্কায় ৩১ রান করে হেটমায়ার ফিরে গেছেন দিনের শেষ ওভারে। এরপরও দিনের শেষে অনেক এগিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস:(আগের দিন শেষে ২৬৪/৮) ১০১.৩ ওভারে ২৮৯ (হেটমায়ার ৮১, জোসেফ ০, গ্যাব্রিয়েল ০*; অ্যান্ডারসন ৫/৪৬, কারান ০/৫৪, স্টোকস ৪/৫৯, মইন ১/৫৯, রশিদ ০/৫৬, রুট ০/১০)।
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৩০.২ ওভারে ৭৭ (বার্নস ২, জেনিংস ১৭, বেয়ারস্টো ১২, রুট ৪, স্টোকস ০, বাটলার ৪, মইন ০, ফোকস ২, কারান ১৪, রশিদ ১২, অ্যান্ডারসন ০*; রোচ ৫/১৭, গ্যাব্রিয়েল ১/১৫, হোল্ডার ২/১৫, জোসেফ ২/২০)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস: ৩৬ ওভারে ১২৭/৬ (ব্র্যাথওয়েট ২৪, ক্যাম্পবেল ৩৩, হোপ ৩, ব্রাভো ১, চেইস ০, হেটমায়ার ৩১, ডাওরিচ ২৭*, হোল্ডার ৭*; অ্যান্ডারস ০/৯, কারান ১/২৮, মইন ৩/৪১, স্টোকস ২/৩১, ০/১৭)।