খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের জামাতা বিএসএমএমইউর চিকিৎসক রাজন কর্মকারের মৃত্যু নিয়ে দুই রকম বক্তব্য পাওয়া গেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রাজনের মৃত্যু ঘটেছে বলে তার শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা বললেও হত্যাকাণ্ডের সন্দেহ করছেন তার পরিবারের সদস্যরা।
ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ডা. রাজনের মৃত্যুর পর ভোর থেকে দিনভর উত্তেজনা চলে বেসরকারি ওই হাসপাতালে। পরে পুলিশ গিয়ে হস্তক্ষেপ করে।
স্কয়ার হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, “রাত পৌনে ৪টার দিকে ডা. রাজনকে পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তাকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পর লাইফের কোনো সাইন পাওয়া যায়নি।”
ডা. রাজনের দেহে কোনো জখম ছিল না বলে জানান এই চিকিৎসক।
রাজনের চাচাত ভাই অভি সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের সন্দেহ তাকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। আমরা তার লাশের ময়নাতদন্ত করাতে চাই।”
রাজনের মামা সুজন কর্মকারও ময়নাতদন্তের মাধ্যমে মৃত্যুর কারণ জানতে চেয়েছেন।
রাজনের সহকর্মীরা যারা স্কয়ার হাসপাতালে ছিলেন, তারাও সাংবাদিকদের বলেন, তারা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চান।
শেরে বাংলা থানার ওসি জানে আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, যেহেতু দুই পক্ষ থেকে দুই রকম বক্তব্য এসেছে, তাই লাশ কাউকেই দেওয়া হচ্ছে না। ময়নাতদন্তের পর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
খাদ্যমন্ত্রীর বড় মেয়ে ডা. কৃষ্ণা মজুমদারের স্বামী ডা. রাজন কর্মকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ওরাল অ্যান্ড ম্যাক্সিলোফেসিয়াল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। তার স্ত্রী কৃষ্ণাও বিএসএমএমইউর চিকিৎসক।
এই চিকিৎসক দম্পতির বাসা ঢাকার ইন্দিরা রোডে। সেখান থেকে রোববার ভোররাতে রাজনকে স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, ডা. রাজন মারা গেছেন।
এরপর হাসপাতালে রাজনের বাবার ও শ্বশুর বাড়ির পক্ষের মধ্যে শুরু হয় বাদানুবাদ। রাজনের বাবার পক্ষ চায় লাশের ময়না তদন্ত হোক, অন্যপক্ষ তাতে আপত্তি জানাচ্ছিল।
শেরে বাংলা থানার ওসি জানে আলম বলেন, “স্কয়ার হাসপাতালের ডাক্তাররা বলেছেন, ডা. রাজনের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। তবে যেহেতু বিভিন্ন অভিযোগ এসেছে, এজন্য ময়না তদন্তের ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
ময়নাতদন্তের জন্য লাশ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ বিকালে লাশ পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ময়না তদন্ত ছাড়া লাশ কাউকে দেওয়া হবে না।”
রাজনের পরিবার থানায় অভিযোগ করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কেউ অভিযোগ করলে তদন্ত করে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।