বৈশ্বিক মহামারি করোনার প্রভাবে সম্ভাব্য খাদ্য সংকট মোকাবিলা করতে সরকার সর্বাত্মক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, করোনার দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে সারা বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশ ও এদেশের কৃষকরাও বিরূপ পরিস্থিতির মুখোমুখি। এটি মোকাবিলায় সরকার কৃষিখাতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ভর্তুকিসহ নানা প্রণোদনা দিয়ে যাচ্ছে।
রোববার (৫ জুলাই) আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশের (অ্যামচ্যাম) আয়োজনে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক কৃষকদের সহায়তা দেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধনকাল প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী এ কথা বলেন। রাজধানীতে নিজ সরকারি বাসভবন থেকে অনলাইনের মাধ্যমে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন তিনি।
অ্যামচ্যামের প্রেসিডেন্ট সৈয়দ এরশাদ আহমেদের সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত, বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার, সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহমেদ প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অ্যামচ্যামের ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, করোনার কারণে সম্ভাব্য খাদ্য সংকট মোকাবিলা করতে হলে খাদ্য উৎপাদন আরও বাড়াতে হবে। সে লক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় নিরলসভাবে কাজ করছে। যাতে দেশে খাদ্যের কোনো ঘাটতি না হয়, খাদ্য আমদানি করতে না হয়। বরং দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিশ্বের সম্ভাব্য খাদ্য সংকটে আর্তমানবতার সেবায় বাংলাদেশ যাতে তার উদ্বৃত্ত খাদ্যশস্য নিয়ে সহযোগিতা করতে পারে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ফলে করোনা দুর্যোগের মধ্যেও লক্ষ্যমাত্রার অধিক বোরো ফসল সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে। ইতোমধ্যে মাঠ পর্যায়ে আউশ ধান বীজ, আমন ধান বীজ ও পাট বীজ কৃষকদের মধ্যে সুষ্ঠুভাবে বিতরণ করা হয়েছে। আমনে ও রবি মৌসুমে উৎপাদন বাড়াতে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্র সরকার সবসময়ই সহযোগিতা করে আসছে। অ্যামচ্যামের এ কর্মসূচি এ সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করবে। সিরাজগঞ্জ বন্যাকবলিত এলাকার কৃষকরা এ কর্মসূচির মাধ্যমে উপকৃত হবেন। এসময় যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও অ্যামচ্যামকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
অ্যামচ্যাম নিজেদের দায়িত্বশীলতার অংশ হিসেবে কোভিড-১৯ মহামারির সংক্রমণে আক্রান্ত প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের জন্য ‘কৃষকদের জন্য সহায়তা’ কর্মসূচিটি হাতে নিয়েছে। যাতে কৃষকরা নিজ নিজ পরিবারের তাৎক্ষণিক অর্থনৈতিক চাহিদাগুলো পূরণ করতে পারেন। অ্যামচ্যাম নিজস্ব সদস্যদের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন-সহায়তার ভিত্তিতে সাজিদা ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচিটির আওতায় সিরাজগঞ্জের মোট এক হাজার কৃষক ও তাদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা তথা অনুদান দেওয়া হচ্ছে, যাতে তারা কৃষি কাজে বিনিয়োগের পাশাপাশি জীবিকা উপার্জনের টেকসই উপায় খুঁজে পান। একইসঙ্গে এর মাধ্যমে সরকারের কৃষিবিষয়ক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কৃষকদের সংযোগ ঘটিয়ে দিতে পরামর্শ ও সহায়তা প্রদান করবে।