দেশের বিচার বিভাগ যে স্বাধীন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দুই মামলায় জামিন পাওয়ার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও মানহানির দুই মামলায় মঙ্গলবার খালেদাকে ছয় মাসের জামিন দেয়।
এর প্রতিক্রিয়ায় ওবায়দুল কাদের বলেছেন, “প্রমানিত হল, বাংলাদেশের বিচার বিভাগ কতটা স্বাধীন।”
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কাওলায় ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পকাজের অগ্রগতি দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমরা সবসময়ই বলে আসছি বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করে আসছে। শেখ হাসিনা সরকার আদালতের কার্যক্রমে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করেনি।
“বেগম জিয়ার মামলায়ও আলাদা কিছু হয়নি। এখানে আদালত যখন যে মামলায় জামিন দিতে চেয়েছে, তা স্বাধীনভাবে দিয়েছে। আজকেও যে জামিন দিয়েছে, এই সরকারের আমলে বাংলাদেশের বিচার বিভাগ কতটা স্বাধীন সেটা আবার প্রমানিত হল।”
সরকারের হস্তক্ষেপের কারণে দুর্নীতির মামলায় কারাবন্দি খালেদার মুক্তি মিলছে না বলে তার দলের নেতারা প্রায়ই অভিযোগ করেন।
বিএনপি নেতাদের অভিযোগের বিষয়ে কাদের বলেন, “তারা শুধু বলার জন্যই বলেছেন, বিরোধিতার জন্য বলেছেন। বেগম জিয়ার মুক্তির বিষয়ে তারা দলীয়ভাবে কিছু করতে না পেরে সব কিছু সরকারে ঘাড়ে চাপায়, যত দোষ নন্দ ঘোষ। এটাই তাদের রাজনীতি। আজকে আবারও প্রমাণিত হল বাংলাদেশের বিচার বিভাগ স্বাধীন।
“তিনি (খালেদা জিয়া) জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পথে যে অন্তরায়গুলো আছে সবগুলো মামলায় জামিন পাওয়ার নিশ্চয়তা পেলে জামিন পাবেন, আদালত যদি নির্দেশ দেন তাকে জেলে রাখা হবে না, মুক্তি দেওয়া হবে। এখানে সরকারের কোনো বাধা থাকতে পারে না। সরকার এখানে কোনো অন্তরায় নয়। এটা আদালতের ব্যপার। সব মামলা থেকে জামিন পেলে মুক্তির বিষয়ে সরকার অন্তরায় হবে না।”
উদ্দেশ্যমূলকভাবে সরকার বগুড়া-৬ আসনের উপনিরবাচনে ইভিএম দিয়েছে বিএনপির এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “অতীতে দেখা গেছে ইভিএম যেখানে হয়েছে, সেখানে বিরোধীদলই সুবিধাটা বেশি পেয়েছে, বিরোধীদলই জিতেছে। কাজেই টেকনোলজি নিয়ে সন্দেহ করার কোনো কারণ নেই। বগুড়ায় সুষ্ঠ অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে।”
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু ২০২২ সালে
সরকারি-বেসরকারি (পিপিপি) অংশীদারিত্বে চলমান ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসেওয়ের কাজ ২০২২ সালের মার্চে শেষ হবে বলে জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, “চায়না এক্সিম ব্যংক এই প্রজেক্টে অর্থায়ন করছে। প্রকল্পটি দীর্ঘদীন ঝুলে ছিল অর্থায়নের জন্য। এখন কাজ পুরোদমে চলছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসেওয়ের কাজও এখন দৃশ্যমান।”
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, কুড়িল, বনানী, মহাখালী, তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর, সায়দাবাদ ও যাত্রাবাড়ী হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালীতে গিয়ে শেষ হওয়া এই পথের দৈঘ্য ১৯ দশমিক ৭০ কিলোমিটার বলে জানান ওবায়দুল কাদের।
“প্রকল্পটি তিনটি ধাপে সম্পন্ন হবে। প্রথম ধাপে এয়ারপোর্ট থেকে বনানী, দ্বিতীয় ধাপে বনানী থেকে মগবাজার ও শেষ ধাপে মগবাজার থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত কাজ হবে। প্রথম ধাপের কাজ আগামী জানুয়ারিতে সম্পন্ন হবে। আর মোট কাজ শেষ হবে ২০২২ সালের মার্চ মাসে।”
মেট্রো রেল
মেট্রো রেলের মত পাতাল রেলের দৃশ্যমান কাজ এ বছরই শুরু হবে জানান ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, “পাঁচটি ফেইজে পাতাল রেলের কাজ হবে। এমআরটি লাইন ১, ২, ৪, ৫ ও ৬। আমরা আশা করছি ২০৩০ সালের মধ্যে সবকটি লাইনের কাজ শেষ হবে।
“এমআরটি লাইন-১ এবং পাঁচের কাজ আগে হবে। এমআরটি লাইন-১ এ আছে সাড়ে ১৬ কিলোমিটার, আর পাঁচে আছে সাড়ে ১৩ কিলোমিটার।”