খালেদা জিয়াকে দ্রুত বিদেশে নিতে আবারও সুপারিশ

image-687152-1687020891

শারীরিক নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসা শেষে শনিবার রাতে হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসায় ফিরেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

গত সোমবার গভীর রাতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন। এরপর হাসপাতালে তার বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়।

পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট পর্যালোচনা করে মেডিকেল বোর্ড বাসায় ফেরার সিদ্ধান্ত দেয়। বাসায় থেকেই তার চিকিৎসা চলবে। একই সঙ্গে যত দ্রুত সম্ভব উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে আবারও সুপারিশ করেছে মেডিকেল বোর্ড।

শনিবার রাতে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদার, অধ্যাপক ডা. সামসুল আরেফিন ও অধ্যাপক ডা. ফখরুদ্দিন মো. সিদ্দিকী- এ তিনজন চিকিৎসক বাসায় গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর হাসাপাতালে ভর্তির জন্য বলেন। সে অনুযায়ী ভর্তি করা হয়। এরপর নতুন করে বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়। মেডিকেল বোর্ডে দেশের বাইরে থেকেও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানসহ কয়েকজন চিকিৎসক ছিলেন।

সর্বশেষ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর রিপোর্ট পর্যালোচনা করেন তারা। তাতে দেখা যায়, কিছু সমস্যা ছিল তা কমেছে। আপেক্ষিকভাবে ম্যাডাম কিছুটা সুস্থবোধ করছেন। সে কারনে উনাকে বাসায় রেখে মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধায়নে আগে যেভাবে চিকিৎসা চলছিল, সেভাবেই চলবে।

তিনি বলেন, এবারও মেডিকেল বোর্ড বলেছে ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) ক্রনিক লিভার ডিজিসের পরবর্তী উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যত দ্রুত সম্ভব নিয়ে যেতে। অর্থাৎ লিভারের সর্বশেষ আধুনিক সম্মিলিত সেন্টারে সুপারিশ করেছেন।

ডা. জাহিদ হোসেন আরও বলেন, ম্যাডামের হাসপাতালে ঘনঘন যাওয়ার অর্থ হচ্ছে আমরা উনাকে যেটুকু সঠিক চিকিৎসা দেওয়ার প্রয়োজন, তা পর্যাপ্ত দিতে পারছি না। এ কারণে তিনি শারীরিকভাবে দুর্বলবোধ করছেন। যার জন্য দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার সুপারিশ করেছেন মেডিকেল বোর্ড।

বৃষ্টির মধ্যে বিকাল সাড়ে ৬টার দিকে খালেদা জিয়া হাসপাতাল থেকে বাসার উদ্দেশে রওয়ানা দেন। রাত ৭টা ৫০ মিনিটে তিনি গুলশানের ভাড়া বাসা ফিরোজায় পৌঁছান। এ সময় তার গাড়ি বহরে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ছিলেন। এ সময় তার বাসা ফিরোজার সামনে পুলিশের বাড়তি নিরাপত্তা দেখা যায়।

কারাগার থেকে বাসায় ফেরার পর এ নিয়ে আটবার সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীয় এভারকেয়ার হাসাপাতালে যান। সর্বশেষ গত ৪ মে পাঁচ দিন চিকিৎসা শেষে বাসায় ফেরেন তিনি।

গত বছরের জুনে খালেদা জিয়ার এনজিওগ্রাম করা হলে হৃদযন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর একটিতে রিং পরানো হয়। বাকি দুটি ব্লক তখন ঝুঁকিপূর্ণ ছিল না। এছাড়া তার শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে সেসময় বাকি দুটি ব্লকে রিং পরানো হয়নি।

৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, যকৃত, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালে কারাগারে গিয়েছিলেন। দেশে করোনা মহামারি শুরুর পর পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তাকে নির্বাহী আদেশে ‘সাময়িক মুক্তি’ দেয় সরকার। এরপর থেকে তার দণ্ডাদেশ স্থগিতের মেয়াদ ছয় মাস করে।

Pin It