মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, খালেদা জিয়া মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন বলে বিএনপি যে দাবি করছে- তা সর্বৈব অসত্য ও মিথ্যা। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে তিনি স্বেচ্ছায় ক্যান্টনমেন্টে সুখে-স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপন করেছেন। এরপরও যদি তিনি নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করেন, তাহলে সেটা ইতিহাস বিকৃতিই নয়, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের কটাক্ষ ও অবমাননা করা হবে।
রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ‘বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয় প্রেস ক্লাব।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। এছাড়াও বিশেষ অতিথি ছিলেন মুজিববর্ষ উদযাপন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কামাল নাসের চৌধুরী।
মোজাম্মেল হক বলেন, মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা অনুযায়ী যারা পাক বাহিনীর হাতে নির্যাতিত হয়েছে কেবল তারাই মুক্তিযোদ্ধা। খালেদা জিয়া কি পাক বাহিনীর দ্বারা নির্যাতিত হয়েছেন? তিনি স্বেচ্ছায় ক্যান্টনমেন্টে গিয়েছেন। তাই তিনি নির্যাতনের ক্যাটাগরিতে পড়েন কিনা, সেটা দেশবাসীর বিবেকের কাছে প্রশ্ন।
তারেক জিয়া ‘শিশু মুক্তিযোদ্ধা’ ছিলেন- শনিবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের দেওয়া এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে মোজাম্মেল হক বলেন, শিশু মুক্তিযোদ্ধা সম্পর্কে যেটা বলেছেন সেটা আমার জানা নেই, শুনিও নাই। এ বিষয়ে কীভাবে নিন্দা জানাব, সেই ভাষা আমার নেই। দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের কাছ থেকে এমন কথা শুনে বিস্মিত ও হতবাক হয়েছি। একথা বলেও তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননা করেছেন এবং ইতিহাসের বিকৃতি ঘটিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, খালেদা জিয়া একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে বন্দি ছিলেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আরেকজন মুক্তিযোদ্ধা, তিনি শিশু মুক্তিযোদ্ধা। তিনিও তখন মায়ের সঙ্গে কারাগারে ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্পিকার শিরীন শারমিন বলেন, দেশের আনাচে-কানাচে এখনো যেসব মুক্তিযোদ্ধা বেঁচে আছেন, তাদের কাছ থেকে মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাগুলো জেনে সংরক্ষণ করার উদ্যোগ নেওয়া দরকার। পরে এগুলো কম্পাইল করে ডিজিটাল আর্কাইভ করা যেতে পারে। মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে এটি ভালো উদ্যোগ হতে পারে।