খেলাপি ঋণ অর্থনীতির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ বলে জানিয়েছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি ওসামা তাসির।
শনিবার (০৯ নভেম্বর) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘বেসরকারিখাতের দৃষ্টিতে বাংলাদেশ অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ চিত্র’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, খেলাপি ঋণ অর্থনীতির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সরকার এক অঙ্কের সুদ হারে ঋণ দেওয়ার বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছে, যা আশাব্যঞ্জক। তবে বাস্তবায়নের জন্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, জাতীয় সঞ্চয়পত্রের সুদ হার হ্রাস এবং সুশাসন একান্ত জরুরি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্যোগে একটি পদ্ধতি হাতে নেওয়া যেতে পারে, যার মাধ্যমে ঋণ খেলাপি এবং অনিচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি শনাক্ত করা যেতে পারে। এতে করে খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সুবিধা হবে বলে তিনি জানান।
ডিসিসিআই সভাপতি আরো বলেন, ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত শিল্পখাতে মেয়াদি ঋণ ২০১৮ সালের একই সময়ের তুলনায় সামান্য বেড়েছে। পাশাপাশি একই সময়ে এসএমই ঋণ দেওয়া হয়েছে ১৯ হাজার ৯০৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা। বেশিরভাগ ব্যাংক এখনো ১১ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ সুদ হারে ঋণ দিচ্ছে। এতে করেও খেলাপি ঋণ বাড়ছে বলে তিনি মনে করেন।
ওসামা তাসির বলেন, মুদ্রানীতিতে পরিলক্ষিত হচ্ছে যে খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি, ক্ষুদ্র সঞ্চয়কারীদের সঞ্চয় জাতীয় সঞ্চয়পত্রের দিকে ধাবিত হওয়ার কারণে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ সংকুচিত হয়েছে। এজন্য খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। একইসঙ্গে করের আওতা বৃদ্ধি করা হলে সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে এবং সরকারের ব্যাংক থেকে ঋণগ্রহণ প্রবণতা বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
তিনি আরো বলেন, চলতি বছরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে খাদ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়েছে ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য বাজার পর্যবেক্ষণ বাড়ানোর পাশাপাশি পণ্যের পর্যাপ্ত যোগান নিশ্চিত করা আবশ্যক এবং একইসঙ্গে সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় মূল্য নির্ধারণ করা খুব জরুরি।
ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, বন্ড মার্কেটের অনুপস্থিতি, ভালো প্রতিষ্ঠান এবং সুশাসনের অভাব পুঁজিবাজারের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের অপার সম্ভাবনাকে সীমিত করে রেখেছে।
‘দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের জন্য পুঁজিবাজার স্থাপন এবং স্পেশাল পারপাস ভেহিক্যাল হিসাবে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ব্যবহারকে উৎসাহিত করার আহ্বান জানাচ্ছে ডিসিসিআই। একই সঙ্গে নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাগুলোর উচিত গ্রীনফিল্ড প্রকল্পগুলো অন্তর্ভুক্ত মূলধন সংগ্রহ করার সুযোগ দেওয়া’।
তিনি আরো বলেন, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এসএমই প্ল্যাটফর্ম কার্যকর ব্যবহার করে এসএমই প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে বাজার থেকে মূলধন সংগ্রহ করতে পারে সে ব্যবস্থা নিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন ডিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি ওয়াকার চৌধুরী, সহ-সভাপতি ইমরান আহমেদ ও পরিচালক শামস মাহমুদ প্রমুখ।