গণতন্ত্র সুসংহত করতে সহায়ক আধুনিক ও সুশৃঙ্খল সেনাবাহিনী

image-260449-1626378356

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি অত্যাধুনিক ও শৃঙ্খলাবদ্ধ সেনাবাহিনীর ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, দেশের গণতন্ত্র সুসংহত রাখতে একটি সুশৃঙ্খল ও অত্যাধুনিক সেনাবাহিনী অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এ জন্যই মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে বলীয়ান, সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সর্বোচ্চ ত্যাগে সদা প্রস্তুত, পেশাদার ও দায়িত্বজ্ঞানসম্পন্ন অফিসারদের হাতে এর নেতৃত্ব ন্যস্ত করতে হবে।

বৃহস্পতিবার ( ১৫ জুলাই) সকালে সেনাসদর মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে ‘সেনাসদর নির্বাচনী পর্ষদ-২০২১’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের সাহায্যে ভার্চুয়ালি এই সভায় অংশগ্রহণ করেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে পর্ষদের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের পদোন্নতির লক্ষ্যে ছয় দিনব্যাপী (১৫ থেকে ২০ জুলাই ২০২১) আয়োজিত এই পর্ষদের কার্যক্রম গতকাল শুরু হয়। এই পর্ষদের মাধ্যমে কর্নেল হতে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এবং লে. কর্নেল হতে কর্নেল পদবিতে পদোন্নতির জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দের সমন্বয়ে গঠিত এই পর্ষদের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর ভবিষ্যৎ জ্যেষ্ঠ নেতৃত্বের জন্য যোগ্য ও দক্ষ অফিসারগণ সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে পদোন্নতি পাবেন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে বক্তব্য প্রদান করেন।

প্রধানমন্ত্রী তার দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্যে বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিব জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের এই মহতী বছরে অনুষ্ঠিত সেনাসদর নির্বাচনী পর্ষদ-২০২১ একটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত যে সোনার বাংলা গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছিলেন, তা আজ আর স্বপ্ন নয় বরং একটি বাস্তবতা। দেশ আজ উন্নয়নের সব সূচকে সম্মানজনক একটি অবস্থানে উন্নীত হয়েছে। দেশের সার্বিক উন্নয়ন এবং পার্শ্ববর্তী দেশসমূহের সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বর্তমান সরকার দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে অগ্রাধিকার দিয়ে সশস্ত্র বাহিনীকে একটি আধুনিক, যুগোপযোগী ও পেশাদার বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে বিভিন্ন যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

তিনি বর্তমান সরকারের বিভিন্ন মেয়াদে সেনাবাহিনীর আধুনিকায়ন এবং সশস্ত্র বাহিনীতে নারীর ক্ষমতায়নে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপসমূহ তুলে ধরে বলেন, জাতির পিতার একান্ত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যে অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছিল, তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকারের নিবিড় পরিচর্যায় এই বাহিনী আজ দেশে এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে অত্যন্ত পেশাদার ও দক্ষ একটি বাহিনী হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের যে কোনো দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে দেশের সার্বিক অগ্রযাত্রায় সরকার কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডেও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিশেষ ভূমিকা রাখছে। শৃঙ্খলাই সেনাবাহিনীর মেরুদণ্ড। সেই সঙ্গে পদোন্নতির ক্ষেত্রে সত্য, নির্মোহ, ন্যায়পরায়ণ, জনবান্ধব, মানবিক গুণসম্পন্ন এবং সর্বোপরি কর্মজীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্ব প্রদানে সফল অফিসারদের খুঁজে বের করতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি জেনে খুশি হয়েছি যে, সেনাবাহিনীর অফিসারদের পদোন্নতির জন্য টিআরএসিই-ট্রেস (টার্বুলেটেড রেকর্ড অ্যান্ড কম্পারেটিভ ইভাল্যুয়েশন) পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়, যা তাদের পেশাগত দক্ষতার বিভিন্ন দিকের তুলনামূলক মূল্যায়ন প্রকাশ করে।

সেনাবাহিনীর পদোন্নতি পর্ষদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ ভিডিও টেলি কনফারেন্সের মাধ্যমে সরাসরি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা গ্রহণ করেন। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমদ চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Pin It