গত অর্থবছরে জঙ্গি অর্থায়নের ১৭ তথ্য: বিএফআইইউ

narayanganj-fatullah-militant-hideout-230919-0002

দেশে জঙ্গি অর্থায়নের ১৭টি তথ্য ২০২০-২০২১ অর্থবছরে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে জানিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

মঙ্গলবার মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী অর্থায়ন প্রতিরোধে গঠিত সংস্থাটির সবশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

জঙ্গি অর্থায়নের এসব গোয়েন্দা তথ্যসহ ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ১১ ধরনের অপরাধের ৭৩টি তথ্যের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে পাঠানো হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

গত অর্থবছরে আর্থিক অনিয়ম তদারকির দায়িত্বপ্রাপ্ত গোয়েন্দা সংস্থাটির কাছে সবচেয়ে বেশি ৩৩৪টি আর্থিক তথ্য চেয়েছে পুলিশের সিআইডি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৭৫টি, দুর্নীতি দমন কমিশন ১১৪টি, পুলিশের অন্যান্য বিভাগ ৪৪টি এবং বাংলাদেশ ব্যাংক ৭টি তথ্য চেয়েছে। আর অন্যান্য সংস্থা চেয়েছে ৭৪০টি তথ্য।

বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে সংবাদ সম্মেলন করে বিএফআইইউ এর ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বার্ষিক এ প্রতিবেদন তুলে ধরেন ইউনিটটির প্রধান মো. মাসুদ বিশ্বাস।

প্রশ্নোত্তর পর্বে ওই অর্থবছরে বাংলাদশ থেকে কত টাকা পাচার হয়েছে জানতে চাইলে তা আইনগত কারণে জানানো সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বিএফআইইউ বিভিন্ন সূত্র থেকে মোট ৫ হাজার ২৮০টি সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেনের তথ্য পায়, যেগুলোর ৮৫ শতাংশই এসেছে ব্যাংকগুলো থেকে। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ ১ হাজার ৬৬৭ কোটি টাকা।

২০১৯-২০২০ অর্থবছরের তুলনায় টাকার হিসাবে যা ৭৪ শতাংশ এবং সংখ্যার বিচারে ৪৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেশি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এ সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেনের সবগুলোই অপরাধ নয়। এসব তথ্য বিশ্লেষণ করে সত্যিকারের অপরাধ খুঁজে বের করার কাজটি করে বিএফআইইউ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বিএফআইইউ নিজেরা গবেষণা করে তিনটি জঙ্গি অর্থায়নের ঘটনার তথ্য পেয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে পাঠিয়েছে।

অপরদিকে বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছ থেকে আরও ১৪টি জঙ্গি অর্থায়নের ঘটনার তথ্যের বিষয়ে এ ইউনিটের সাহায্য চাওয়া হয়।
আর বছরজুড়ে ৭৩ অপরাধের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রতারণার ঘটনা সংশ্লিষ্ট তথ্য রয়েছে ২১টি, দুর্নীতি ও ঘুষের ১৬টি, জালিয়াতির ১১টি, টাকা পাচারের ছয়টি, মানব পাচারে চারটি, কর ফাঁকির ঘটনা তিনটি বলে প্রতিবেদনে দেখা গেছে।

আগের বছরের তুলনায় এবার সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেন বাড়ার বিষয়ে বিএফআইইউ এর প্রধান মাসুদ বিশ্বস জানান, আগের চেয়ে প্রশিক্ষণ বাড়ায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেন ধরার ক্ষমতা বেড়েছে।

তবে মাত্র ৭৩টি গোয়েন্দা তথ্যের বিষয়ে পদক্ষেপের বিষয়ে এ ইউনিটের উপমহাব্যবস্থাপক কামাল হোসেন বলেন, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে করোনাভাইরাসের লকডাউনের কারণে কাজ করা যায়নি বলে কম ‘রিপোর্ট’ করা গেছে।

আগের অর্থবছরে ৩ হাজার ৬৭৫টি সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেনের তথ্য বিশ্লেষণ করে মোট ১১৬টি বিভিন্ন অপরাধ খুঁজে বের করেছিল বিএফআইইউ।

Pin It