দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপের রূপ নিয়েছে; যা আরও ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।
তবে বাংলাদেশ উপকূলে এর তেমন কোনো প্রভাব পড়ার শঙ্কা দেখছে না দেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর।
তবে গভীর নিম্নচাপে প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও মংলা সমুদ্রবন্দরে এক নম্বর সতর্ক সংকেত বহাল রাখা হয়েছে।
গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে এর নাম হবে আসানি, এটি শ্রীলঙ্কার দেওয়া নাম।
আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেয় বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার সাইক্লোন সংক্রান্ত আঞ্চলিক সংস্থা এসকাপ। এ অঞ্চলের ১৩টি দেশের দেওয়া নামের তালিকা থেকে পর্যায়ক্রমে নতুন নতুন ঘূর্ণিঝড়ের নাম ঠিক করা হয়।
ভারতীয় আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস ঠিক থাকলে আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের কাছ দিয়ে এগিয়ে ঘূর্ণিঝড়টি বুধবার ভোরে মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
অবশ্য উপকূল অতিক্রমের আগেও ঝড়টি দুর্বল হয়ে যেতে পারে জানিয়ে বাংলাদেশের আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান বলেন, “বাংলাদেশ উপকূলে এর প্রভাব পড়ার শঙ্কা নেই। “
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়, সোমবার সকাল ৬টায় গভীর নিম্নচাপটি উত্তর আন্দামান সাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছিল।
তখন এর অবস্থান ছিল চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১০৬০ কিলোমিটার দক্ষিণে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে।
এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর–উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পযন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছিল।
গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের কাছে সাগর মাঝারি ধরনের উত্তাল রয়েছে। এ কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
সেই সঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগরে থাকা মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে এবং গভীর সাগরে বিচরণ না করতে পরামর্শ দিয়েছে অধিদপ্তর।
সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ও বিস্তার কমছে
এবার শীত বিদায় নিতেই তীব্রতা নিয়ে হাজির হয়েছে গরম। চৈত্রের শুরুতেই মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বইতে শুরু করে দেশের বড় অঞ্চলজুড়ে।
তবে গরম কমতে শুরু করেছে জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, রাজধানীসহ দেশের বিস্তীর্ণ এলাকায় বিরাজমান তাপপ্রবাহের বিস্তার কমছে, সেই সঙ্গে কমছে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান বলেন, “ধীরে ধীরে তাপমাত্রা কমছে। নিম্নচাপের প্রভাব কেটে যাওয়ার পর ২৩ মার্চ দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের কোথাও হালকা বৃষ্টি হতেও পারে।”
সোমবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহীতে ৩৮.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস; এসময় ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
থার্মোমিটারের পারদ ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠলে আবহাওয়াবিদরা তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলেন। উষ্ণতা বেড়ে ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তাকে বলা হয় মাঝারি তাপপ্রবাহ। আর তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেলে তাকে তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়।
আগের দিন রোববার রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও ঢাকায় ছিল ৩৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সোমবার ফরিদপুর, রাঙ্গামাটি, সিলেট, রাজশাহী, নীলফামারী, চুয়াডাঙ্গা জেলার উপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। মঙ্গলবারও তা অব্যাহত থাকতে পারে।