গভীর ঘুমে অচেতন থাকতেই হঠাৎ ঘুম ভেঙে যাওয়ার নানান কারণ থাকতে পারে।
রাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে যাওয়া বিরক্তিকর, আরও বিরক্তিকর হল আবার ঘুম না আসা। এই সমস্যার ভুক্তভোগী হওয়াটা অনন্য কোনো ব্যাপার নয়, অনেকেই আছেন এই তালিকায়। কখনও কি ভেবেছেন এমনটা কেনো হয় বা সমাধানের উপায় কী?
স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে এই বিষয়ের ওপর প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে মধ্যরাতে ঘুম ভেঙে যাওয়ার বিভিন্ন কারণগুলো জানানো হল।
শোবার ঘরের সমস্যা: যেখানে ঘুমাচ্ছেন সমস্যা হয়ত সেখানেই। ঘুমের প্রথম স্তরটি হল মৃদু ঘুম যেখানে ঘুম পাতলা হয় এবং সহজেই ঘুম ভেঙে যেতে পারে। এমতাবস্থায় ঘর বেশি গরম বা ঠাণ্ডা হলে, কোনো শব্দ হলে কিংবা অজানা উৎস থেকে আলো আসলেই ঘুম ভেঙে যেতে পারে। তাই রাতে নির্ভেজাল ঘুম পেতে ঘর হওয়া চাই আরামদায়ক মাত্রায় ঠাণ্ডা, নীরব এবং অন্ধকার।
মানসিক অস্বস্তি: রাতে প্রশান্তির ঘুম হওয়ার পথে একটি বড় বাধা হল মানসিক অস্বস্তি। দুঃস্বপ্ন, হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়ার কারণে ঘুম ভাঙতে পারে। অনেকেই আবার ঘুমের মধ্যে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং ঘুম থেকে লাফিয়ে ওঠেন। গভীর ঘুমে থাকলেও আতঙ্কিত হওয়ার ঘটনা ঘটতে পারে।
অতিসক্রিয় থাইরয়েড গ্রন্থি: শরীরের অনেকগুলো অঙ্গের কার্যাবলী নিয়ন্ত্রণ করে থাইরয়েড গ্রস্থি। এই গ্রন্থি প্রয়োজনের বেশি সক্রিয় হলে তা তৈরি করবে অতিরিক্ত ‘থাইরক্সিন’ হরমোন, যা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের কার্যাবলী ব্যহত করতে পারে। ঘুমের সমস্যা, হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, অতিরিক্ত ঘাম হওয়া, অস্বস্তি, আতঙ্ক ইত্যাদি সাধারণ কিছু ঘটনা যা অতিরিক্ত ‘থাইরক্সিন’য়ের ফলাফল। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
পায়ে অস্থিরতা: ‘রেস্টলেস লেগ সিন্ড্রোম’ নামক এই সমস্যায় পায়ে অস্বস্তিকর অনুভুতি হতে থাকে অনবরত এবং পা নড়াচড়া না করে থাকা যায়। সন্ধ্যায় কিংবা রাতে এমনকি ঘুমের মাঝেও এই সমস্যা আক্রমণ করতে পারে। শরীরে লৌহের অভাবেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। পেশি শিথিল করে এমন কাজ যেমন গরম পানি দিয়ে গোসল করা এই সমস্যার সমাধান দিতে পারে।
অনিদ্রা: ‘স্লিপ অ্যাপনিয়া’ বা অনিদ্রা একটি অতি সাধারণ সমস্যা বর্তমান সময়ে, যাতে সব বয়সের মানুষই আক্রান্ত হতে পারেন। এই সমস্যায় ঘুমের মধ্যে রোগীর শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি কমে যায় কিংবা একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। ‘কন্টিনিউয়াস পজিটিভ এয়ারওয়ে প্রেশার’ (সিপিএপি) হল এই সমস্যার চিকিৎসা পদ্ধতি।
বিষয় হল
রাতে ঘুমের সমস্যা হলে ঘুমানোর আগের অভ্যাসগুলোতে স্বাস্থ্যকর পরিবর্তন আনার চেষ্টা করতে হবে। ঘুমানোর দুই ঘণ্টা আগেই রাতের খাবার সেরে ফেলতে হবে, টেলিভিশন বা মোরাইলের বৈদ্যুতিক পর্দা থেকে দূরে থাকতে হবে। অভ্যাস পরিবর্তনে উপকৃত না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।