ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকরা বুধবার যখন মার্কিন সংসদ ভবন ক্যাপিটলের বাইরে তাণ্ডব চালাচ্ছিলেন, ভেতরে তখন ক্যাপিটলের সব প্রবেশদ্বার বন্ধ করে দেয়া হয়।
দরজার দিকে তাক করে বন্দুক উঁচিয়ে ধরেন নিরাপত্তারক্ষীরা। যে কোনো সময় দরজা ভেঙে ঢুকে পড়তে পারেন উগ্র সমর্থকরা। খবর রয়টার্সের।
এই যখন অবস্থা, তখন শেষমেশ গোপন সুড়ঙ্গ দিয়ে নিরাপদ ঘরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হলো সিনেটরদের। আমেরিকান সময় অনুযায়ী, বুধবার এমনই নজিরবিহীন রুদ্ধশ্বাস নাটকীয় পরিস্থিতি দেখল আমেরিকার আইনসভা।
ট্রাম্পের রিপাবলিকান সিনেটররা এখনও কার্যত পরাজয় মেনে নিতে নারাজ। আলোচনা, বিতর্ক, প্রশ্নোত্তর– এর মধ্যেই চলছে কটাক্ষ, টিকা-টিপ্পনি।
তার মধ্যেই বাইরে হই হট্টগোল। কয়েক হাজার জনতার চিৎকার। তাদের গতিমুখ ক্যাপিটল ভবন। ক্যাপিটলের নিরাপত্তারক্ষীরাও তাদের আটকাতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন। এই গণ্ডগোলের খবর তখন পৌঁছে গেছে ভিতরেও।
সিনেটররাও বাইরের দিকে উঁকিঝুঁকি মারছেন ঠিক কী হয়েছে বোঝার জন্য। আমেরিকার ইতিহাসে এমন ঘটনা কোনো দিন ঘটেনি। ফলে তারাও ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলেন না, কী হয়েছে। তখনও ততটা ‘সিরিয়াসলি’ নেননি সিনেটররা।
কিন্তু বিষয়টি যে ট্রাম্প সমর্থকদের ‘হামলা’, সেটি স্পষ্ট হয় যখন একের পর এক দরজা সজোরে বন্ধ করে দিচ্ছেন নিরাপত্তারক্ষীরা। পর পর ভেঙে পড়ছে দরজা-জানালার কাচ। ট্রাম্পের রিপাবলিকান সিনেটরদের দিকে কটাক্ষ ছুড়ে দিচ্ছেন কেউ কেউ- ডাকুন আপনার নেতাকে! তার জন্যই তো এসব হচ্ছে।
কিন্তু বিষয়টি যে ভয়ানক, সেটি সিনেটররা টের পেলেন আরও কিছুটা পর। ক্যাপিটলের মূল দরজা শুধু বন্ধ করাই নয়, ভেতর থেকে আসবাবপত্র রেখে সাপোর্ট দিয়ে দিয়েছেন নিরাপত্তারক্ষীরা।
হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির ফ্লোর ডিরেক্টর কেইথ স্টার্ন বলেন, প্রত্যেকে নিজের নিজের আসনে বসে পড়ুন। শান্ত থাকুন।
এর মধ্যেই বাইরে কাঁদানে গ্যাসের মতো কিছু একটা ছোড়া হয় হামলাকারীদের আটকানোর জন্য। এবার ঘোষণা– ‘সিটের নিচে রাখা গ্যাস মাস্ক পরে নিন সবাই’।
যে কোনো সময় যে কোনো দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকতে পারে বাইরের আতঙ্ক। গোড়ার দিকে যেটি ছিল কৌতূহলের বিষয়, সেটিই হয়ে দাঁড়াল বিভীষিকা।
শেষ পর্যন্ত আর ঝুঁকি নেননি ক্যাপিটলের নিরাপত্তা অফিসাররা। সিনেটরদের বললেন, সুড়ঙ্গ দিয়ে নিরাপদ কক্ষে পৌঁছে যেতে। সেভাবেই ফাঁকা করা হলো ক্যাপিটল।
হাউস সার্জেন্টকে কোনো এক নিরাপত্তা অফিসারকে নির্দেশ দিতে শোনা যায়, ক্যাপটলকে আমরা যেন নিরাপদ রাখতে পারি, সেটি নিশ্চিত করুন।
সব মিলিয়ে রুদ্ধশ্বাস এক নাটকের সাক্ষী থাকলেন ক্যাপিটল ও সিনেটররা।