গ্রাহকের টাকা ‘আত্মসাৎ’: তিতাস কর্মকর্তা গ্রেপ্তার

titas-accountant-masud-020222-01

রাজধানীর মিরপুরে গ্যাস ও বিদ্যুৎ বিল বাবদ কয়েক কোটি টাকা ‘হাতিয়ে নেওয়া’ একটি ‘প্রতারক চক্রের’ সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তিতাসের এক কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন- পিবিআই।

তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের জ্যেষ্ঠ সহকারী হিসাব রক্ষক মো. মাসুদ মিয়াকে (৫১) মঙ্গলবার রাতে ভাটারা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বর্তমানে তিনি কুড়িল চৌরাস্তা জোন অফিস-৯ কার্যালয়ে কর্মরত। এর আগে তিনি তিতাসের মিরপুর এলাকায় সহকারী হিসাব রক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

পিবিআই কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মো. আশরাফুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, মিরপুর এলাকায় তিতাস গ্রাহকদের দেওয়া গ্যাসবিল ‘আত্মসাতের’ ঘটনায় মাসুদের জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

বিল না দেওয়ার কারণে গত বছর জানুয়ারিতে মনিপুর এলাকার বেশ কিছু গ্রাহকের বিদ্যুৎ এবং গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়ে কর্তৃপক্ষ। নিয়মিত বিল দিয়েছেন দাবি করে এ নিয়ে বিক্ষোভ করেন গ্রাহকরা।

পরে ২০২১ সালের ২ ফ্রেবুয়ারি মিরপুর মডেল থানায় গ্রাহকের দেওয়া তিতাস গ্যাসের বিল হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে একটি প্রতারণার মামলা হয়। দুই মাস পর মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই।

এ ঘটনায় পুলিশের তদন্তে দেখা যায়, মনিপুর এলাকায় ‘ইন্টার্ন ব্যাংকিং অ্যান্ড কমার্স’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নিলেও নির্দিষ্ট খাতে জমা দেয়নি।

পুলিশ পরিদর্শক আশরাফুজ্জামান জানান, মিরপুরের ওই প্রতারণার মামলায় তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রধান আসামি মো. ফারুক এবং তার ভাগ্নে ইমরান হোসেনকে প্রথমে গ্রেপ্তার করা হয়।

পরবর্তীতে মিরপুর এলাকায় তিতাস গ্যাস এবং বিদ্যুতের আউট সোর্সিংয়ের কাজ করা মামুন এবং রাকিবুল ইসলাম রাকিব নামে আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি বলেন, “ফারুকসহ অন্যদের দেওয়া তথ্য এবং তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রায় নিশ্চিত হওয়া গেছে এই প্রতারণার সঙ্গে ওই সময় তিতাসের মিরপুর এলাকায় কর্মরত সহকারী হিসাব রক্ষক মাসুদ মিয়ার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিতাস গ্যাসের কুড়িল জোনের ডিজিএম মোতাহার হোসেন বলেন “পিবিআই থেকে আমাকে জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে তার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।”

পিবিআই কর্মকর্তা জানান, মামলার প্রধান আসামি ফারুক আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে ২০১৮ হতে ২০২০ সাল পর্যন্তু সময়ে ৫ থেকে ৬শ গ্রাহকের দুই কোটি ৩০ লাখ টাকা জমা না করে আত্মসাৎ করার কখা স্বীকার করেছে।

আশরাফুজ্জামান বলেন, “এখন পর্যন্ত ১৩২ জন গ্রাহক এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন, যাদের ৯০ থেকে ৯৫ লাখ টাকা এই চক্রটি আত্মসাৎ করেছে।”

ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের খোঁজে স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্ন সংগঠনের কাছ থেকে সহযোগিতা নেওয়ার চেষ্টা ছাড়াও মসজিদে মসজিদে গিয়েও প্রচার চালানা হয়েছে বলে জানান তিনি।

গ্রাহকের অর্থ আত্মসাতের ওই মামলায় আরও দুইজনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে, তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান পিবিআই কর্মকর্তা আশরাফুজ্জামান।

Pin It