অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ উপকূলের দিকে এগিয়ে আসায় দেশের তিনটি সমুদ্রবন্দরে বিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে।
মোংলা, পায়রায় ৭ নম্বর এবং চট্টগ্রামে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এছাড়া কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
ব্রিটিশ শাসনামলে তৈরি এই সংকেত ব্যবস্থা আন্তর্জাতিক আধুনিক সংকেত ব্যবস্থা থেকে আলাদা। ঝড়ের গতি ও বিপদের সম্ভাব্য মাত্রা বিবেচনায় ১ থেকে ১১ নম্বর সংকেত দিয়ে এখানে সতর্কতার মাত্রা বোঝানো হয়।
সনাতনী এ সংকেত ব্যবস্থা মূলত তৈরি করা হয়েছিল সমুদ্রগামী জাহাজ ও বন্দরের নিরাপত্তার জন্য। জনসাধারণের জন্য সতর্কবার্তার বিষয়টি সেখানে খুব একটা গুরুত্ব পায়নি তখন।
সমুদ্রবন্দরে ঝড়ের সতর্ক বার্তা হিসেবে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত, ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত, ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত, ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেতের পর ৫, ৬ ও ৭ নম্বর বিপদ সংকেত; ৮, ৯ ও ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখানো হয়। সর্বশেষ ১১ নম্বর দিয়ে বোঝানো হয়- যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন।
পাশাপশি অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরের জন্য রয়েছে ১ নম্বর নৌ সতর্ক সংকেত, ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত, ৩ নম্বর নৌ বিপদ সংকেত ও ৪ নম্বর নৌ মহাবিপদ সংকেত।
সমুদ্রবন্দরের জন্য সংকেতগুলোর মধ্যে ৫, ৬ ও ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের মাত্রা একই। আবার ৮, ৯ ও ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতেরও মাত্রা এক। ঝড় কোন দিক দিয়ে যাবে তার ভিত্তিতে নম্বর আলাদা করা হয়, যদিও বিপদ সব ক্ষেত্রেই সমান।
এর ফলে সাধারণের মধ্যে অনেক সময় বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। সাধারণ মানুষ মনে করে, সংকেত যত বেশি, বিপদ তত বড়। ফলে দ্রুততম সময়ে বিপদ সম্পর্কে সচেতন করার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়।
এই সংকেত ব্যবস্থা সংস্কারের জন্য গত আড়াই দশকে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা আলোর মুখ দেখেনি।
২০০৭ সালে ঘূর্ণিঝড় সিডরের পর অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী নেতৃত্বে গঠিত একটি কমিটি সংকেত ব্যবস্থার সংস্কারের বিষয়ে সুপারিশ জমা দিয়েছিল, তাও পরে আর বাস্তবায়ন হয়নি।