নভেল করোনাভাইরাসে বাংলাদেশেও একজনের মৃত্যুর প্রেক্ষাপটে মানুষের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে ভোট পেছানোর পক্ষে অবস্থান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী শাহাদাত হোসেন; যদিও ইসি এখনও এই নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষপাতি।
দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা এবং জনসমাগমের মতো যো কোনো কর্মসূচি নিরুৎসাহিত করছেন।
চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে প্রার্থীদের জনসমাগম ঘটানোর মতো কর্মসূচি না চালানোর পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে। এরমধ্যেই ভোট চাইতে যাচ্ছেন প্রার্থীরা।
দুপুরে নগরীর মোহরা এলাকায় গণসংযোগের সময় শাহাদাত সাংবাদিকদের বলেন, “যদি ভোটার না আসে, তাহলে সেই নির্বাচনের প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না।
“আশা করছি, আমরা নির্বাচন কমিশনকে যে দাবি দিয়েছি, প্রস্তাবনা দিয়েছি, তা মেনে নিয়ে নির্বাচন কমিশন পদক্ষেপ নেবে। জনগণকে নিয়ে আমাদের রাজনীতি। জনগণ যদি ভোট কেন্দ্রে আসতে না পারে তাহলে সেই বিষয়টি কমিশনকে ভেবে দেখতে হবে।”
পেশায় চিকিৎসক শাহাদাত বলেন, “সারাবিশ্বে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে। বাংলাদেশেও এ ভাইরাসের প্রভাব দেখা যাচ্ছে। জনগণের মধ্যে এটি নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ও আতংক দেখা দিয়েছে। তাই জনগণের স্বাস্থ্যের বিষয়টি মাথায় রেখে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত নেয়া উচিৎ।”
আগামী ২৯ মার্চ চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে ভোটগ্রহণের দিন ঠিক রয়েছে। সরকারি ছুটির মধ্যে পড়ায় ভোটার খরার আশঙ্কায় বিএনপির প্রার্থী ভোট পেছানোর দাবি আগেও জানিয়েছিলেন।
শাহাদাত বলেন, “২৬, ২৭ ও ২৮ মার্চ সরকারি ছুটি। পরেরদিন ২৯ তারিখ নির্বাচন। এ পরিস্থিতিতে কেন্দ্রে ভোটার আনা খুব টাফ হয়ে যাবে।
“আমাদের যে প্রস্তাবনাগুলো নির্বাচন কমিশনকে দিয়েছি এবং নির্বাচনমুখী যে কাজগুলো আমরা করছি, সেগুলো যদি নির্বাচন কমিশন মেনে নেয় এবং বিজ্ঞাপন আকারে বিভিন্ন মিডিয়ায় দেয় তাহলে জনগণ কিছুটা হলেও কেন্দ্রমুখী হবে।
“অন্যথায় ঢাকা সিটি করপোরেশনে ২০ ভাগ লোকের যে মেয়র হয়েছে, সেই ২০ ভাগ লোকের মেয়র আমরা হতে চাই না। আমরা ৮০ ভাগ লোকের মেয়র হতে চাই।”
নির্বাচনী প্রচারণায় গণজমায়েত হয়, এমন কিছু না করতে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন আহ্বান জানালেও শাহাদাতের নির্বাচনী প্রচারে বৃহস্পতিবারও কয়েকশ নেতাকর্মী জড়ো হন।
নির্বাচন পেছানোর বিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে নির্বাচনের প্রচারে জনসমাগম সীমিত করার পরামর্শ দিলেও ভোট পেছানোর বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্তহীন ইসি।
এই সিটি নির্বাচনের প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান বুধবার বলেন, “আমরা প্রার্থীদের বলেছি, জনসমাগম সীমিত করে তিন-চারজন লোক নিয়ে প্রচারণার জন্য অনুরোধ করেছি।”
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন পেছানোর সম্ভাবনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আপাতত এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেই।
“তবে নির্বাচন যে জায়গাতে আছে, সেখান থেকে ব্যাক করতে প্রার্থীদের মতামত লাগবে। প্রার্থীরা চাইলে নির্বাচন কমিশন ভেবে দেখবে।”