গত দুই বছরে অনুদান হিসেবে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি সংগ্রহ করেছে ৫৮ লাখ ৭০ হাজার ৯৬ টাকা। শিল্পীদের জন্য খরচ হয়েছে মাত্র ২ লাখ ৯১ হাজার ৩০০ টাকা। বাকী টাকা খরচ করা হয়নি। অথচ দুঃস্থ ও অসহায় শিল্পীদের সহায়তার জন্য এই টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে। কিন্তু সে টাকা খরচ না করে ফেলে রাখা হয়েছে সিমিতির ফান্ডে।
শিল্পীদের কল্যাণে সে টাকা কেনো খরচ করা হলো না। কিসের জন্য ফান্ডে ফেলে রাখা হলো? শিল্পীদের সহযোগিতার খরচ কি আরও বাড়ানো যেত না? এই টাকা তো শিল্পীদের সহযোগিতার জন্য দাতারা অনুদান দিয়েছেন। এত টাকা ফান্ডে ফেলে রাখার কারণ কী?’ এমন প্রশ্ন তুলেই উত্তর না পেয়ে সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভা থেকে বেরিয়ে যান বর্তমান কমিটির সহসভাপতি চিত্রনায়ক রিয়াজ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে সংগঠনটির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রতিবছর একবার বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলে গত বছর তা হয়নি। তাই আসন্ন নির্বাচনের আগে শুক্রবার সকালে রাজধানীর বিএফডিসির জহির রায়হান কালার ল্যাব মিলনায়তনে দুই বছরের সভা একসঙ্গে আয়োজন করা হয়। এ সভাতেই বিগত দুই বছরের আয়-ব্যয়সহ সমিতির নানা কার্যক্রম তুলে উত্থাপন করা হয়।
দ্বিভার্ষিক এই সভায় সমিতির বর্তমান সহ-সভাপতি রিয়াজ বার বার কথা বলার সুযোগ চান। কিন্তু তাকে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে পরে হইচই লেগে যায়। সে সময় সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর বলেন, ‘এটি সাধারণ শিল্পীদের সভা, এখানে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়া বর্তমান কমিটির আর কেউ কথা বলতে পারবেন না।’ মিশা সওদাগরের এমন কথার জের ধরেই বের আসেন রিয়াজ।
সভা থেকে বের হয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের মুখোমুখি হন তিনি। বলেন, ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির গঠনতন্ত্রের কোন ধারায় আছে, সভাপতি আর সাধারণ সম্পাদক ছাড়া বর্তমান কমিটির কেউ কথা বলতে পারবেন না? এমন কোনো ধারা নেই। তাঁদের কিসের ভয়? আমি তাদের কাণ্ডকীর্তি ফাঁস করে দিতাম? সাধারণ সভায় তাঁরা এমনভাবে কথা বলছিলেন যে বর্তমান কমিটির সব অর্জন শুধু তাঁদের দুজনের। বাকিদের কোনো ভূমিকা নেই। এসব নোংরামি। এই নোংরামির মধ্যে আমি থাকতে চাইনি। তাই সেখান থেকে বের হয়ে এসেছি।’
সভায় আপনি কী বলতে চেয়েছিলেন? প্রশ্ন রাখলে রিয়াজ বলেন, সমিতির তো প্রতি বছর একবার সাধারণ সভা হওয়ার নিয়ম রয়েছে। সেটাও হয়নি। দুই বছরের সভা এবার একসঙ্গে হচ্ছে। কিছু তো জানার বা বলার থাকতেই পারে।’
রিয়াজকে কেনো কথা বলতে দেয়া হলো না এমন প্রশ্নে জববে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর বলেন, ‘বার্ষিক সাধারণ সভার আগে ভোটার তালিকা প্রকাশ করা যায়। সাধারণ সভার কাজ হচ্ছে বছরজুড়ে সমিতির আয়-ব্যয়ের হিসাব ও নানা কার্যক্রম সাধারণ শিল্পীদের সামনে তুলে ধরা।’ তবে রিয়াজকে কথা বলতে না দেওয়ার জন্য যে কারণ দেখানো হয়েছে, সে ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের ধারা নেই, কিন্তু আগের কমিটিগুলোর ধারাবাহিকতায় তা করা হয়েছে। এখানে সাধারণ শিল্পীরা প্রশ্ন করবেন, চলতি কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সে প্রশ্নের উত্তর দিয়ে থাকেন।