চাপ যতই আসুক আমরা সংবিধানের বাইরে যাব না: কাদের

image-806159-1715959589

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কেউ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। তাই যত ষড়যন্ত্র হোক, বিদেশি শক্তির চাপ আসুক আমরা সংবিধানের বাইরে যাব না।

শুক্রবার বিকালে তেজগাঁওয়ের জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪৪তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

এর আগে এদিন নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে ঢাকাসহ সারা দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪৪তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উদযাপিত হয়। সকাল ৯টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ দলের সব সহযোগী এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনায় বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দোয়া, মিলাদ মাহফিল ও প্রার্থনা, গরিব-অসহায় এবং পথচারি-এতিমদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়।

আলোচনায় সভায় ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৮ অক্টোবর পালিয়ে গিয়েছিলেন। অথচ তিনি এখন বেসামাল হয়ে আওয়ামী লীগকে আক্রমণ করছেন। আমি তাকে বলতে চাই, আজ বন্দিদের মুক্তি নিয়ে কথা বলতে লজ্জা করে না? জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগের ৬২ হাজার নেতাকর্মীকে জেলে দিয়েছিল। আপনাদের (বিএনপি) কতজন নেতা জেলে আছে? আমাদের ৩ হাজার নেতাকর্মী ও সরকারি অফিসারদের গুম করেছিলেন জিয়াউর রহমান। তিনি নাস্তা খেতে খেতে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের ফাঁসি দিয়েছিল।

ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেব বলে আমাদের নাকি প্রতিবেশী দেশ নিয়ন্ত্রণ করে। ফখরুল সাহেব বিদেশি কোনো শক্তি নয়, আমাদের নিয়ন্ত্রণ করে দেশের জনগণ ও সংবিধান। আমাদের নিয়ন্ত্রণ করে মুক্তিযুদ্ধের রণধ্বণি ও জয় বাংলার চেতনা। শেখ হাসিনাকে কেউ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। তিনি ষড়যন্ত্র ও বিদেশি শক্তির পরোয়া করেন না। তিনি বাংলাদেশের জনগণকে পরোয়া করেন।

সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে অনেকে বলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নাকি স্বাধীনতাবিরোধীদের ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। এই কথা তথ্য নয়। ১১ হাজার স্বাধীনতাবিরোধী কারাগারে ছিল। কিন্তু জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে তাদের মুক্ত করে দেয়। যার মধ্যে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ছিল ৭১৩ জন। এই ইতিহাস ভুলে গেছেন? আমি কি মিথ্যা বলেছি? জিয়া কী করেছিল এর প্রমাণ আছে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর খুনি জিয়া দিনে কারফিউ দিতেন এবং রাতে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে নির্যাতন করতেন। এটাই ছিল জিয়াউর রহমানের চরিত্র।

আরেক সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা গ্রামে গ্রামে ঘুরে আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করেছেন। তার কঠোর পরিশ্রমেই আজকে আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ। তিনি এসেছিল বলেই আজ বাংলার মানুষ তাদের ভাত ও ভোটের অধিকার ফিরে পেয়েছে।

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, জীবনের ঝঁকি নিয়ে শেখ হাসিনা দেশে ফিরেছিলেন বলেই আজ কথা বলার অধিকার পেয়েছি। আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছে। গণতান্ত্রিক, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা পেয়েছি।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, কামরুল ইসলাম, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, ড. হাছান মাহমুদ, ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন প্রমুখ।

এ ছাড়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কবি নির্মলেন্দু গুণ ও দুজন শহিদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য।

Pin It