চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করা হয়নি

khaleda-court_Samakal-5cac6b4b76e94

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দুর্নীতির মামলার শুনানিতে আদালতে হাজির করা হয়নি। বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি-সংক্রান্ত এ দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠনের জন্য আগাম ২ মে শুনানির তারিখ ঠিক করেছেন আদালত।

মঙ্গলবার পুরান ঢাকার আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-২ এর বিচারক এ এস এম রুহুল ইমরান নতুন এই দিন ঠিক করেন।

আদালত সূত্র বলছে, খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করা সম্ভব হবে কিনা, তা জানানোর জন্য গত ৮ এপ্রিল কেরানীগঞ্জে অবস্থিত কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক ইকবাল কবির চৌধুরী বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেন। জবাবে বিএসএমএমইউ’র অতিরিক্ত পরিচালক চিকিৎসক নাজমুল করিম আজ (মঙ্গলবার) কারা কর্তৃপক্ষকে জানান, চিকিৎসা চলমান থাকার কারণে তাকে আদালতে পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না।

খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার জানান, খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির না করায় অভিযোগ গঠনের জন্য শুনানির নতুন দিন ঠিক করেছেন আদালত।

মামলার অপর আসামি বিএনপি নেতা সাবেক মন্ত্রী আমিনুল হক আদালতে হাজির হননি। তার আইনজীবী লিখিতভাবে আদালতকে জানান, আমিনুল হক ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বর্তমানে তিনি অচেতন। তবে এ মামলার আসামি বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সাবেক প্রতিমন্ত্রী কে এম মোশাররফ হোসেন, হোসাফ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন, আসামি সাবেক সচিব নজরুল ইসলাম ও পেট্রোবাংলার সাবেক পরিচালক মঈনুল আহসান আদালতে হাজির ছিলেন। মামলার আসামি বড় পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসামি সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী পলাতক আছেন।

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করার জন্য নির্দেশ দেন বিচারক। সেদিনই তাকে হাজির করার পরোয়ানা জারি করা হয়। দুর্নীতির পৃথক মামলায় দণ্ডিত খালেদা জিয়াকে গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কারাগারে রাখা হচ্ছে।

আদালত সূত্র বলছে, বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি-সংক্রান্ত দুর্নীতির মামলার আসামি বিএনপি নেতা আমিনুল হকের আবেদন গত ২৬ ফেব্রুয়ারি খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে মামলাটি ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেওয়া হয়।

এ মামলার ১৬ আসামির মধ্যে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ ও মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান ও বিএনপির সাবেক মহাসচিব আবদুল মান্নান, বিএনপি নেতা এম কে আনোয়ার ও এম শামসুল ইসলাম মারা যাওয়ায় মামলা তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

২০১৫ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি-সংক্রান্ত দুর্নীতির মামলা বাতিল চেয়ে খালেদা জিয়ার করা আবেদন খারিজ করেন হাইকোর্ট। ২০১৬ সালের ২৫ মে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিতে দুর্নীতির অভিযোগে করা মামলায় হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়।

বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিতে উৎপাদন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ঠিকাদার নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় দুদক মামলাটি করে। তদন্ত শেষে ২০০৮ সালের ৫ অক্টোবর দুদকের উপ-পরিচালক আবুল কাসেম ফকির এই মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেন।

Pin It