চীন ‘জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদকে সমর্থন করে

image-139671-1717049494

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বৃহস্পতিবার বেইজিংয়ে একটি ফোরামে আরব নেতা ও কূটনীতিকদের সাথে বক্তৃতা করার সময় শি বলেন, চীন ‘জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদকে সমর্থন করে এবং আরও বিস্তৃত, কর্তৃত্বপূর্ণ এবং কার্যকর আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলন সমর্থন করে।’ ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধের বিষয়ে একটি শান্তি সম্মেলনের আহ্বান জানিয়েছেন।

চীন এই সপ্তাহে মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি এবং অন্যান্য আরব নেতাদের একটি ফোরাম বৈঠকের আয়োজন করতে যাচ্ছে। যেখানে গাজার যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার সকালে প্রতিনিধিদের শি বলেন, চীন সংঘাত সমাধানের জন্য একটি ‘ব্যাপক ভিত্তিক’ শান্তি সম্মেলনকে সমর্থন করে।

শি বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্য উন্নয়নের জন্য বিপুল সম্ভাবনায় অঞ্চল। তবে সেখানে এখনও যুদ্ধ চলছে।’

তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ অনির্দিষ্টকাল চলবে না। ন্যায়বিচার চিরতরে অনুপস্থিত থাকা উচিত নয়।’

ইসরায়েলের সঙ্গে কয়েক দশক ধরে সুসম্পর্ক বজায় রাখা চীন ইসরায়েল-ফিলিস্তিন বিরোধ অবসানে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে কথা বলে আসছে।

বুধবার মিশরের সিসির সাথে সাক্ষাত করে শি বলেছেন, তিনি গাজার ‘অত্যন্ত গুরুতর’ পরিস্থিতির জন্য ‘গভীরভাবে ব্যথিত’।

যেখানে হামাস পরিচালিত অঞ্চলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ইসরায়েলের হামলায় ৩৬,১৭১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। যাদের বেশিরভাগ নারী ও শিশু।

শি বলেন, ‘এখন শীর্ষ অগ্রাধিকারের কাজ হল অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি। যাতে সংঘাতের বিস্তার এড়াতে, আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার ওপর প্রভাব না পড়ে এবং আরও গুরুতর মানবিক সংকট রোধ করা যায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘ফিলিস্তিন সমস্যার একটি প্রাথমিক, ব্যাপক, ন্যায্য এবং দীর্ঘস্থায়ী নিষ্পত্তির জন্য’ চাপ দিতে গাজা এবং ইসরায়েলের প্রতিবেশী মিশরের সাথে কাজ করতে চীন প্রস্তুত রয়েছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন আরব রাষ্ট্রগুলোর সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। গত বছর এটি সৌদি আরব এবং তার দীর্ঘদিনের শত্রু ইরানের মধ্যে বিরোধের অবসানে মধ্যস্থতা করেছে।

চীন গত মাসে প্রতিদ্ব›দ্ধী ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস এবং ফাতাহকে ‘আন্তঃফিলিস্তিনি পুনর্মিলন বিষয়ে গভীর ও অকপট আলোচনার’ আয়োজন করেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, চীন এই অঞ্চলে তার অবস্থানকে বাড়ানোর জন্য গাজায় যুদ্ধের সুবিধা নিতে চাইছে। কথিত মার্কিন নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে এই সংঘাতের অবসান ঘটাতে তার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

ইউরোপীয় কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্সের পলিসি ফেলো ক্যামিল লোন্স এএফপি’কে বলেছেন, ‘বেইজিং চলমান সংঘাতকে আন্তর্জাতিক দৃশ্যপটে পশ্চিমাদের দ্বৈত নীতির সমালোচনা করার এবং একটি বিকল্প বৈশ্বিক ব্যবস্থার আহ্বান জানানোর একটি সুবর্ণ সুযোগ হিসাবে দেখছে।’

বৃহস্পতিবার শি আরব বিশ্বের সাথে তার ‘গভীর সখ্যতার’ প্রশংসা করেছেন।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান এই সপ্তাহের ফোরামে যোগদানকারী আঞ্চলিক নেতা এবং কূটনীতিকদের মধ্যে ছিলেন।

শি বলেছেন, চীন এই অঞ্চলের সাথে জ্বালানি বিষয়ে সহযোগিতা আরও গভীর করতে চায়।

তিনি বলেন, ‘চীন তেল ও গ্যাসের ক্ষেত্রে আরব পক্ষের সাথে কৌশলগত সহযোগিতা আরও বাড়াবে এবং বাজার নিরাপত্তার সাথে সরবরাহ নিরাপত্তাকে একীভূত করবে।’

Pin It