ছক কষছে টাইগাররা

Mashrafi-samakal-5d035332463b5

বিশ্বকাপের অঙ্ক পরীক্ষায় যে কুড়ি মার্কস জ্যামিতিও থাকবে, জানা ছিল তা। দেশ ছাড়ার আগে এ নিয়ে রিভাইসও দিয়ে এসেছে টাইগাররা। তবে ইংল্যান্ডে আসার পর এখন পর্যন্ত জ্যামিতিতে খুব ভালো করতে পারছেন না মাশরাফিরা। ছোট মাঠের বাউন্ডারির আকার মেপেজুকেও জ্যামিতিতে খুব কাঁচা তারা! মাঠের কোন দিকটাতে বাউন্ডারির আকার ছোট, কোন দিকটাতে বড়- সেটা আগের দিন পড়ে গিয়েও পরীক্ষায় মেলাতে পারছেন না।

কার্ডিফ থেকে ব্রিস্টল হয়ে টনটন-একের পর এক ছোট মাঠে খেলতে হচ্ছে তাদের। এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে ছোট্ট টনটনের এই সামার ক্রিকেট গ্রাউন্ডেই নামতে হচ্ছে বিরাট এক চ্যালেঞ্জ নিয়ে। ক্যারিবীয় হার্ডহিটারদের একেকটি মিস হিটও এখানে বিশাল ছক্কা হয়ে যেতে পারে। তাই ছোট মাঠের জ্যামিতি এঁকে কীভাবে তাদের লাগাম টানা যায় সেই হিসাব কষতে বসেছেন কোচিং স্টাফরা। আর এই কাজের গুরুদায়িত্ব পড়েছে দলের কম্পিউটার অ্যানালিস্ট শ্রীর ওপর।

গতকাল তিনি অধিনায়কের কাছে যে রিপোর্ট পেশ করেছেন তাতে দেখা যাচ্ছে, এই মাঠের লং অন ও লং অফে বাউন্ডারির সর্বনিম্ন আকার ৬৫ মিটার, সর্বোচ্চ ৬৮। যেখানে ক্রিকেটের নিয়মে কোনো কোনো মাঠে এই বাউন্ডারির দূরত্ব ৭৬ মিটারও হয়ে থাকে। কার্ডিফের মাঠটিতেও লং অফ আর লং অনের দূরত্ব কম ছিল। কিন্তু সেখানে স্কয়ারের দিকটাতে দূরত্ব ছিল বেশ। কিন্তু টনটনে সেই স্কয়ারের দিকটাতেও সর্বোচ্চ দূরত্ব ৬৫ মিটার, সর্বনিম্ন ৬৪। ক্যারিবীয়রা এই মিনি বাউন্ডারির সুযোগ অবশ্যই কাজে লাগানোর চেষ্টা করবে।

এজন্য চ্যালেঞ্জটা বেশি নিতে হবে টাইগার স্পিনারদেরই। অন্তত সাকিবের ধারণা তেমনই, ‘আমরা আসলে ছোট মাঠের সুবিধা নিতে পারি না। স্পিনাররা রক্ষণাত্মক থাকে, তারা ভয়ে ভয়ে বোলিং করে যদি টোকা মারলেই বাউন্ডারি হয়ে যায় এই ভেবে।’ সাকিবের মতো মাশরাফিও জ্যামিতিতে বেশ কাঁচা। ‘আমি খেয়াল করে দেখেছি, তুলনামূলকভাবে আমরা বড় মাঠগুলোতেই ভালো খেলে থাকি। ছোট মাঠে ফিল্ডিং সাজাতেও আমাদের কিছুটা সমস্যা হয়। কেননা এ ধরনের মাঠে খুব বেশি খেলা হয় না আমাদের।’

আসলে আইসিসি বেছে বেছেই বোধহয় বাংলাদেশের খেলাগুলো ছোট মাঠগুলোতে রেখেছে। তাদের যুক্তি, ভারত, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মতো দলগুলোতে দর্শক সংখ্যা বেশি হয়। তাতে তাদের টিকিটমানিও বেশি আসে। সেই তুলনায় বাংলাদেশের ম্যাচে দর্শক সংখ্যা কম থাকে। যে কারণে ছোট গ্যালারিসহ মাঠগুলোতেই টাইগারদের খেলা বেশি রাখা হয়। ইংলিশ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে এমনই ধারণা মিলেছে।

তবে এবারে টনটনের জ্যামিতি যে বাংলাদেশ দল ভালোই কষছে, সেটা জানিয়ে দিলেন সুনীল যোশি, ‘আমরা জানি, এই মাঠের বাউন্ডারির আকার সবচেয়ে ছোট। এখানে স্পিনারদের জন্য বাড়তি চ্যালেঞ্জও থাকে। আমি এটুকু বলতে পারি যে, এই চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত ছেলেরা। তবে কী কৌশল নেওয়া হয়েছে, সেটা মিডিয়ায় বলব না।’

তবে মাঠের আকার আর ক্যারিবীয় হার্ডহিটারদের নিয়ে অত চিন্তা করার কিছু নেই। ‘ওরা যতই বড় ছক্কা মারুক, সেটা তো আর বারো হবে না। বরং আমাদের কোনো মিস হিটও এখানে ছক্কা হয়ে যেতে পারে…’ ঢাকা থেকে যাওয়া এক সাংবাদিকের এই জোকসে জমে যায় মাশরাফির সঙ্গে বৃষ্টি-আড্ডা! সত্যিই তো তাই, ছক্কা তা সে যতই বড় হোক সেটা তো ছক্কাই হবে, তার বেশি কিছু তো নয়।

Pin It