জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কাউন্সিল-২০১৯ উপলক্ষে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকালে ছাত্রদলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন এ তালিকা প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে ছাত্রদলের ওয়েবসাইটে খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয় এবং কার্যালয়ে তা টানিয়ে দেওয়া হয়। তালিকার সঙ্গে প্রার্থীদের আচরণ বিধি এবং যোগ্যতাও প্রকাশ করা হয়।
নির্বাচনের আচরণ বিধিতে বলা হয়েছে— প্রত্যেক প্রার্থীকে ব্যক্তিগতভাবে নির্বাচন করতে হবে। কোনোভাবেই প্যানেল দেওয়া যাবে না। কোনো প্রকার পোস্টার, ব্যানার এবং গণমাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণা করা যাবে না। কোনো প্রকার সভা, সমাবেশ আপ্যায়ন বা কোনো ধরনের উপহার সামগ্রী দেওয়া যাবে না। গণমাধ্যমে সাক্ষাত্কার, সংবাদ সম্মেলন ও টকশোতে কোনো প্রার্থী অংশগ্রহণ করতে পারবে না। প্রার্থীগণ ভোট প্রার্থনার জন্য শুধুমাত্র ভিজিটিং কার্ড বা সাদাকালো এ-ফোর সাইজের লিফলেট ব্যবহার করতে পারবেন। নির্বাচনের দিন প্রার্থীগণ অথবা তার কোনো সমর্থক কোনো প্রকার মিছিল, সমাবেশ, প্ল্যাকার্ড, ভিজিটিং কার্ড এবং লিফলেট বিতরণ করে ভোট প্রার্থনা করতে পারবেন না। কোনো প্রার্থী যদি উল্লিখিত আচরণ বিধি লঙ্ঘন করেন, তাহলে নির্বাচন কমিশন প্রার্থিতা বাতিলসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন।
প্রার্থীর যোগ্যতার ক্ষেত্রে বলা হয়েছে— প্রার্থীকে ২০০০ সাল অথবা তার পরে এসএসসি অথবা সমমানের পরীক্ষায় পাস হতে হবে। তবে রেজিস্ট্রেশন অবশ্যই ১৯৯৮ সালের হতে হবে। সে ক্ষেত্রে প্রমাণের জন্য এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা পাসের সার্টিফিকেট ও রেজিস্ট্রেশন কপি জমা দিতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রত্ব আছে এমন প্রমাণপত্র অবশ্যই দাখিল করতে হবে। প্রার্থীকে ন্যূনতম স্নাতক পাস হতে হবে এবং পাসের সার্টিফিকেটের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে। প্রমাণের জন্য সকল সার্টিফিকেটের মূলকপি সঙ্গে আনতে হবে। প্রার্থীকে অবশ্যই অবিবাহিত হতে হবে। প্রার্থী হতে হলে সংশ্লিষ্ট ইউনিট থেকে প্রাথমিক সদস্য সাবেক অথবা বর্তমান পদের প্রত্যয়নপত্র দাখিল করতে হবে। যদি কোনো প্রার্থী কাস্টিং ভোটের ১০ শতাংশ ভোট না পায় তাহলে পরবর্তী কমিটিতে কোনোভাবেই অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে না। প্রত্যেক প্রার্থীকে অবশ্যই সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ৫ কপি রঙিন ছবি সত্যায়িতসহ দাখিল করতে হবে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হবেন।
ছাত্রদলের ফের তাণ্ডব
এদিকে কার্যালয়ে প্রবেশ করতে গিয়ে তোপের মুখে পড়েন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন। মিলনকে উদ্দেশ করে বিক্ষুব্ধরা বলেন, সিন্ডিকেটের জন্য আজ কমিটির এই অবস্থা। এসব অবৈধ সিন্ডিকেট আমরা মানি না। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা যাব না। এখানে আপনি থাকলে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তার দায় আমরা নেব না। পরে মিলন অফিসে না ঢুকে চলে যান। এছাড়া ছাত্রদলের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ইউনিটের এক নেতা কার্যালয়ে ঢুকতে চাইলে তাকে মারধর করা হয়।
বিক্ষুব্ধ ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা দুই ঘণ্টা বিক্ষোভের পর বিএনপি কার্যালয়ের পাশে পরপর পাঁচটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান। এসময় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আরো একটি ককটেল অবিস্ফোরিত অবস্থায় দেখা যায়। এতো কিছু ঘটলেও সেখানে বা আশপাশে পুলিশকে দেখা যায়নি।
এদিকে বিক্ষোভ চলাকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভেতরে অবস্থান করছিলেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, ছাত্রদলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের জুয়েল।