ছাত্রদলের ১২ নেতা বহিষ্কার

JCD-Protest

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ১২ জন সাবেক ছাত্রনেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। শনিবার রাতে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ বহিষ্কারাদেশ দেন।

দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করার আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও জানানো হয়। বহিষ্কৃতরা হলেন, ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির সহ সভাপতি এজমল হোসেন পাইলট, ইখতিয়ার রহমান কবির, জয়দেব জয়, মামুন বিল্লাহ, যুগ্ম সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, বায়েজীদ আরেফিন, সহ সাংগঠনিক দবির উদ্দিন তুষার, গোলাম আজম সৈকত, আবদুল মালেক, সদস্য আজিম পাটোয়ারী ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক বাসার সিদ্দিকী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি জহির উদ্দিন তুহিন।

বয়সের সীমা না রেখে ধারাবাহিক কমিটির দাবিতে আন্দোলন করে আসছে ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির নেতারা। শনিবার তাদের দাবি মেনে নেওয়ার দাবিতে সংবাদ সম্মেলনও করেন তারা। এর আগে দলের নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নীচে সংগঠনের বিক্ষুব্ধ কিছু নেতাদের হাতে লাঞ্ছিত হন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তবে সিনিয়র ছাত্র নেতাদের হস্তক্ষেপে রিজভীকে নিরাপদে কার্যালয়ের ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ দলের হাইকমান্ড আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া নেতাদের বহিষ্কার করেন।

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বহিষ্কৃত সাবেক সহ-সভাপতি ইখতিয়ার কবির বলেন, তারা যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলন করছেন। শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূূচি পালন করেছেন। যারা খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনসহ বিগত আন্দোলনে সামনে থেকে ছাত্রদলের নেতৃত্ব দিয়েছে তাদেরকে এমন প্রতিদান দেওয়া হবে কখনও ভাবিনি। এতে করে তৃনমূলে ভুল বার্তা যাবে। আগামীতে আন্দোলনে কাউকে খুঁজে পাবে না। ছাত্রদলকে দুর্বল করতে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। যড়যন্ত্রকারীর দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ভুল বার্তা দিচ্ছেন। তাদের বিশ্বাস ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ভবিষ্যতে বুঝবেন ছাত্রদল ধ্বংসের ষড়যন্ত্রকারী কারা।

দাবি না মানলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা

 বয়সের সীমা না রেখে ধারাবাহিক কমিটি গঠনের দাবি না মানলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির নেতারা।

শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নেতারা এ ঘোষণা দেন।

সংগঠনের সাবেক সহসভাপতি ইখতিয়ার রহমান কবির বলেন, নুতন নেতৃত্ব নির্বাচন ২০০০ সাল এসএসসি পাশ ছাত্র নেতাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ করায় ছাত্রদল হতাশ ও ক্ষুব্ধ। ঈদের দুইদিন আগে ছাত্রদলের কমিটি ভেঙে যে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে তার সঙ্গে তারেক রহমান মোটেই সম্পৃক্ত নন। তিনি জানান, দাবি আদায় না হাওয়া পর্যন্ত তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলবে।

২০০০ সালের ‘বয়সসীমা’ সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত’ অভিযোগ করে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, এর ফলে ছাত্রদলের সাবেক কমিটির সকল সহ সভাপতি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, সহ-সাধারণ সম্পাদক, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদস্যরা বাদ পড়েছেন। ঢাকার সুপার ইউনিটের ২৪ জন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে ২১ জনও বাদ পড়েছেন। এই সমস্যা সমাধানে আরোপিত ২০০০ সালের বসয়সীমা তুলে দিয়ে ৬ মাসের একটি স্বল্পকালীন কমিটি গঠন করতে হবে।

সিন্ডিকেটে কারা আছে প্রশ্ন করা হলে সাবেক কমিটির সহ সভাপতি এজমল হোসেন পাইলট বলেন, রাজনীতিতে অনেক কথা বলা যায় না। এটা আপনাদের বুঝে নিতে হবে।

সাবেক কমিটির সহসভাপতি জহির উদ্দিন তুহিন বলেন, সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের কারণে বাদ পড়েছে সর্বোচ্চ ৩৮ বছরের নেতারা। এটাকে এখন ৪৭/৪৮ বছরের ‘বুড়ো’ নেতাদের আন্দোলন বলে চালানো হচ্ছে– এটা ঠিক না।

তিনি বলেন, ‘এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে সরকারের একটা এজেন্ট জড়িত। তারা ছাত্রদলকে ধ্বংস করতে চায়। কিন্তু শেষ জায়গা হচ্ছে তারেক রহমান। তার উদ্যোগ নেওয়া ছাড়া অন্য কোনো পথ দেখছি না।’

সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের ভেঙে দেওয়া কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, বায়জিদ আরেফিন, ওমর ফারুক মুন্না প্রমুখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

Pin It