ছাত্রাবাসে ধর্ষণের ঘটনা তদন্তে কমিটি, ২ জনকে বরখাস্ত

mc-college-samakal-5f6f169719adf

সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রবাসে স্বামী‌কে আটকে স্ত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

শনিবার কলেজের অধ্যক্ষ সালেহ উদ্দিন এ তথ্য জানান। একইসঙ্গে দায়িত্ব অবহেলার কারণে ছাত্রাবাসের দুই নিরাপত্তাকর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

অধ্যক্ষ জানান, কলেজের গণিত বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জীবন কৃষ্ণ আচার্য্য ও একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জামাল উদ্দিনের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এদের মধ্যে শেষের দু’জন হোস্টেেল সুপারের দায়িত্বে রয়েছেন।

অধ্যক্ষ আরও জানান, সার্বিক বিষয় তদন্তের জন্য এদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সাত কার্য দিবসের মধ্যে এই কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

এদিকে ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ধর্ষণের শিকার নারীর স্বামী বাদি হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৩ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা করেছেন।

শুক্রবার রাতে মহানগর পুলিশের শাহপরাণ থানায় এই মামলা হয়। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাইয়ুম মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, মামলায় সরাসরি জড়িত ছয় জন ও সহযোগী হিসেবে আরও তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।এই ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন- এমসি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা এম সাইফুর রহমান, ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি, তারেক আহমদ, অর্জুন লস্কর, রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান মাছুম। অভিযুক্ত তারেক ও রবিউল বহিরাগত হলেও বাকি চারজন এমসি কলেজের শিক্ষার্থী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমসি কলেজ ছাত্রলীগের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, এদের সবাই নগরীর টিলাগড় কেন্দ্রিক ছাত্রলীগের একটি গ্রুপের সক্রিয় কর্মী। সিলেট সদর উপজেলার বাসিন্দা যুবলীগ পরিচয়ধারী এক নেতা তাদের মদদ দেন। এই নেতার মদদে তারা করোনাকালীন সময়ে এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে রাতে মদ ও জুয়ার আসর বসিয়ে আসছিল।

আসামিদের মধ্যে সাইফুর রহমানের বাড়ি বালাগঞ্জে, রনির বাড়ি হবিগঞ্জে, তারেকের বাড়ি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে, অর্জুনের বাড়ি জকিগঞ্জে, রবিউলের বাড়ি সুনামগঞ্জের দিরাই ও মাছুমের বাড়ি সিলেট সদর উপজেলায়।

এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যায় নববিবাহিতা স্ত্রীকে নিয়ে গাড়িতে করে এমসি কলেজে বেড়াতে গিয়েছিলেন দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার এক বাসিন্দা। সেখানে যাওয়ার পর অভিযুক্তরা তাদের জোর করে কলেজ ছাত্রাবাসে নিয়ে আসে। এ সময় স্বামীকে আটকে স্ত্রীকে ধর্ষণ করা হয়। খবর পেয়ে শুক্রবার রাত ১১ টার দিকে শাহপরাণ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে স্বামী-স্ত্রীকে উদ্ধার করে। ধর্ষণের শিকার নারীকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। মারধরের শিকার স্বামীও চিকিৎসা নিয়েছেন।

Pin It