আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকিটের জন্য রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ভিড় করেছেন টিকিট প্রত্যাশীরা। কাঙ্খিত টিকিট পেতে ৪৮ ঘণ্টা আগে থেকেই রেলস্টেশনে লাইনে দাঁড়িয়েছেন অনেকে।
পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও অগ্রিম টিকিটের জন্য স্টেশনে এসেছেন।
ঈদের আগে সড়কপথে অনেক বেশি যানজট থাকবে এমন আশঙ্কায় তারা ট্রেনের টিকিট পেতে আগ্রহী।
শনিবার (২ জুলাই) দেওয়া হয়েছে ৬ জুলাইয়ের টিকিট, ৩ জুলাই দেওয়া হবে ৭ জুলাইয়ের টিকিট, ৪ জুলাই দেওয়া হবে ৮ জুলাইয়ের টিকিট এবং ৫ জুলাই দেওয়া হবে ৯ জুলাইয়ের ট্রেনের টিকিট।
এদিকে দুপুরে রেলযাত্রীদের সুবিধার্থে রাজধানীর কমলাপুর রেল স্টেশনে ৫০টি ট্রলি দেয় ইসলামী ব্যাংক।
ট্রলি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, কাউন্টারে প্রচণ্ড ভিড়। গণমাধ্যমে দেখলাম, অনেকে অভিযোগ করছেন টিকিট পাচ্ছেন না, এটা স্বাভাবিক। ছয় হাজার টিকিটের বিপরীতে দুই লাখ মানুষ লাইনে দাঁড়িয়েছে। অনলাইনে টিকিটের জন্য প্রায় ছয় কোটি হিট করেছেন। চাহিদার তুলনায় কম সংখ্যক পরিবহন। কাজেই বিষয়গুলোকে আমাদের মেনে নিতে হবে। তবে এই পরিস্থিতি যেন ধীরে ধীরে আমরা উন্নত করতে পারি, সেই চেষ্টা করছি। এছাড়া গত ঈদে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট পেয়েছেন এমন মানুষ পাওয়া না গেলেও এবার এমন এক-দুজন পাওয়া গেছে।
অনলাইনে অগ্রিম টিকিট না পাওয়ার অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম বলেন, গতকালও আমরা টেলিভিশনে দেখলাম যে একজন বলছেন, অনলাইনে টিকিট পেয়েছি, তাই রেল স্টেশনে এসে তাকে কষ্ট করতে হয়নি। গতবার কিন্তু এটা দেখা যায়নি। এবার কিন্তু এক-দুজন পাওয়া গেছে। রেসপন্স করছে। সকালে অনলাইনে টিকিট কাটার জন্য ১০ থেকে ১৫ লাখ হিট পড়ে। তাই সবাই অ্যাপ কিংবা ওয়েবসাইটে ডুকতে পারে না। আবার টিকিট কম থাকায় সবাই টিকিটও পায় না। তবে গতকাল এ অভিযোগ ছিল বেশি। এবার অভিযোগ কিছুটা কমেছে। অনেকেই টিকিট পাচ্ছেন বলেও জানাচ্ছেন।
অনলাইনে টিকিট কাটা যাচ্ছে না যাত্রীদের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম বলেন, গত ঈদুল ফিতরের সময় সহজকে আমরা অনলাইন টিকিট ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দিয়েছিলাম। তখন চরম অ্যবস্থাপনা ছিল। তা কিছুটা কমেছে। জিনিসগুলো হচ্ছে, কোথা থেকে হচ্ছে, কীভাবে হচ্ছে- এই জায়গাগুলোকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অভিজ্ঞতা দরকার। এছাড়া নিয়ন্ত্রণ করা খুবই কঠিন। আমরা ত্রুটিগুলো ধরার চেষ্টা করবো এবং আগামীতে যেন না হয়, সেই ব্যবস্থা করবো।
এসি ও কোচ বাড়ানো হচ্ছে না কেন এমন প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী বলেন, শুধু কোচ বাড়ালে চলবে না, আগে অবকাঠামো বাড়াতে হবে। তবে আমরা অনেক কোচ ও বগি বাড়িয়েছি। আরও বগি কেনা হচ্ছে। আমাদের ডুয়েলগেজ ৬০টি কোচ এসেছে, আরও ১০০টি পাইপলাইনে আছে। আমাদের ডাবল লাইন এবং পদ্মা সেতুতে রেল চালু হয়ে গেলে সক্ষমতা আরও বেড়ে যাবে। তখন নিরাপদে সব যাত্রী ট্রেনের মাধ্যমে নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক নীরেন্দ্র নাথ মজুমদার, ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মিজানুর রহমান ভূঁইয়াসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা।