জনগণকে দুর্ভোগে ফেলবেন না: ওবায়দুল কাদের

100-5dd52de156eaf

ধর্মঘটের নামে জনগণকে দুর্ভোগে না ফেলতে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

বুধবার দুপুরে নোয়াখালী শহীদ ভুলু ষ্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

মন্ত্রী বলেন, সড়ক পরিবহন আইন করা হয়েছে রাস্তায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য, কাউকে শাস্তি দেওয়ার জন্য নয়। পেঁয়াজ, লবণের ইস্যু না পেয়ে, এবার সর্বশেষ সড়ক পরিবহন আইন নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে বিএনপি। পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের প্রতি আহ্বান জানাবো, জনগণকে শাস্তি দেবেন না, দুর্ভোগে ফেলবেন না।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি মানুষের দুর্ভোগ ও গুজব নিয়ে রাজনীতি করে। একই সঙ্গে তারা সড়ক পরিবহন আইন নিয়ে ও ষড়যন্ত্র করছে। বিএনপি একটা গুজব ও নালিশের দল।

মন্ত্রী আরো বলেন, রাজনীতিতে ঝলক দেখিয়ে সফল হওয়া যায় না। রাজনীতিতে মডারেট ব্যক্তিরাই সফল হবে। শেখ হাসিনার সততা, পরিশ্রম ও কমিটমেন্ট তার সাফল্যের চাবিকাঠি। বিশ্বের ১০ জন প্রভাবশালী রাষ্ট্রনায়কদের মধ্যে তিনি একজন। গত ৪৪ বছরে এ দেশে সবচেয়ে সাহসী, বিচক্ষণ, প্রশাসক, সৎ, সফল কূটনৈতিক ও সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা শেখ হাসিনা। ত্যাগ এবং পরিশ্রম করলে রাজনীতিতে স্বীকৃতি পাওয়া যায়। জোর করে স্লোগান দিয়ে নেতৃত্ব পাওয়া যায় না এবং জনগণের  কাছে সে নেতৃত্বের কোন আবেদন থাকে না।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা সমুদ্র জয় করেছি, সীমান্ত জয় করেছি। বাংলাদেশ এশিয়ার মধ্যে প্রবৃদ্ধিতে সবার শীর্ষে রয়েছে। আমরা গরীব দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছি। এগুলো সম্ভব হয়েছে দক্ষ রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার কারণেই।

ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী নোয়াখালী নিয়ে স্বপ্ন দেখেন। নোয়াখালী মরুভূমিকে মরুদ্যানে পরিণত করেছেন। নোয়াখালীতে আজ সোনাপুর-চট্টগ্রামের জোড়ালগঞ্জ, সোনাপুর-কুমিল্লা টমছম ব্রিজ সড়ক চারলেনের কাজ চলমান রয়েছে। দেশে ৯৪ শতাংশ বাড়িঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে। ক্ষুধা দারিদ্র ও দুর্ভিক্ষের বাংলাদেশ কে আজ শেখ হাসিনা মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করেছেন।

বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, নেতিবাচক রাজনীতির কারণে, তারা সব ঘাঁটি হারাচ্ছেন। নির্বাচনে এবং আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে এখন ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন। সব ষড়যন্ত্র শুরু হয় লন্ডনের টেমস নদীর পাড় থেকে। সেখানে বসে তারেক জিয়া দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। দেশের জনগণের সাড়া না পেয়ে, বিদেশিদের কাছে নালিশ করছে। বিএনপি বিদেশে ঘুরে ঘুরে আনুগত্য ভিক্ষা করছে। নির্বাচনের আগে ভারতের কাছে গিয়ে আনুগত্য ভিক্ষা করেছে। আওয়ামীলীগ আনুগত্য চায় না চাই বন্ধুত্ব। আমাদের শক্তির উৎস জনগণ। উসকানি দিয়ে লাভ হবে না।

মির্জা ফখরুল ইসলামকে উদ্দেশ্য করে মন্ত্রী বলেন, বাংলার জনগণ তারেক জিয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন না, তারেক জিয়ার জন্য অপেক্ষা করছে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগার।

এর আগে মন্ত্রী জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে এবং বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।

জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অধ্যক্ষ এ.এইচ.এম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিমের সভাপতিত্বে ও অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীন এবং আবদুল ওয়াদুদ পিন্টুর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন- কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, অসীম কুমার উকিল এমপি, মির্জা আজম এমপি, নোয়াখালী-৬ আসনের সংসদ সদস্য আয়েশা ফেরদৌস, নোয়াখালী-১ আসনের সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহিম, নোয়াখালী-২ আসনের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলম, নোয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য মামুনুর রশীদ কিরণ। সম্মেলনে  প্রধান বক্তা ছিলেন- নোয়াখালী-৪ (সদর ও সুবর্ণচর) আসনের সংসদ সদস্য ও সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরী।

এ সময় সংসদ সদস্য হাজী সেলিম, একেএম শাহজাহান কামাল, নিজাম উদ্দিন হাজারী, ছোট মনি, সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী, প্রধান মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম, নোয়াখালী কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর সভাপতি আতাউর রহমান ভুঁইয়া মানিক, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ.কে.এম সামছুদ্দিন জেহান, বেগমগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক বাদশা, চৌমুহনী পৌরসভার মেয়র আক্তার হোসেন ফয়সলসহ জেলা উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সম্মেলন শেষে ওবায়দুল কাদের আগামী তিন বছরের জন্য পুনরায় নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এ.এইচ.এম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিমকে সভাপতি এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন।

Pin It