“জম্মু-কাশ্মীরে নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে। নাগরিকরা এখন সমান অধিকার পাবে। নতুন সূচনা হচ্ছে লাদাখের অধিকার বঞ্চিত মানুষদের জন্যও। কাশ্মীর নিয়ে ভারত সরকারের বড় ধরনের সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণে নতুন এ ভোরেরই স্তুতি গেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
গত সোমবারই ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা রদ করে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা তুলে নিয়েছে ভারত সরকার। পরিকল্পনা করেছে রাজ্যটিকে ভাগ করে জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখ- দু’টো কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার।
ভারতের পত্রিকা আনন্দবাজার জানায়, বিষয়টি নিয়ে বুধবার সংসদ অধিবেশনের শেষ দিন প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ দেওয়ার কথা থাকলেও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের মৃত্যুতে তা আর হয়ে ওঠেনি।
সুষমার শেষকৃত্যর পর মোদী বৃহস্পতিবার বিকাল চারটায় ভাষণ দেবেন বলে জল্পনা চলছিল। পরে সংবাদ সংস্থা এএনআই জানায়, রাত ৮টায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সে মতোই টিভি এবং বেতারে জাতির উদ্দেশে এ ভাষণ দিলেন নরেন্দ্র মোদী।
তার ভাষণের বিশেষ অংশগুলো তুলে ধরেছে এনডিটিভি:
ভাষণে মোদী বলেন,
*জম্মু-কাশ্মীরের জনগণ এবং লাদাখের জনগণ অধিকার বঞ্চিত ছিল।
*সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল, বিআর আম্বেদকর, শ্যামা প্রসাদ মুখার্জী, অটল বিহারী বাজপেয়ীসহ কোটি কোটি ভারতীয় যে স্বপ্ন দেখেছে তা আজ পূরণ হয়েছে।
*জম্মু-কাশ্মীরে শুরু হয়েছে নতুন অধ্যায়। নাগরিকরা এখন সমান অধিকার এবং দায়িত্ব পাবে। আমি ওই অঞ্চলের জনগণ ও নাগরিকদের অভিনন্দন জানাই।
* ৩৭০ ধারার কারণে জম্মু-কাশ্মীরের জনগণ এবং শিশুদের ক্ষতি হচ্ছিল। বিষয়টি নিয়ে কখনো আলোচনা হয়নি।
* লোকজন এমনকী ৩৭০ ধারার সুবিধাগুলো সম্পর্কেও জানত না।
*৩৭০ ধারা এবং ৩৫এ অনুচ্ছেদ জম্মু-কাশ্মীরকে সন্ত্রাস, বংশ পরম্পরায় রাজনীতি এবং দুর্নীতির দিকে ঠেলে দিয়েছে।
*৩৭০ ধারার জন্য গত ৩ দশকে ৪২ হাজার নির্দোষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
আরো যা বলেছেন মোদী
> পরিবার হিসেবে গোটা দেশ ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
> নতুন ভারতের সঙ্গে নতুন জম্মু-কাশ্মীর এবং নতুন লাদাখ নির্মাণ করব।
> ‘জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখের বাসিন্দাদের যে স্বপ্ন ছিল তা পূরণ হয়েছে। কোনও প্রকল্প থেকে তারা বঞ্চিত হবেন না।
কাশ্মীরবাসীকে ঈদুল আযহারও শুভেচ্ছা জানিয়ে মোদী বলেন,
> জম্মু-কাশ্মীরে ঈদ পালনে মানুষদের কোনো অসুবিধা যাতে না হয়, তা সরকার নিশ্চিত করবে।
> ‘জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখের বাসিন্দাদের চিন্তা গোটা দেশের চিন্তা।
> লাদাখে আধ্যাত্মিক, অ্যাডভেঞ্চার এবং ইকো পর্যটনের ব্যবস্থা করা হবে।
> নির্মাণ করা হবে নতুন ক্রীড়া অ্যাকাডেমি ও স্টেডিয়াম।
> দীর্ঘদিনের পরিবারতন্ত্রের কারণে জম্ম-কাশ্মীরে যুব সম্প্রদায় নেতৃত্বের সুযোগ পায়নি। এবার যুব সম্প্রদায় এগিয়ে আসবে।
> নতুন পরিচালনা ব্যবস্থায় কাজ করবেন জম্মু-কাশ্মীরের জনপ্রতিনিধিরা।
> কাশ্মীরিরাই তাদের জনপ্রতিনিধি বেছে নেবে। আগের মতোই মন্ত্রিসভা ও মুখ্যমন্ত্রী হবে।
> ‘দ্রুত জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারি পদে নিয়োগ হবে।
> আগে পার্লামেন্টের প্রণীত আইনে দেড়কোটি মানুষ কোনো উপকার পায়নি। জম্মু-কাশ্মীর কখনো দেশের আইন থেকে উপকৃত হয়নি।
> জম্মু-কাশ্মীরে নতুন উন্নয়নের জোয়ার বইবে এবং এ অঞ্চল বিশ্বের সব প্রান্তের মানুষের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে।