জাতিসংঘে মুজিববর্ষের ক্ষণগণনার উদ্বোধন

image-121396-1578712780

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে জাতিসংঘকে সম্পৃক্ত করে বছরব্যাপী নানা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে মর্মে ঘোষণা দিলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। আজ জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উদযাপন এবং মুজিববর্ষের ক্ষণগণনার শুভ উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানের শুরুতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। এরপর জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ও জন্মশতবার্ষিকীর ক্ষণগণনা সংক্রান্ত একটি ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। স্থায়ী প্রতিনিধির বক্তব্য শেষে রাজধানী ঢাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষণগণনা অনুসরণ করে নিউইয়র্কস্থ স্থায়ী মিশনেও জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর ক্ষণগণনার উদ্বোধন করা হয়।

স্থায়ী প্রতিনিধি তার বক্তব্যে বলেন, ”১৯৭২ সালে জাতির পিতার স্বাধীন বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনের এই দিনটি নিছক ফিরে আসা ছিল না, সেটি ছিল স্বাধীনতার পূর্ণতা প্রাপ্তি”। জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের এই শুভদিনে তার জন্মশতবার্ষিকীর ক্ষণগণনাকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ অভিহিত করে তিনি বলেন, “জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী বা মুজিববর্ষ শুধু আনুষ্ঠানিকতাই নয়, এটি একটি দর্শন। এই দর্শন আমরা চর্চা করবো, আমার চিন্তায় ও মননে প্রথিত রাখবো; এই দর্শন ধারণ করে আমরা দেশ ও জাতির উন্নয়নে কাজ করবো”। স্থায়ী প্রতিনিধির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় মিশনের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারিবৃন্দ এবং জাতিসংঘের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

পাকিস্তানে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর ক্ষণগণনা উদ্বোধন

 ইসলামাবাদস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে আজ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপনের ক্ষণগণনার উদ্বোধন এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগম্ভীর্যের সঙ্গে পালন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে হাইকমিশনের চ্যান্সারি ভবনে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। হাইকমিশনের সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী ও অন্যান্য অতিথি এতে অংশ নেন। আজ ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন হাইকমিশনার ও হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়।অনুষ্ঠানের আলোচনা পর্বে হাইকমিশনার তারিক আহসান হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকায় বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকীর ক্ষণগণনার বর্ণাঢ্য উদ্বোধনের সঙ্গে মিল রেখে ইসলামাবাদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসও ক্ষণগণনার প্রতীকী উদ্বোধন করছে।

তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবাসন দিবস থেকে ক্ষণগণনা শুরু করাটি ইসলামাবাদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের জন্য বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ; কেননা মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বিজয়ের পর সসম্মানে ইসলামাবাদ থেকেই বঙ্গবন্ধু স্বদেশের উদ্দেশে রওনা হন।

এরপর জাতির পিতা ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত এবং দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি, অগ্রগতি ও কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয় এবং জন্মশতবার্ষিকীর ক্ষণগণনা ও স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের উপর ভিত্তি করে নির্মিত একটি প্রামাণ্য ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

জাতিসংঘে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধ বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান রাবাব ফাতিমারজাতিসংঘে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধ বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান রাবাব ফাতিমার

 মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধ বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানালেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। আজ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ‘আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার্থে জাতিসংঘ সনদকে সমুন্নত রাখা’ শীর্ষক এক উন্মুক্ত আলোচনায় বক্তব্য প্রদানকালে এ আহ্বান জানান তিনি।
স্থায়ী প্রতিনিধি জাতিসংঘের প্রতি বাংলাদেশের অটল প্রতিশ্রুতির পূনর্ব্যক্ত করেন। তিনি জাতিসংঘে দেওয়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রথম ভাষণ থেকে উদ্বৃত করে বলেন- “জাতিসংঘ সনদে যে মহান আদর্শের কথা বলা হয়েছে তা আমাদের জনগণের আদর্শ এবং এ আদর্শের জন্য তারা চরম ত্যাগ স্বীকার করেছেন”।রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ যে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করে চলেছে তা এসেছে জাতির পিতার উদ্বৃত ঐ আদর্শ থেকেই। এক মিলিয়নেরও বেশি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে মানবিকতা ও সাহসী নেতৃত্ব প্রদর্শন করেছেন তা তুলে ধরেন স্থায়ী প্রতিনিধি।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার ফলে এই অঞ্চল একটি অস্থিতিশীলতা থেকে রক্ষা পেয়েছে আর এই আশ্রয়দান জাতিসংঘ সনদের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতিরই বহি:প্রকাশ।

অরাষ্ট্রীয় অপশক্তি দ্বারা সৃষ্ট অসম নিরাপত্তা হুমকি, সাইবার জগতে নতুন চ্যালেঞ্জসহ জলবায়ু পরিবর্তন, দারিদ্র্যতা, অসমতা, সন্ত্রাসবাদ, সহিংস উগ্রবাদ ও মানব বাস্তুচ্যুতির মতো উদীয়মান চ্যালেঞ্জসমূহের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। বর্তমান ও ভবিষ্য প্রজন্মের প্রত্যাশা পূরণে এসকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তিনি বহুপাক্ষিকতাবাদ ও জাতিসংঘ সনদকে সমুন্নত রাখার উপর জোর দেন।

জাতিসংঘ সনদের ৭৫তম বর্ষপূর্তিকে সামনে রেখে এটি ছিল নিরাপত্তা পরিষদের এবছরের প্রথম উন্মুক্ত আলোচনা। ভিয়েতনামের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্যাম বিন মিন এই উন্মুক্ত আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন যাতে একশতটিরও বেশি সদস্য রাষ্ট্র বক্তব্য প্রদান করে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ এবং চেয়ার অব দ্যা এলডার্স মিজ্ ম্যারি রবিনসন এর উদ্বোধনীতে বক্তব্য প্রদান করেন।

Pin It