কুমিল্লায় জাতীয় পার্টির (এরশাদ) সাংগঠনিক সভায় বক্তব্য দেওয়াকে কেন্দ্র করে নেতা-কর্মীদের মাঝে হাতাহাতি এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় জেলার হোমনা-তিতাস সংসদীয় আসনের জাপা (এরশাদ) দলীয় সাবেক এমপি আমির হোসেনসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।
জানা যায়, শনিবার দুপুরে কুমিল্লা টাউন হলের বীরচন্দ্র নগর মিলনায়তনে নেতা-কর্মীদের মাঝে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে সভা শেষে কুমিল্লা সার্কিট হাউজে বিকাল ৩টার দিকে ফের হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দুপুরে শহরের টাউন হল মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির (এরশাদ) কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা এবং কুমিল্লা উত্তর জেলা ও মহানগর শাখার সাংগঠনিক সভা শুরু হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী কাজী ফিরোজ রশিদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য এসএম ফয়সাল চিশতী, বিরোধীদলীয় হুইপ অধ্যাপক রওশন আরা মান্নানসহ কেন্দ্রীয় কমিটির বেশ কয়েকজন নেতা।
সভা চলাকালে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জাতীয় পার্টির সিনিয়র সহ-সভাপতি সালামত উল্লাহর সাথে সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কবির মোহনের বাগবিতণ্ডা হলে ঘটনার সূত্রপাত ঘটে। পরবর্তীতে কুমিল্লা উত্তর জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি আমির হোসেন মঞ্চে বক্তব্য দিতে গেলে দাউদকান্দির জাপা নেতা মাখন সরকার মাইক কেড়ে নেন। এতে মঞ্চে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে অতিথিদের হস্তক্ষেপে তারা শান্ত হন।
স্থানীয় একাধিক নেতা জানান, অনুষ্ঠান শেষে টাউন হল মাঠে আমির হোসেন ও মাখন সরকারের কর্মীদের মধ্যে প্রথমে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে এবং একপর্যায়ে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় পুলিশ টাউন হল মাঠ থেকে দুই কর্মীকে আটক করলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এদিকে সভা শেষ করে কেন্দ্রীয় নেতারা কুমিল্লা সার্কিট হাউজে যান। সেখানেও পুনরায় আমির হোসেন ও মাখন সরকার এবং তাদের সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারি শুরু হয়। এসময় আমির হোসেন ও মাখন সরকার দুজনই আহত হন। পুলিশ এসময় মাখন সরকারকে আটক করলেও পরে ছেড়ে দেয়।
এ বিষয়ে কুমিল্লা উত্তর জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি লুৎফুর রেজা খোকন জানান, ‘তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামান্য হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ মীমাংসা করে দিয়েছেন।’
এ বিষয়ে সন্ধ্যায় কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল হক সাংবাদিকদের জানান, ‘টাউন হল ও সার্কিট হাউজের ঘটনায় ৩ জনকে আটক করা হয়েছিল। এ বিষয়ে কারো কোন অভিযোগ না থাকায় এবং পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় নেতাদের অনুরোধে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।’