জামালপুর সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের নাকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী ভ্যান চালক তাহাজ্জত শম্পার পরিবারের দায়িত্ব নিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি তিনি শম্পার বাবা শফিকুল ইসলামের চিকিৎসার খরচও বহন করার দায়িত্ব নিয়েছেন।
বুধবার ( ২ ডিসেম্বর) সকালে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক শিশুটির পরিবারের সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি জানান। প্রধানমন্ত্রীর এমন মানবিকতায় আবেগ আপ্লুত হয়ে শম্পা ও তার পরিবারসহ নাকাটিবাসী প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তার দীর্ঘায়ু কামনা করে মোনাজাত করেন।
বুধবার (২ডিসেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক সকাল সাড়ে ১০টায় জেলার সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের নাকাটি গ্রামে জেলা প্রশাসক মোঃ এনামুল হক এবং সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদা ইয়াসমিন সম্পার বাড়িতে উপস্থিত হন। এ সময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক এবং সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শম্পার পরিবারের বসবাসের জন্য ১লাখ ৭৫হাজার টাকায় নির্মিতব্য বাসগৃহের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন।
পরে শম্পার অসুস্থ বাবা শফিকুল ইসলাম ভাসানীর উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করেন। জানা যায়,গত ৫ বছর আগে জামালপুর শহর থেকে বাড়ি ফেরার সময় সড়ক দুর্ঘটনায় ডান পা ভেঙ্গে যায় শম্পার বাবা শফিকুলের। প্রথমে জামালপুর জেনারেল হাসপাতাল এবং পরে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ৭ লাখ টাকা খরচ করে চিকিৎসার পরেও ভালো হয়নি শফিকুল ইসলাম ভাসানীর ডান পা। এরপর থেকেই সবসময় বিছানায় থাকতে হয় শফিকুল ইসলামকে। তাই শম্পার মা নেবুজা বেগম সবজি বিক্রি করে সংসারের হাল ধরেন। কিন্তু সেই উপার্জনেও যখন সংসার চালানো বা বাবার ঔষধ ক্রয়ের টাকা থাকেনা তাই বাধ্য হয়ে দেড় বছর আগে থেকে ভ্যান চালানো শুরু করে শিশু শম্পা।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক জানান, ক’দিন আগে শম্পার পরিবারের ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নজরে আসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। তাই তিনি বিষয়টি তদন্ত করে রিপোর্ট প্রদানের নির্দেশ দেন । প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশ পেয়ে জেলা প্রশাসক সড়ক দুর্ঘটনায় পঙ্গু শফিকুল ইসলাম এর বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের সাথে কথা বলেন এবং খোঁজ খবর নিয়ে একটি রিপোর্ট পেশ করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে।
তিনি আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা শম্পার পরিবারের সকল দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। শফিকুল ইসলামের চিকিৎসা, তাদের নতুন ঘর নির্মাণ ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া জেলা প্রশাসন সবসময় তার পরিবারের খোজ খবর নিবে এবং সহায়তা করবে বলে তিনি জানান।