বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সংবিধান অনুযায়ী জামিন পাওয়া খালেদা জিয়ার প্রাপ্য হক, অধিকার। সেই অধিকার থেকে তাকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এই ধরনের মামলায় আওয়ামী লীগের সব নেতা জামিনে আছেন। ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, মহীউদ্দিন খান আলমগীর, সাবেক গণপূর্ত মন্ত্রী আবদুল মান্নানও জামিনে আছেন। কিন্তু বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বেলায় এই জামিন দেওয়া হচ্ছে না। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য তাকে অন্যায়ভাবে কারাগারে আটকে রেখেছে সরকার।
রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের উদ্যোগে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, খালেদা জিয়ার জামিন প্রাপ্তিতে উচ্চ আদালতের কাছে সঠিক রায় প্রত্যাশা করছি। কারণ তাকে আটকে রাখার কোনো বিধান নেই। আমরা সর্বোচ্চ আদালতে বিশ্বাস করি বলেই বারবার যাই। আশা করি যে, আমরা ন্যায় বিচার পাবো।
বর্তমান অবস্থাকে মুখবদ্ধ পরিস্থিতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এর মাধ্যমে অবৈধ দখলদারী সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে হবে। এই মুহূর্তে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় নতুন নির্বাচনই এই রাজনৈতিক সংকট উত্তরণের একমাত্র সমাধান। অবিলম্বে পদত্যাগ করুন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করুন, নিরপেক্ষ নির্বাচন দিন।
মুজিবর্ষ প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার খুব উৎসব করে, অনেক ব্যয় করে মুজিববর্ষ পালন করছে। স্বাধীনতার ৫০ বর্ষপূর্তি করবে। কিন্তু সেই সময়ে ৩৫ লাখ লোকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা থাকবে, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে কারাগারে আটক করে রেখে, আমাদের নেতা-কর্মীদেরকে আটক করে রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে। গোটা বাংলাদেশের মানুষকে মামলা দিয়ে বুটের তলে রাখা হয়েছে। আজকে একটা ত্রাসের রাজত্ব, ফ্যাসিবাদের রাজত্ব এখানে প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে।
গুম-হত্যার প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সেনাবাহিনীর একজন অফিসার গুম হওয়ার দেড় বছর পরে ফিরে এসেছেন, কথা বলছেন না। আরেকজন সাত মাস পর ফিরে এসে তিনিও কথা বলেন না। তারও আগে একজন সাবেক রাষ্ট্রদূত নয় মাস অজ্ঞাত স্থানে নিখোঁজ ছিলেন, ফিরে এসে কথা বলছেন না। এখনো নিখোঁজ আছে একজন জেনারেল, এখনো নিখোঁজ আছেন একজন ব্যারিস্টার, এরকম অনেক মানুষ নিখোঁজ আছে। সরকার নিজেদের ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করবার জন্যে, চিরস্থায়ী করার জন্য গুমের আশ্রয় নিয়েছে যা অতীতে আমরা বাংলাদেশে দেখিনি। গুম করছে, হত্যা করছে, মিথ্যা মামলা দিচ্ছে- এভাবে নিপীড়ন-নির্যাতন করে তারা বাংলাদেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা স্থায়ী করতে চায়।
সংগঠনের সভাপতি আনোয়ার হোসেইনের সভাপতিত্বে প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুর সঞ্চালনায় মানববন্ধন কর্মসূচিতে দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শ্রমিক দলের নেতা সালাহ উদ্দিন সরকার, হুমায়ুন কবির খান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।