মাহমুদউল্লাহর দারুণ ফিফটিতে লড়াইয়ের পুঁজি পাওয়া বাংলাদেশ দাঁড়াতেই দেয়নি জিম্বাবুয়েকে। সম্মিলিত চেষ্টায় হ্যামিল্টন মাসাকাদজার দলকে গুঁড়িয়ে দিয়ে দলকে ফাইনালে নিয়ে গেলেন স্বাগতিক বোলাররা। নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে সাকিব আল হাসানের দল জিতেছে ৩৯ রানে।
সাগরিকায় দুপুর থেকে ছিল কাঠ ফাঁটা রোদ। ওই সুবিধা নিতে টস জিতে বোলিং নেয় জিম্বাবুয়ে। দ্বিতীয় ইনিংসে বলে শিশির জড়াবে। নরম হয়ে আসবে বল। পেস কিংবা স্পিন কোনটাতেই সুবিধা করতে পারবে না বাংলাদেশ। প্রকৃতি জিম্বাবুয়ে অধিনায়কের ধারণা মতোই কাজ করেছে। মুস্তাফিজ-সাকিবদের পরে বল করতে অসুবিধা হয়েছে। কিন্তু শুরুতে সাইফউদ্দিন, সাকিব, শফিউল এবং অভিষেক হওয়া আমিনুল জিম্বাবুয়ে শিবিরে যে ধাক্কা দেন সেটাই সামলে উঠতে পারেনি তারা। শেষ পর্যন্ত জিম্বাবুয়ে তাই ৩৯ রানের বড় ব্যবধানে হারে।
এ জয়ে তিন ম্যাচে দুই জয়ে ত্রিদেশীয় টি-২০ সিরিজের ফাইনাল নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। সঙ্গে আফগানিস্তানেরও ফাইনাল নিশ্চিত হয়েছে। দু’দলই এখন পর্যন্ত দুটি করে ম্যাচ জিতেছে। অন্য দিকে গ্রুপ পর্বের চার ম্যাচের মধ্যে তিনটিতে হেরে বৈশ্বিক আসরে আইসিসির নির্বাসন পাওয়া জিম্বাবুয়ের খালি হাতে ফেরা নিশ্চিত হয়েছে। তাদের সামনে আফগানিস্তানের বিপক্ষে একটা ম্যাচ আছে। জিম্বাবুয়ের বিদায়ী অধিনায়ক মাসাকাদজা চাইবেন একটা জয় পেতে। দেশের ক্রিকেটে একটু স্বস্তির বাতাস এনে দিতে।
বুধবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিং পায় বাংলাদেশ। মাহমুদুল্লাহর দারুণ এক ইনিংস ও লিটন দাস-মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে ভর করে ১৭৫ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। দলের হয়ে ওপেনার লিটন দাস ছোট্ট এক ঝড়ে ২২ বলে দুই ছক্কা ও চারটি চারে ৩৮ রান করেন। নাজমুল হোসাইনের সঙ্গে গড়েন ৪৯ রানের জুটি। এরপর নাজমুল, লিটন এবং সাকিব পরপর ফিরে যান। তবে ভিত্তি পেয়ে যায় বাংলাদেশ।
সেখানে দাঁড়িয়ে মাহমুদুল্লাহ এবং মুশফিক ৭৮ রান যোগ করেন। মাহমুদুল্লাহ ৪১ বলে পাঁচ ছক্কা ও এক চারে ৬২ রান করেন। মুশফিক খেলেন ৩২ রানের ইনিংস। জবাব দিতে নামা জিম্বাবুয়ে ঠিক ইনিংসের শেষ বলে ১৩৬ রানে অলআউট হয়। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৪ রান করেন মাতুনবামি। এছাড়া হ্যামিলটন মাসাকাদজা ২৫ রান ও কাইল জার্ভিস ২৭ রান করেন।
বাংলাদেশ দলের হয়ে টি-২০ তে ফেরার ম্যাচে শফিউল ইসলাম ৪ ওভারে ৩৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন। মুস্তাফিজুর রহমান ৪ ওভারে দেন ৩৮ রান। নেন দুই উইকেট। টি-২০ ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় বাংলাদেশী হিসেবে পঞ্চাশ উইকেটের (৫১ উইকেট) মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। অন্য দিকে অভিষেক ম্যাচে লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম ৪ ওভারে ১৮ রানে ২ উইকেট নিয়ে নতুন কিছুর ইঙ্গিত দিলেন। জিম্বাবুয়ের হয়ে কাইল জারভিস ৩ উইকেট নেন। ক্রিস এমপফু নেন দুই উইকেট।
ফাইনালে বাংলাদেশ, আফগানিস্তানজিম্বাবুয়েকে সহজেই হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছেছে বাংলাদেশ। সেখানে তাদের সঙ্গী আফগানিস্তান।
ত্রয়োদশ ওভারে ৬৬ রানে ৭ উইকেট হারানো জিম্বাবুয়ে আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি। শেষের দিকে পরাজয়ের ব্যবধান কমান রিচমন্ড মুতুমবামি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৭৫/৭ (শান্ত ১১, লিটন ৩৮, সাকিব ১০, মুশফিক ৩২, মাহমুদউল্লাহ ৬২, আফিফ ৭, মোসাদ্দেক ২, সাইফ ৬*, আমিনুল ০*; এনডিলোভু ৩-০-৩২-০, জার্ভিস ৪-০-৩২-৩, এমপোফু ৪-০-৪২-২, উইলিয়ামস ৪-০-২৬-০, বার্ল ১-০-১৩-১, মাতুমবদজি ৩-০-১৭-১, মাদজিভা ১-০-১০-০)
জিম্বাবুয়ে: ২০ ওভারে ১৩৬ (টেইলর ০, মাসাকাদজা ২৫, চাকাভা ০, উইলিয়ামস ২, মাতুমবদজি ১১, বার্ল ১, মুতুমবামি ৫৪, মাদজিভা ৯, জার্ভিস, এনডিলোভু ২, এমপোফু ০*; সাইফ ৪-০-১৪-১, সাকিব ৪-০-২৮-১, শফিউল ৪-০-৩৬-৩, মুস্তাফিজ ৪-০-৩৮-২, আমিনুল ৪-০-১৮-২)
ফল: বাংলাদেশ ৩৯ রানে জয়ী
ম্যন-অব-দা ম্যাচ- মাহমুদুল্লাহর