আলোচনা সভায় খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবির প্রসঙ্গটি সবাই সরাসরি বললেও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেননি। তা ছাড়া বিএনপি নেতারা স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে জিয়াউর রহমানের নাম নিলে সে ব্যাপারেও কামাল হোসেন কিছু বলেননি। কিন্তু বিএনপির সমর্থকেরা জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক বলতে ড. কামালকে আহ্বান জানিয়ে স্লোগান দিতে থাকে। তা ছাড়া মঞ্চ থেকে নামার পরও একই আহ্বান জানিয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীরা স্লোগান দিতে থাকে।
আজ রোববার রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করে। সেখানেই ড. কামাল হোসেন বক্তব্য দিতে গেলে এবং বক্তব্য শেষ করার পর এ পরিস্থিতির মুখে পড়েন।
অবশ্য ওই সময় বিএনপিসহ ঐক্যফ্রন্টের নেতারা স্লোগানরতদের বারবার থামানোর চেষ্টা করেছেন।
কামাল হোসেনের বক্তব্যের একপর্যায়ে ‘স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া’ বলে বিএনপির সমর্থকেরা স্লোগান দিতে থাকে। তখন কামাল হোসেন বলেন, ‘এই যে বিভিন্ন রকমের স্লোগান দিচ্ছেন আপনারা । এর পেছনের কথা, এ ব্যাপারে সবাই কিন্তু ঐকমত্যের বক্তব্য রেখেছে। এটা কোনো দলীয় কোনো বক্তব্য না। দলীয় দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে এসে ঐকমত্যে আমাদের লক্ষ্য অর্জন করা উচিত এবং সম্ভব।’
স্লোগান অব্যাহত থাকলে তিনি বলেন, ‘এই বিষয়ে সবাই যে বক্তব্য রেখেছে, একই কথা বলেছে। যাদের অন্যায়ভাবে বন্দী করে রাখা হয়েছে তাদের মুক্ত করা হোক। এ ব্যাপারে দ্বিমত নেই।’ গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু কামাল হোসেনকে কিছু একটা বলতে গেলে কামাল হোসেন ক্ষেপে গিয়ে বলে, ‘কোনো কিছু বলব না। যা বলেছি এটাই বলব। সবার দাবির সঙ্গে ঐকমত্য বলেছি।’
আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) থেকে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য মেডিকেল বোর্ড থেকে তিনি জেনেছেন খালেদাকে দ্রুত হাসপাতালে স্থানান্তর করতে হবে। এ ছাড়া খালেদার সঙ্গে তাঁর পরিবার ও দলের নেতাদেরও দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল।
সরকার ঐক্যফ্রন্টকে ভাঙতে চায় বলে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপিকে নিয়েই সরকার কথা বলতে থাকে।
জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি আপসে হবে না। মাঠে আন্দোলন করতে হবে। তিনি দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানান।
আগুন লাগলে সরকারের তা নিয়ন্ত্রণ করার সক্ষমতা নেই বলে সমালোচনা করেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, এ সরকার ডাকাতের সরকার। তিনি দ্রুত অবাধ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানান।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও চিকিৎসক জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, দেশের শান্তির জন্য খালেদা জিয়াকে ও রাজবন্দীদের মুক্তি দিতে হবে।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, গণফোরামের মোস্তফা মোহসীন মন্টু, সুব্রত চৌধুরী, রেজা কিবরিয়া, মেজর জেনারেল (অব.) আমসা আমিন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার প্রমুখ।