বাংলাদেশের রাজনীতিতে খুন, হত্যা এবং ষড়যন্ত্রের পেছনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের পরিবারের যোগ দেখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বুধবার দুপুরে বরিশাল সড়ক জোন, বিআরটিসি, বিআরটিএ কর্মকর্তাদের সাথে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, “বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন জেনারেল জিয়াকে নাকি ছোট করা হচ্ছে। আমি তার কাছে জানতে চাই, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর মুশতাক সরকারের প্রধান সেনাপতি কে হয়েছিল? বঙ্গবন্ধুর হত্যকারীরা সাক্ষাৎকারে বলেছেন, বঙ্গভবনের একটি কক্ষে জিয়ার সঙ্গে খুনিদের কথা হতো, দেখা হতো। খুনিদের দূতাবাসে চাকরি কে দিয়েছিল? হত্যার বিচার বন্ধে মোশতাক সরকারের ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে কে সংবিধানে ঢুকিয়েছিল?
“খুনি আর খুনির মদদদাতা, প্রশ্রয়দাতা এবং সুবিধাভোগীও সমান অপরাধী। শুধু জিয়াই নয়, মুফতি হান্নানের সাক্ষ্যেও উঠে এসেছে ২১ অগাস্টের মাস্টারমাইন্ড হাওয়া ভবনের তারেক জিয়া। এদেশের রাজনীতিতে খুন, হত্যা, ষড়যন্ত্রের জনক জিয়া পরিবার। খুনিদের খুনিইতো বলবে জনগণ। সত্য কথা শুনতে আপনাদের এতো গাত্রদাহ কেন?”
স্বাধীনতার ঘোষণার পাঠক স্বাধীনতার ঘোষক হতে পারে না মন্তব্য করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, “জিয়া ইতিহাসের ফুটনোট মাত্র। ফুটনোট কখনও ইতিহাসের নায়ক হতে পারে না।
“১৫ অগাস্ট ও ২১ অগাস্টের মাস্টারমাইন্ড বিএনপি। একুশ অগাস্টের রক্তস্রোত এবং হত্যকাণ্ড অন্যদিকে ঘোরাতে জজমিয়া নাটক আপনারাই সাজিয়েছেন। আলামত নষ্ট করে ধামাচাপা দিতে চেয়েছেন। পাঠ্যপুস্তক থেকে পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুকে নির্বাসনে দিয়েছেন। পাবলিক মিডিয়ায় বঙ্গবন্ধু হারিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ইতিহাস চলে নিজস্ব গতিতে। অপরাধীদের একসময় ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতেই হয়। ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সত্য এই যে, ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না।”
দেশের করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাথে তুলনা করলে বাংলাদেশে করোনার সংক্রমণ এখনও একটি নির্দিষ্ট পর্যায়ে স্থির হয়ে আছে বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় আক্রান্তের সংখ্যা এবং আক্রান্তের সাথে মৃত্যুর আনুপাতিক হার অন্যান্য দেশের চেয়ে তুলনামূলকভাবে কম।
“তবে এতে আত্মতুষ্টির কোনো কারণ নেই। আমরা একটি মৃত্যুও প্রত্যাশা করিনা। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নমুনা পরীক্ষা কম হচ্ছে বলে আক্রান্তের সংখ্যা কম ধরা পড়ছে। অনেকে আক্রান্ত হলেও শরীরের লক্ষণ দেখা যাচ্ছেনা আবার অনেকে লক্ষণ নিয়েও পরীক্ষা করাচ্ছেনা, এমন অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছে।”
ওবায়দুল কাদের বলেন, “নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, স্পেনসহ কয়েকটি দেশে সেকেন্ড ওয়েভ শুরু হয়েছে। আমাদের দেশে সংক্রমণের প্রথম তরঙ্গ বা প্রথম ওয়েভের কার্ভের স্লোপ এখনও ডাউনওয়ার্ড বা নিম্নমূখি হয়নি। চলমান ধারা বা ট্রেন্ড কতদূর যাবে তাও অনিশ্চিত বলে অনেকে মন্তব্য করছেন। সেক্ষেত্রে করোনা শীঘ্রই চলে যাবে বা চলে যাচ্ছে এমন মনে করার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। এমন ভেবে স্বাস্থ্যবিধির প্রতি অবহেলা প্রদর্শন ব্যক্তি, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে বিপর্যয়ের ঝুঁকি নিয়ে আসতে পারে।
“জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে বের হলে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করতে হবে। আমাদের অভ্যাসের পরিবর্তন ঘটিয়ে তা স্বাস্থ্যবান্ধব করতে হবে। প্রতিকার নয়, এ ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে প্রতিরোধ ব্যবস্থায় অধিক মনযোগ দেয়াই সর্বোত্তম কৌশল।”