করোনাভাইরাস মহামারীর এই সময় দেশের স্বাস্থ্যখাতের ‘নাজুক দশার’ পাশাপাশি সরকারের ‘ধাপ্পাবাজি’ প্রকাশ করে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
শুক্রবার ঢাকার নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে তার এমন মন্তব্য আসে।
রিজভী বলেন, “করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পেতে ১৫ দিন পর্যন্ত সময় লাগছে। ল্যাবরেটরিতে নমুনার স্তূপ জমা পড়ে আছে।”
দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৪৭টি জেলাতেই ‘আইসিইউ নেই’- এমন তথ্য দিয়ে রিজভী বলেন, “বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের বর্তমান দুর্দশায় প্রমাণিত হয়েছে, এই সরকার জনগণের সঙ্গে বছরের পর বছর ধরে ধাপ্পাবাজি করেছে।
“করোনাভাইরাসের এই মহামারীর সময়ে মানুষের জীবনের বিনিময়ে স্বাস্থ্যখাতের বিপন্ন ও ভঙ্গুর ছবি প্রকাশ হয়ে পড়েছে।”
সরকারি হাসপাতালে আইসিইউ স্থাপন নিয়ে ২০১৪ সালের ২৩ নভেম্বর তখনকার আওয়ামী লীগ সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের বক্তব্য তুলে ধরে রিজভী বলেন, “মোহাম্মদ নাসিমের প্রতিশ্রুতির ঠিক ছয় বছর পর ২০২০ সালে এসেও আওয়ামী সরকারের মুখে সেই একই কথা। একই প্রতিশ্রুতি।
“প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৮ এপ্রিল জাতীয় সংসদে বলেছেন, প্রতিটি জেলা হাসপাতালে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট স্থাপন করা হবে।”
রিজভীর ভাষায়, আওয়ামী লীগ সরকারের এসব প্রতিশ্রুতি কাজীর গরুর মত “কেতাবেই থাকছে, গোয়াল নয়”।
সরকার নিজেদের ‘দুর্নীতি আড়াল করতে কালো আইন প্রয়োগ করছে’ বলেও অভিযোগ করেন রুহুল কবির রিজভী।
“কেউ আওয়ামী লীগের ব্যর্থতা আর দুর্নীতির কথা মনে করিয়ে দিলে তাকে তাড়াহুড়ো করে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, রাতের অন্ধকারে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, গুম করা হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় মন্তব্য করার কারণে দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, একজনকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে।”
বিএনপি ও ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকেও ‘তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে’ বলে অভিযোগ করেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব।
তিনি বলেন, “ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো ব্ল্যাক ল প্রয়োগের মাধ্যমে গুম, মিথ্যা মামলা ও গ্রেপ্তার এখন ভয়াল করোনাভাইরাসের তাণ্ডবের মধ্যে নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
সাংবাদিকদেরও ‘হয়রানি’ করা হচ্ছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, “দুর্নীতির সংবাদ আড়াল করার জন্য প্রতিদিনিই গণমাধ্যমের সাংবাদিকদেরকে ডেকে নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকেরা ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হয়রানি করছে। বিরোধী দল ও গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের ওপর তাদের প্রণীত সকল কালাকানুন নির্বিচারে প্রয়োগ করছে।”
জনগণের ঐক্যবদ্ধ শক্তি ‘সরকারের চরম পরিণতি ডেকে আনবে’ বলেও মন্তব্য করেন রিজভী।