নিজেদের ঘাঁটি বলে পরিচিত মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানায় সরকার গড়তে চললেও রাজ্য দুটিতে বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ফলাফলে দুই রাজ্যেই বিজেপি ও তার জোটসঙ্গীদের ভোট আগের তুলনায় কমেছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
মহারাষ্ট্রে বিজেপি গতবারের চেয়ে ২ শতাংশ ভোট কম পেয়েছে; আসনও ১৭টি কমে হয়েছে ১০৫। জোটসঙ্গী শিবসেনা এবার জিতেছে ৫৬টি আসনে, আগেরবার তাদের হাতে ছিল ৬৫টি আসন।
ভোট-আসন কমলেও তা বিজেপি-শিবসেনা জোটকে ক্ষমতাচ্যুত করতে যথেষ্ট নয়; ২৮৮ আসনের এ রাজ্যে সরকার গড়তে প্রয়োজন ১৪৫ আসনের।
আগের বিধানসভা এবং চলতি বছরের লোকসভায় বাজে ফল করলেও অক্টোবরের নির্বাচনী ফলে চমক দেখিয়েছে কংগ্রেস ও তাদের সঙ্গী অজিত পাওয়ারের ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি)।
কংগ্রেস জিতেছে ৪৪টি আসনে; এনসিপি ৫৪টিতে। ২০১৪-র নির্বাচনে তারা জিতেছিল যথাক্রমে ৪২ ও ৪১টি।
উত্তরের রাজ্য হরিয়ানার ফলকে ‘ত্রিশঙ্কু’ বলছে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো। এখানকার ৯০টি আসনের মধ্যে বিজেপি জিতেছে ৪০টিতে; কংগ্রেস পেয়েছে ৩১টি, জননায়ক জনতা পার্টি (জেজেপি) থলিতে ভরেছে ১০টি আসন।
সরকার গড়তে হরিয়ানায় প্রয়োজন ৪৬টি আসন; স্বতন্ত্র বিধায়কদের সমর্থন নিয়ে এখানেও বিজেপিই সরকার গড়তে যাচ্ছে বলে ইঙ্গিত পর্যবেক্ষকদের।
আগের নির্বাচনে এই রাজ্যে বিজেপি একাই পেয়েছিল ৪৭টি, কংগ্রেসের ছিল ১৫টি। সর্বশেষ লোকসভা নির্বাচনেও সোনিয়া গান্ধীর দল এখান থেকে কোনো আসন জিততে পারেনি।
গত সপ্তাহে ভারতের আরও ১৮টি রাজ্যের ৫১টি আসনের পুননির্বাচনেও কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি সুবিধা করতে পারেনি। এর মধ্যে মাত্র ২৬টিতে নরেন্দ্র মোদীর দল ও তার জোটসঙ্গীরা জিততে পেরেছেন।
ভোটের এ ফল গেরুয়া শিবিরে চিন্তার ভাঁজ বাড়িয়ে দেবে বলেই অনুমান পর্যবেক্ষকদের। তিন তালাক নিষিদ্ধ, কাশ্মীরের ৩৭০ ধারা রদ, পাকিস্তানের সঙ্গে কথার লড়াই, চাঁদে মহাকাশযান পাঠানোর ব্যর্থ চেষ্টা কোনোটাই যে পদ্মফুলের পক্ষে জোয়ার সৃষ্টিতে কাজে লাগেনি, তাও দেখা যাচ্ছে।
বুথফেরত জরিপে বিজেপি বড় ধরনের সাফল্য পাচ্ছে বলে ধারণা দেয়া হলেও জনরায়ে শেষ পর্যন্ত দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও অর্থনীতির সাম্প্রতিক মন্দার প্রতিফলনই দেখা গেছে বলে মত বিশ্লেষকদের।