করোনাভাইরাসের টিকা বিতরণে সরকারের পরিকল্পনা নিয়ে আবারও প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার বিকালে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “ভ্যাকসিন সাধারণ মানুষ পাবে কিনা তার কোনো রোডম্যাপ নাই, কোনো প্ল্যানিং নাই। বলছে, আগে ২০ লক্ষ আসবে। এই ২০ লক্ষ কারা পাবে -সেটা আমরা জানি না। প্রতি মাসে নাকি ৫০ লক্ষ করে আসবে, সেটা কারা পাবে তাও জানি না। আমরা যারা সাধারণ মানুষ, আমরা কখন পাব, না পাব তার কোনো নিশ্চয়তা এখানে নাই।”
ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার (ভ্যাকসিন) তিন কোটি ডোজ কিনতে চুক্তি করেছে সরকার। সেই টিকার প্রথম চালান ২৫ জানুয়ারি দেশে আসার কথা। তার আগেই বৃহস্পতিবার আসবে ২০ লাখ ডোজ টিকা, যা ভারত সরকার উপহার হিসেবে পাঠাচ্ছে।
বাংলাদেশে সেরাম ইন্সটিটিউটের ডিস্ট্রিবিউটর হিসেবে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস তিন কোটি ডোজ টিকা ছয় মাসে সরকারকে সরবারহ করবে। এ বিষয়টি নিয়েও সরকারের সমালোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, “ভ্যাকসিন যেটা দিলে মানুষের জীবন রক্ষা হবে, মানুষ বাঁচবে- এটা নিয়েও তারা (সরকার) লুটপাট শুরু করেছে। অনেক বেশি দাম দিয়ে ভারতের কাছ থেকে এই ভ্যাকসিন কিনছে।”
করোনাভাইরাস মহামারীর শুরু থেকেই দেশে স্বাস্থ্য খাতে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, “এই করোনা নিয়েও এরা চুরি করছে, ডাকাতি করছে, লুটপাট করছে। প্রথম দিকে করলো করোনা টেস্ট নিয়ে। ওই টেস্ট নিয়ে রিজেন্ট হাসপাতাল, ডা. সাবরিনাসহ কে কে আসল.. এসে তারা লুটপাট করল।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “স্বাধীনতার ৫০ বছরে ওদের (আওয়ামী লীগ) সফলতা হচ্ছে যে, আজকে তারা জনগণের সমস্ত অধিকারগুলো কেড়ে নিয়েছে। তারা মানুষকে সত্যিকার অর্থে শৃঙ্খলিত করেছে, বন্দি করে দিয়েছে।”
এ অবস্থা থেকে উত্তরণে রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে ফখরুল বলেন, “আপনারা সবাই এখনো এই নিশ্চুপ না থেকে আসুন, আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই এবং বাংলাদেশের জনগণকে আমরা ঐক্যবদ্ধ করি। এই যে ভয়াবহ দানব আমাদের বুকের ওপর চেপে বসেছে, সেই দানবকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা আমরা প্রতিষ্ঠা করি।”
জিয়াউর রহমানের ৮৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে এই আলোচনা সভা হয়।
সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েলের পরিচালনায় অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলাম, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান, স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রয়াত সভাপতি শফিউল বারীর সহধর্মিনী বিথীকা বিনতে হোসেইন, স্বেচ্ছাসেবক দলের গোলাম সারোয়ার, ইয়াসীন আলী আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন।