বৃহৎ প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো বিশ্ব আর্থিক ব্যবস্থায় বড় ধরনের বিঘ্ন ঘটাতে পারে বলে সতর্ক করেছেন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফের প্রধান ক্রিস্টিনে লগার্দ।
তিনি বলছেন, গুটি কয়েক কোম্পানি তাদের বিশাল তথ্য ভাণ্ডার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার করে বৈশ্বিক লেনদেনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিতে পারে।
রয়টার্স লিখেছে, ফিন্যান্সিয়াল টেকনোলজির দ্রুত প্রসারে উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোতে, যেখানে প্রচলিত ব্যাংকিং নেটওয়ার্ক ততোটা শক্তিশালী নয়, নিম্ন আয়ের মানুষের সাশ্রয়ী পেমেন্ট ও আর্থিক সেটেলমেন্ট ব্যবস্থায় সম্পৃক্ততা বাড়ছে।
তবে মোবাইল লেনদেন ব্যবস্থায় বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর আধিপত্য উদ্বেগ তৈরি করেছে। আর সে কারণেই ব্যাংকিং ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপদ আর্থিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে ভাবতে বাধ্য হচ্ছেন বিশ্ব অর্থনীতির নীতিনির্ধারকরা।
জাপানের ফুকুওকায় শনিবার জি টোয়েন্টিভুক্ত দেশগুলোর অর্থমন্ত্রীদের সম্মেলনের ফাঁকে অনুষ্ঠিত এক সভায় এই বিষয়ে সতর্ক করলেন আইএএমএফ প্রধান।
তার মতে, বৃহৎ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো অর্থনীতির ভূগোল পাল্টে দিতে পারে। এসব কোম্পানি বিশাল তথ্য ভাণ্ডার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি ফিন্যান্সিয়াল পণ্য বিক্রির জন্য তাদের বিপুল সংখ্যক কাস্টমার বেইস ও বড় বড় পকেটগুলোকে ব্যবহার করবে।
এসব উদ্ভাবন আর্থিক বাজারের আধুনিকায়নে ভূমিকা রাখলেও লেনদেন ব্যবস্থা হাতেগোনা কয়েকটি কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে এনে তারা পুরো আর্থিক ব্যবস্থাকে দুর্বল করে দিতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
ফিন্যান্সিয়াল টেকনোলজির সুবিধা ও চ্যালেঞ্জ বোঝাতে চীনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন তিনি।
লগার্দ বলেন, গত পাঁচ বছরে চীনে প্রযুক্তি খাতে বিপুল প্রবৃদ্ধি হয়েছে এবং তাতে ফিন্যান্সিয়াল পণ্যের বাজার ও উচ্চ মানের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে লাখ লাখ মানুষ সুবিধাপ্রাপ্ত হয়েছে।
“তবে এর মধ্য দিয়ে মোবাইলে লেনদেনের বাজারের ৯০ শতাংশের বেশির নিয়ন্ত্রণ দুটি কোম্পানির হাতে চলে এসেছে।”
জি টোয়েন্টির অর্থমন্ত্রীদের এই সম্মেলনে ফেইসবুক ও গুগলের মতো কোম্পানিগুলোর ট্যাক্স ফাঁকি বন্ধের বিষয়েও আলোচনা হচ্ছে।
এসব কোম্পানি কোথায় প্রধান কার্যালয় করেছে তার ওপর ভিত্তি করে নয়, কোন কোন জায়গা থেকে তারা লাভ করছে তার ওপর ভিত্তি করে তাদের ওপর ট্যাক্স আরোপের সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।