ট্রান্সশিপমেন্ট চুক্তির আওতায় ভারতীয় পণ্যের পরীক্ষামূলক প্রথম চালান খালাস করে ৩১ হাজার টাকার মতো আয় হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরের, শুল্ক বিভাগের আয় হয়েছে ১৩ হাজার টাকা।
সরকারি এই আয়ের বাইরে পণ্য বাংলাদেশি জাহাজে আনা এবং বাংলাদেশ ভূখণ্ডে পরিবহনের ব্যয়ও বাংলাদেশের কোম্পানি পাচ্ছে।
এই সব মিলিয়ে কন্টেইনার চারটির পরীক্ষামূলক পরিবহনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে তিন লাখ টাকার মতো থাকছে বলে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
ভারত থেকে আসা এসব কন্টেইনার টিএমটি বার ও ডালজাতীয় পণ্য নিয়ে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে সড়ক পথে আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসাম ও ত্রিপুরায় যাচ্ছে। দুই কন্টেইনার টিএমটি বার ত্রিপুরায় এবং ডালজাতীয় পণ্যের বাকি দুই কন্টেইনার আসামে যাবে।
মঙ্গলবার ভোরে ভারতের কলকাতার শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী বন্দর থেকে অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে ট্রান্সশিপমেন্টের পরীক্ষামূলক চালানের চার কন্টেইনার পণ্য নিয়ে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি সেঁজুতি চট্টগ্রাম বন্দরে ভেড়ে। পরে জেটিতে ভেড়ার পর কন্টেইনারগুলো খালাস করা হয়।
বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে চারটি ট্রেইলরে করে প্রতিটি ২০ ফুট দৈর্ঘ্যের কন্টেইনার চারটি আখাউড়া সীমান্তের বাংলাদেশ অংশে পৌঁছায়।
বৃহস্পতিবার সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে এসব পণ্যভর্তি কন্টেইনার ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় গ্রহণ করা হবে বলে সেঁজুতি জাহাজের স্থানীয় এজেন্ট ম্যাঙ্গোলাইন লিমিটেডের ব্যবস্থাপক হাবীবুর রহমান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, জাহাজে করে পণ্য আনা থেকে শুরু করে আখাউড়া সীমান্ত পর্যন্ত পৌঁছানোর দায়িত্ব তাদের প্রতিষ্ঠানের।
ভারতীয় এই কন্টেইনার হ্যান্ডলিং, ক্রেন ও সিঅ্যান্ডএফ চার্জ এবং ভ্যাটসহ এ চালান থেকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ৩০ হাজার ৮৯৯ টাকা পেয়েছে বলে জানান চবক সদস্য (প্রশাসন) মো. জাফর আলম।
এই পণ্য থেকে প্রসেসিং মাশুল, ট্রান্সশিপমেন্ট মাশুল, নিরাপত্তা মাশুল, প্রশাসনিক মাশুল, এসকর্ট মাশুল, কন্টেইনার স্ক্যানিং মাশুল ও ইলেকট্রিক সিলের মাশুলসহ বিভিন্ন পর্যায়ে অর্থ পেয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার মো. ফখরুল আলম বলেন, “ভারতীয় পণ্যের পরীক্ষামূলক চালানটি থেকে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ মোট ১৩ হাজার ১০০ টাকা মাশুল পেয়েছে।”
ম্যাঙ্গোলাইনের কর্মকর্তা হাবীবুর বলেন, প্রতি কন্টেইনার চারশ ডলার হিসেবে জাহাজ ভাড়া পড়েছে এক লাখ দুই হাজার টাকার মতো। এছাড়া বন্দর থেকে আখাউড়া সীমান্ত পর্যন্ত প্রতিটি ৩০ হাজার টাকা হিসেবে চারটি ট্রেইলরের ভাড়া পড়েছে এক লাখ ২০ হাজার টাকা।
এর বাইরে ২৫-৩০হাজার টাকার মতো ‘আরও চার্জ’ থাকার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, সবমিলিয়ে কন্টেইনার চারটির পরীক্ষামূলক পরিবহনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ তিন লাখ টাকার মতো আয় হয়ে থাকার কথা।
চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর দিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোতে পণ্য পরিবহনের জন্য ভারত ও বাংলাদেশের সচিব পর্যায়ে ২০১৮ সালের অক্টোবরে দিল্লিতে সচিব পর্যায়ে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। পরবর্তীতে দুই দেশের বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা এবং চুক্তির পর তা একটি পর্যায়ে আসে।
সেই চুক্তির আওতায় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে প্রথম ভারতীয় পণ্যের পরীক্ষামূলক চালানের পরিবহনের কাজ হল।