গত জুলাইয়ে পেনসিলভেইনিয়ার নির্বাচনী সমাবেশে আততায়ীর গুলির মুখে সত্যিকারের সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন ট্রাম্প, বললেন রুশ প্রেসিডেন্ট
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী রিপাবালিকান প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্পকে বিশ্বের প্রায় সব দেশের নেতারা অনেক আগেই অভিনন্দন জানালেও চুপ ছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। শেষ পর্যন্ত তিনিও অভিনন্দন জানালেন ট্রাম্পকে।
আততায়ীর গুলিতে হত্যাচেষ্টার শিকার হওয়ার সময় ট্রাম্পের সাহসিকতার প্রশংসা করেছেন পুতিন। নির্বাচিত নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সংলাপে বসার জন্য মস্কো প্রস্তুত বলেও তিনি জানিয়েছেন।
ট্রাম্পের জয়ের পর বৃহস্পতিবার প্রথম প্রকাশ্য বক্তব্যে পুতিন বলেন, “গত জুলাইয়ে পেনসিলভেইনিয়ায় এক নির্বাচনী সমাবেশে ট্রাম্পকে হত্যাচেষ্টার সময় সত্যিকারের সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি (ট্রাম্প)। আমার মতে, তিনি অত্যন্ত সঠিকভাবে, সাহসীভাবে, একজন সত্যিকারের মানুষের পরিচয় দিয়েছেন।”
রাশিয়ার কৃষ্ণ সাগর তীরবর্তী সোচি রিসোর্টের ভালদাই ডিসকাশন ক্লাবে পুতিন এই প্রশংসা করেন ট্রাম্পের।
পুতিন আরও বলেন, “নির্বাচনি প্রচারণায় ট্রাম্প ইউক্রেইন সংকটের অবসান ঘটাতে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন, আমার মতে তার এ পরিকল্পনা অন্তত মনোযোগ পাওয়ার দাবি রাখে।”
নির্বাচনী প্রচারণার সময় ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছিলেন, নির্বাচিত হলে আলোচনার মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিনি ইউক্রেইনে শান্তি ফিরিয়ে আনবেন।
তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে সবচেয়ে বড় এই স্থলযুদ্ধের অবসান করার প্রতিশ্রুতি ঠিক কীভাবে পূরণ করবেন সে বিষয়ে ট্রাম্প বিস্তারিত কিছু জানাননি।
এর আগে, বিজয়ী ভাষণে ট্রাম্প বলেছিলেন, “আমি একটি সাধারণ নীতি অনুসরণ করে দেশ পরিচালনা করব: প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা হয়েছে।
আগামীতেও আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করব।”
রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে ইউক্রেইনকে সমর্থন করতে যুক্তরাষ্ট্র যে হাজার হাজার কোটি ডলার ব্যয় করেছে তার সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প। ওদিকে, ৭২ বছর বয়সী ক্রেমলিন প্রধান পুতিন সতর্ক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেছেন, “আমি জানি না এখন কী ঘটতে চলেছে। আমার কোনও ক্লু নেই।”
এক প্রশ্নকর্তার প্রশ্নের জবাবে পুতিন বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন চাইলে তিনি যোগাযোগ পুনরায় শুরু করতে প্রস্তুত এবং ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রস্তুত আছেন।
পশ্চিমা গণমাধ্যমে ট্রাম্পকে রাশিয়ার প্রভাব বিস্তারের এজেন্ট বলে যে দাবি করা হয়, তা বারবার অর্থহীন বলে প্রত্যাখ্যান করে এসেছেন ট্রাম্প এবং রাশিয়াও।
২০২৪ সাল ও অন্যান্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়া হস্তক্ষেপ করেছে এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টায় ভুল তথ্য ছড়িয়েছে- যুক্তরাষ্ট্রের এমন দাবিও বারবারই অস্বীকার করে আসছে মস্কো।
রুশ কর্মকর্তারা বলছেন, ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে রাশিয়ার প্রতি কঠোর ছিলেন।
পুতিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে রাশিয়া প্রস্তুত থাকলেও সিদ্ধান্ত এখন ওয়াশিংটনের হাতে। এমনকি, চীনকে রাশিয়ার ‘মিত্র’ বলেও পুতিন মন্তব্য করেন।
পুতিন সহজেই ট্রাম্পকে দুপুরের খাবার হিসেবে খেয়ে ফেলবেন বলে কমলা হ্যারিসের হুঁশিয়ারির বিষয়ে জানতে চাইলে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ
হাসতে হাসতে বলেন, “পুতিন মানুষ খান না।”