যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহ আগে প্রথম মুখোমুখি বিতর্কে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ও ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী জো বাইডেন একে অপরকে কদর্যভাবে আক্রমণ করেছেন।
মঙ্গলবার রাতে ওহাইও’র ক্লিভল্যান্ডে দুই প্রার্থী ৯০ মিনিট ধরে চলা বিতর্কে যেভাবে তর্কে লিপ্ত হয়েছিলেন তাকে হোয়াইট হাউসে যাওয়ার দৌড়ে প্রার্থীদের মধ্যে অনেক বছর ধরে হওয়া বিতর্কগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বিশৃঙ্খল ও বিদ্বেষপূর্ণ বলা হচ্ছে।
ক্রুদ্ধ চিৎকার ও নাম ধরে ডেকে দুই প্রার্থী করোনাভাইরাস মহামারী, শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদ ও অর্থনীতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে একে অপরকে আক্রমণ করেছেন।
বিবিসি জানিয়েছে, প্রথম এ নির্বাচনী বিতর্কে বাইডেন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টকে ‘ভাঁড়’ বলে অ্যাখ্যা দিয়েছেন, বলেছেন ‘চুপ কর’তে। ট্রাম্পও কম যান নি, তিনি তুলেছিলেন বাইডেনের ছেলের মাদক ব্যবহারের প্রসঙ্গ।
সাম্প্রতিক বিভিন্ন জনমত জরিপে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বাইডেনকে রিপাবলিকান ট্রাম্পের চেয়ে সামান্য এগিয়ে থাকতে দেখা গেলেও গুরুত্বপূর্ণ কিছু ব্যাটলগ্রাউন্ডে দু’জনের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে পারে বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
ক্লিভল্যান্ডের এ নির্বাচনী বিতর্কে প্রার্থীদের অতীত কর্মকাণ্ড, সুপ্রিম কোর্ট, মহামারী, বর্ণবৈষম্য, নির্বাচনী অখণ্ডতা ও অর্থনীতি- এ ৬টি বিষয়ের প্রত্যেকটির জন্য ১৫ মিনিট করে আলোচনার সুযোগ রাখা ছিল।
বিতর্কের এক পর্যায়ে ৭৭ বছর বয়সী বাইডেনকে ৭৪ বছর বয়সী ট্রাম্পের উদ্দেশ্যে অপমানসূচক নানান বাক্যবাণও ছুড়তে দেখা গেছে।
“যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বাজে প্রেসিডেন্ট আপনি,” রিপাবলিকান প্রার্থীকে উদ্দেশ্য করে বলেন বাইডেন।
বিতর্কের এক পর্যায়ে সঞ্চালক ট্রাম্পের কাছে তিনি ‘শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদীদের’ নিন্দা জানানোর জন্য প্রস্তুত কিনা, এমন প্রশ্ন ছুড়লে দুই প্রার্থীর দ্বৈরথ জমে ওঠে।
ট্রাম্প শুরুতে শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদীদের নিন্দা জানাবেন আশ্বাস দিলেও যখন কট্টর ডানপন্থি গোষ্ঠী ‘প্রাউড বয়েজ’ এর নাম ধরে নিন্দা জানানোর প্রস্তাব ওঠে, তখন তিনি পাশ কাটিয়ে যান।
“প্রাউড বয়েজ, পিছু হটো এবং অপেক্ষা করো। কিন্তু আমি আপনাকে বলতে চাই, কারো না কারো অবশ্যই অ্যান্টিফা (যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাসিবিরোধী আন্দোলন) ও বামদের নিয়ে কিছু করতে হবে,” বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
এর আগে বাইডেন ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “ইনি এমন একজন প্রেসিডেন্ট যিনি জাতিগত বিদ্বেষ, জাতিগত বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টায় কুকুরকে শিষ দিয়ে ডাকার মতো সবকিছুকে ব্যবহার করেছেন।”
এর পাল্টায় ট্রাম্প বাইডেনের ১৯৯৪ সালের ক্রাইম বিল সমর্থনের প্রসঙ্গ টানেন; বলেন, সেসময় ডেমোক্র্যাট প্রার্থী আফ্রিকান-আমেরিকানদেরকে ‘ভয়াবহ শিকারি’ অ্যাখ্যা দিয়েছিলেন। ট্রাম্পের এ অভিযোগ অস্বীকার করেন বাইডেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর তহবিল কাঁটছাঁটের প্রস্তাবে সমর্থন জানানো ডেমোক্র্যাট প্রার্থীকে উসকে দিয়ে ট্রাম্প আরও বলেন, “আপনি এমনকি ‘আইন প্রয়োগকারী’ এ শব্দগুলোও উচ্চারণ করতে পারবেন না, কেননা তাহলে আপনি আপনার উগ্র বাম সমর্থকদের হারাবেন।”
করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে কেইস ওয়েস্টার্ন রিজার্ভ ইউনিভার্সিটিতে হওয়া এই বিতর্কে দর্শকসারিতে উপস্থিত ছিলেন অল্প কয়েকজন; তাদেরকে বসতে হয়েছে সামাজিক দূরত্ব মেনে। ভাইরাসজনিত সতর্কতার কারণে রীতি অনুযায়ী দুই প্রার্থীর মধ্যে হাত মেলানোর পর্বও বাদ রাখা হয়।
বিতর্কে বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রে ২ লাখের বেশি প্রাণ কেড়ে নেওয়া করোনাভাইরাস মহামারী মোকাবেলায় ট্রাম্পের নেতৃত্বের ব্যর্থতার কড়া সমালোচনা করেন।
“হয় তিনি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন অথবা তিনি শেয়ার বাজারের দিকে তাকিয়ে ছিলেন। অনেক মানুষ মারা গেছে, আরও মারা যাবে যদি না তিনি দ্রুত আরেকটু স্মার্ট হন,” অর্থনীতি সচলে বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার সমর্থক ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে বলেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী।
বাইডনের ‘স্মার্ট’ শব্দ ব্যবহারে আপত্তি জানান ট্রাম্প। বলেন, “আপনি হয় ক্লাসের সবচেয়ে খারাপ কিংবা তার কাছাকাছি ধরনের ছাত্র হিসেবে ডিগ্রি নিয়েছেন। কখনো স্মার্ট শব্দটা আমার সামনে উচ্চারণ করবেন না। কখনো করবেন না।”
বিবিসি জানিয়েছে, স্থানীয় কর্তৃপক্ষের দেওয়া বিধিনিষেধ অনুযায়ী বিতর্ককক্ষে উপস্থিত সবার মুখে মাস্ক থাকার কথা থাকলেও ট্রাম্পের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে কেবল ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পকে বিতর্ক চলাকালে মাস্কে মুখ ঢেকে রাখতে দেখা গেছে।
স্বাস্থ্যসেবা ইস্যুতে বাইডেন ডেমোক্র্যাট পার্টির সোশালিস্টদের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছেন বলেও বিতর্কে অভিযোগ করেন ট্রাম্প। বলেন, “তারা আপনার উপর আধিপত্য করতে যাচ্ছে, জো, আপনি জানেন সেটা।”
জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, “এখন আমিই ডেমোক্র্যাটিক পার্টি।”
বাইডেন মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ‘মিথ্যাবাদী’ বলেও অ্যাখ্যা দেন।
“সবাই জানে সে মিথ্যাবাদী,” বলেন তিনি।
ট্রাম্প এরপর যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টে প্রয়াত বিচারপতি গিন্সবার্গের শূন্য আসন দ্রুত পূরণের সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দেন। নির্বাচিত হলে বাইডেন কাকে কাকে সর্বোচ্চ আদালতের বিচারক বানাতে চান, ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর কাছে তার তালিকাও চান ট্রাম্প।
বারাক ওবামা আমলে ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করা বাইডেন অবশ্য ট্রাম্পের ‘ফাঁদে পা দেন নি’। উল্টো নিয়মিত তার বক্তৃতার সময়ে হস্তক্ষেপ ও কথা বলায় রিপাবলিকান প্রার্থীর বিরুদ্ধে চটে যান তিনি।
“আপনি কি একটু চুপ করবেন?,” বলেন বাইডেন।
এক পর্যায়ে ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর আক্রমণ আরও ধারালো হয়ে ওঠে, তিনি বলেন, “এই ভাঁড়ের সঙ্গে কোনো কথা বলা কঠিন, এই লোকটির সঙ্গে।”
ট্রাম্পকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ‘কুকুরছানা’ বলেও টিটকারি করেন বাইডেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট একদা সেনাবাহিনীর সদস্যদের ‘লুজার’ বলেছিলেন বলে অজ্ঞাত সূত্রের বরাত দিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে সে প্রসঙ্গে নিজের মৃত ছেলে বাউয়ের সেনাবাহিনী সম্পৃক্ততার কথাও উল্লেখ করেন বাইডেন। ট্রাম্পের একাধিক সাবেক ও বর্তমান উপদেষ্টা অবশ্য প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ওঠা এ অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন।
বাউ সেনাসদস্য হিসেবে ইরাকেও ছিলেন।
“সে লুজার নয়, সে ছিল দেশপ্রেমিক,” ক্রুদ্ধ কণ্ঠে বলেন বাইডেন।
“সত্যি? আপনি কি হান্টারের কথা বলছেন?,” পাল্টা প্রশ্নে জানতে চান ট্রাম্প।
বাইডেন বলেন, “আমি আমার ছেলে বাউ বাইডেনের কথা বলছি।”
এরপর ট্রাম্প জানান তিনি বাউ সম্পর্কে তেমন জানেন না।
“আমি হান্টারকে জানি। তাকে সেনাবাহিনী থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল; কোকেন ব্যবহারের জন্য অসম্মানের সঙ্গে ডিসচার্জ করে দেওয়া হয়েছিল। তার কোনো চাকরিও ছিল না, যতক্ষণ পর্যন্ত না আপনি ভাইস প্রেসিডেন্ট হন।
“আর আপনি ভাইস প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ইউক্রেইন, চীন, মস্কোসহ বিভিন্ন জায়গায় তার কপাল খুলে গেছে। তিনি ভাগ্য গড়ে নিয়েছেন এবং তার কোনো চাকরি ছিল না,” বলেন ট্রাম্প।
রিপাবলিকান প্রার্থীর কথার মধ্যেই বাইডেন চিৎকার করে বলেন, “আরও অনেকের মতো আমার ছেলেরও মাদক সংক্রান্ত সমস্যা ছিল। সে অতিরিক্ত মাত্রায় নিতো। সে তা কাটিয়ে উঠেছে। সে এটা নিয়ে কাজ করছে এবং আমি তাকে নিয়ে গর্বিত।”
ট্রাম্প-বাইডেনের এদিনের বিতর্কের সঞ্চালক ছিলেন ক্রিস ওয়ালেস; এ নিয়ে দ্বিতীয়বার তিনি প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কের সঞ্চালনা করলেন। ফক্স নিউজের এ অ্যাংকরকে এদিন ঝগড়ারত দুই প্রার্থীর বিবাদ থামাতে গলদঘর্ম হতে হয়েছে।
এক পর্যায়ে তিনি প্রেসিডেন্টকে বাইডেনের কথা বলার সময় বাধা না দিতে অনুরোধ করেন। ট্রাম্প সেসময় বাইডেনের বিরুদ্ধেও তার কথা বলার সময় বাধা দেওয়ার অভিযোগ তোলেন।
“সত্যিটা হচ্ছে, আপনি বেশি বাধা দিচ্ছেন,” বলেন ওয়ালেস।
টেলিভিশনে সরাসরি বিতর্ক দেখা দর্শকদের ওপর পরিচালিত জরিপের ভিত্তিতে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, ১০ জনে ৬ জন দর্শকই বাইডেন বেশি ভাল করেছেন বলে মনে করছে। আর ট্রাম্পকে জয়ী মনে করছেন মাত্র ২৮ শতাংশ দর্শক।
এসএসআরএস এর মাধ্যমে ফোন এবং সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে সিএনএন এই জরিপ চালিয়েছে। জরিপের এবারের ফল ২০১৬ সালের নির্বাচনের সময়কার হিলারি ক্লিনটন এবং ডনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে হওয়া প্রথম বিতর্ক-পরবর্তী জরিপের ফলের মতোই হয়েছে। ওইবছরের জরিপে ৬২ শতাংশ ভোটার হিলারি জয়ী হয়েছেন বলে মত দিয়েছিলেন। আর ট্রাম্পকে জয়ী মনে করেছিলেন ২৭ শতাংশ ভোটার।
সিএনএন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৬৫ শতাংশ ভোটারই বিতর্কে বাইডেন সত্য বলেছেন বলে মত দিয়েছেন। আর ট্রাম্পের কথাকে সত্য বলেছেন ২৯ শতাংশ ভোটার। তাছাড়া, বাইডেন যেভাবে ট্রাম্পকে আক্রমণ করেছেন তা ঠিক বলে মনে করছেন ৬৯ শতাংশ ভোটার। অন্যদিকে, ট্রাম্প যেভাবে বাইডেনকে আক্রমণ করেছেন তা ঠিক বলে মনে করছেন ৩২ শতাংশ ভোটার।
যদিও সিএনএন বলছে, এই জরিপ সব মার্কিনির মতের প্রতিফলন নয়। কারণ, ট্রাম্প-বাইডেনের মঙ্গলবারের বিতর্কটি যেসব নিবন্ধিত ভোটার দেখেছেন, কেবল তাদের মতই নেওয়া হয়েছে জরিপে। বিতর্কটি যারা দেখেছেন তারা সামগ্রিকভাবে সাধারণ মার্কিনিদের তুলনায় একটু বেশি দলীয় রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি সম্পন্ন।
জরিপে অংশ নেওয়াদের মধ্যে নিরপেক্ষ ভোটার হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন ৩৬ শতাংশ, সাধারণ মার্কিনিদের হিসাবে যা ৪০ শতাংশের মতো। তাছাড়া, নিবন্ধিত ভোটারদের যারা বিতর্ক দেখেছেন, তাদের ৩৯ শতাংশই ছিল ডেমোক্রেটিক পার্টির সমর্থক। আর রিপাবলিকান সমর্থক ছিল ২৫ শতাংশ।
তবে এর বাইরেও জরিপে দেখা গেছে, বৃহত্তর পরিসরে যেসব ভোটার বিতর্ক দেখেছেন, তাদের বেশির ভাগই বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ওপর আস্থা রেখেছেন। জাতিগত বৈষম্যের ক্ষেত্রে বাইডেনের ওপর আস্থাশীল ৬৬ শতাংশ ভোটার। আর ট্রাম্পের ওপর আস্থা রাখেন ২৯ শতাংশ ভোটার।
স্বাস্থ্য পরিষেবায় বাইডেন এবং ট্রাম্পের ওপর ভোটারদের আস্থার হার যথাক্রমে ৬৬ ও ৩২ শতাংশ। করোনাভাইরাস মোকাবেলায় বাইডেন এবং ট্রাম্পের ওপর এই আস্থা যথাক্রমে ৬৪ ও ৩৪ শতাংশ। আর সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি মনোনয়নের ক্ষেত্রেও বাইডেনের ওপর আস্থা রাখেন ৫৪ শতাংশ ভোটার। আর ট্রাম্পের ওপর আস্থা রাখেন ৪৩ শতাংশ ভোটার।
তবে অর্থনীতির ক্ষেত্রে বাইডেনের সঙ্গে ট্রাম্পের ব্যবধান অনেকটাই কম দেখা গেছে। এক্ষেত্রে, ট্রাম্পের ওপর আস্থা রাখেন ৪৮ শতাংশ ভোটার। আর বাইডেনের ওপর আস্থা রাখেন ৫০ শতাংশ ভোটার।
কিন্তু বিতর্কে যে প্রার্থী যেমনই করুন, তাতে অধিকাংশ দর্শকেরই মত পরিবর্তন হয়নি। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৫৭ শতাংশই জানিয়েছেন, বিতর্কের কারণে তাদের মত বদলাবে না। আর যারা মন পরিবর্তন করতে পারেন বলেছেন, তাদেরও ৩২ শতাংশ বাইডেনকে ভোট দিতে পারেন বলে জানিয়েছেন। অন্যদিকে, ট্রাম্পের দিকে ঝুঁকে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে ১১ শতাংশ ভোটারের।
বিতর্ক-পরবর্তী জরিপে ট্রাম্প এবং বাইডেনের প্রতি ভোটারদের অনুকূল দৃষ্টিভঙ্গি আগের জরিপের মতো একইরকম থাকতে দেখা গেছে। বাইডেনের ক্ষেত্রে এই হার ৬২ শতাংশ এবং ট্রাম্পের ক্ষেত্রে ৩৫ শতাংশ। একই ভোটারদের ওপর বিতর্কের আগে পরিচালিত জরিপগুলোতে যে হার ছিল- বাইডেনের ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ এবং ট্রাম্পের ক্ষেত্রে ৩৭ শতাংশ।
‘ইনশাল্লাহ’ বললেন বাইডেন, টুইটারে ঝড়
মার্কিন নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেন উচ্চারণ করেছেন আরবি শব্দ ‘ইনশাল্লাহ’। এরপর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বাইডেনের মুখে এমন শব্দ উচ্চারণকে অনেকেই তিহাসিক আখ্যায়িত করেছেন।
মঙ্গলবারের বাইডেনের সঙ্গে বিতর্কে ট্রাম্পের আয়কর প্রদানের বিষয়টি আলোচনায় আসে। এসময় অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ক্রিস ওয়ালেস বারবার চাপ দেন যে, ট্রাম্প কবে আয়কর দাখিলের তথ্য প্রকাশ করতে পারেন। আর উত্তরে ট্রাম্প বারবার বলতে থাকেন, আপনারা সময় মতোই তা দেখতে পাবেন।
আর এসময় জো বাইডেন ব্যঙ্গ করে বলেন, কবে? ইনশাল্লাহ?
ইনশাল্লাহ বলা বাইডেনের প্রচারণা শিবিরের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করেছেন এনপিআর-এর জাতীয় রাজনীতি বিষয়ক প্রতিনিধি আসমা খালিদ।
সম্প্রতি বাইডেন তার ব্যক্তিগত আয়ের যে তথ্য প্রকাশ করেছেন তা অনুযায়ী, সাবেক এই ভাইস প্রেসিডেন্ট ও তার স্ত্রী জিল বাইডেন তাদের মোট সম্পদ ৯ লাখ ৮৫ হাজার ডলারের ৩০ শতাংশ আয়কর পরিশোধ করেছেন।
এদিকে, মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১৫ বছরের মধ্যে ১০ বছর ট্রাম্প কোনও আয়কর প্রদান করেননি। খবরে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালে মাত্র ৭৫০ ডলার ও ২০১৭ সালে আরও ৭৫০ ডলার আয়কর প্রদান করেছেন।