শীত আসছে। তবে এই আবহাওয়াতে অনেকের চুলকানির সমস্যা দেখা দেয়।
এর কারণ হতে পারে ত্বকের শুষ্কতা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সময়ে ত্বকের আর্দ্রতা রক্ষা করা উপকারী।
চুলকানি একটি জটিল বিষয়
যুক্তরাষ্ট্রের রোড আইল্যান্ডের ‘ব্রাউন ইউনিভার্সিটি’র বোর্ড প্রত্যায়িত চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ সার্জন হেইলি গোল্ডবাক রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “সাধারণত চুলকানি ঘটে ত্বকের নির্দিষ্ট স্নায়ু গ্রন্থি উদ্দীপিত হলে। আর ‘সি-ফাইবার’ নামক স্নায়ুর মাধ্যমে মস্তিষ্কে চুলকানির সংকেত পাঠায়।”
“ত্বকে প্রদাহ বা ক্ষতির কারণেও চুলকানির উদ্ভব হয় যা মূলত স্নায়ুকোষের ক্ষতির কারণে হয়ে থাকে। আবার এটা মনস্তাত্বিক ব্যধির কারণেও এরকম হতে পারে”, একই প্রতিবেদনে ব্যাখ্যা করেন ‘ব্রাউন ডার্মাটলজি’র চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ টিফানি লিবি।
সহজ কথায় তিনি বলেন, “চুলকানি একটি জটিল প্রক্রিয়া যা নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন আছে।”
শীতে ত্বক চুলকানোর কারণ
শীতকাল আসলে ত্বক স্বাভাবিকভাবে শুষ্ক হয়ে যায়।
ডা. গোল্ডবাকের মতে, “বাতাসে আর্দ্রতার মাত্রা কমে যায়। ফলে ত্বকের জলীয়মাত্রা কমে।”
ত্বকের জলীয়মাত্রা কমলে সুরক্ষার স্তরও দুর্বল হয়ে পড়ে। কোষ ও লিপিডের বাইরের অংশ শুষ্ক হয়ে যায়। তাই ত্বকে শুষ্কতা ও জ্বলুনির সমস্যা দেখা দেয়।
ডা. লিবি বলেন, “ত্বকের নিচের স্নায়ুর প্রান্তগুলোতেও অস্বস্তি তৈরি হতে পারে। যা চুলকানির সংবেদন সৃষ্টি করে। একজিমা ও চুলকানির নানান উপসর্গ শুষ্ক ও ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় আরও মারাত্মক হয়।”
“চুলকানি দেহের যে কোনো স্থানেই হতে পারে। যেমন- একজিমার সাধারণ অবস্থা ‘অ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিস’, শরীরে ভাঁজে যেমন- ঘাড়, কনুই ও হাঁটুর পেছনে দেখা দেয়। এগুলো ঘষা লাগার ফলে জ্বালাপোড়ার সৃষ্টি করে”, বলেন ডা. লিবি।
তিনি ব্যাখ্যা করেন, “চোখের পাতা, মুখ ও হাতে শুষ্কতার প্রবণতা বেশি। এগুলো ঠাণ্ডা বাতাস, জল ও সাবানের সংস্পর্শে আসলে তীব্রতা দেখা দেয়।”
ডা লিবি আরও বলেন, “শুষ্ক ত্বক মানেই যে চুলকানি হবে তা নয়। শুষ্ক ত্বক ও চুলকানির সংযোগ খোঁজার জন্য আরও গবেষণার প্রয়োজন।”
শুষ্ক ত্বক উপশমের উপায়
ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে লোশন ব্যবহার করা যেতে পারে। ডা. গোল্ডবাক ঘন অয়েনমেন্ট ও ক্রিম ব্যবহারের পরামর্শ দেন। এতে আর্দ্রতা রক্ষাকারী উপাদান যেমন- শিয়া বাটার, ডিমেথিকন ও পেট্রোলিয়াম থাকে।”
চুলকানি ও ‘হাইভস’ বা লালচে-স্ফোট দেখা দিলে ত্বকে অন্য সমস্যাও থাকতে পারে
ঠাণ্ডা পরিবেশে থাকার করণে যদি ত্বকে সমস্যা দেখা দেয় তবে ধরে নিতে হবে ঠাণ্ডায় অ্যালার্জি আছে। এই বিষয়টা একটা পরীক্ষার মাধ্যমে জানা সম্ভব।
একটা বরফের টুকরা ত্বকের ওপর কিছুক্ষণ ধরে রাখার পর সেখানে যদি প্রদাহ, ফুলে ওঠা বা লালচেভাবে সৃষ্টি হয় তবে ধরে নিতেই হবে ঠাণ্ডার কারণে সেটা হচ্ছে। এছাড়াও ঠাণ্ডায় অ্যালার্জি থাকলে তা কিছুক্ষণের মধ্যেই অনুভূত হয়। যেমন- চুলকানি, ‘হাইভস’, দেহে ঝাঁকুনি ইত্যাদি।
এক্ষেত্রে শীতল পরিবেশ যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে। এতেও কোনো কাজ না হলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।