ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমের সুদের হারের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বুধবার সচিবালয়ে অর্থনীতি ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমি আবার রিভিজিট করব, এবার যদি না পারি নেক্সট বাজেটে করব। দেশের গরিব মানুষ কষ্ট পাক আমি চাই না “
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের এক পরিপত্রে ডাকঘরে যে সঞ্চয় ব্যাংক রয়েছে সেই ব্যাংকের সুদের হার সরকারি ব্যাংকের সুদের হারের সমপর্যায়ে নিয়ে আসা হয়।
অর্থমন্ত্রণালয় বলেছে, ডাকঘরে চারভাবে টাকা রাখা যায়। ডাকঘর থেকে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরে সঞ্চয়পত্র কেনা যায়, ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকে মেয়াদি হিসাব ও সাধারণ হিসাব খোলা যায়। আবার ডাক জীবন বিমাও করা যায়।
এবার সুদের হার কমেছে ডাকঘরের সঞ্চয় স্কিমের মেয়াদি হিসাব ও সাধারণ হিসাবে। সাধারণ হিসাবের ক্ষেত্রে সুদের হার সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে।
সুদের হার কমানোর ব্যাখ্যায় অর্থমন্ত্রী বলেন, “ডাকঘরের (সঞ্চয় স্কিম) সুদের হার কমানো হয়েছে এটি আমি দেখব। সঞ্চয়পত্রে বলা ছিল ইন্টারেস্ট রেইট কমাতে হলে আমাদের কম ইন্টারেস্টে ফান্ড দিতে হবে ব্যাংকগুলোর কাছে, না হলে ব্যাংকগুলো কিভাবে কাস্টমারকে লোন দেবে? সে কারণে সে কাজটি আমাদের করতে হচ্ছে।”
সঞ্চয়পত্রগুলো কোনো দেশে সমাদৃত নয় জানিয়ে তিনি বলেন, “এগুলো ফাইন্যান্সিয়াল টুল হিসেবে অর্থনীতিতে ভালো ফল দেয় না। তবে এখান থেকে সরকার লোন নিয়েছে। আমাদের এখন মূল কাজ হচ্ছে কোথাও ছাড় দিতে হবে কোথাও কিছু পেতে হলে।”
সুদের হার এক অংকে নিয়ে আসা মূল লক্ষ্য জানিয়ে মুস্তফা কামাল বলেন, “এর সাথে যতগুলো রিলেটেড রয়েছে তাতে হাত দিতে হবে, সঞ্চয়পত্রে হাত দিতে হবে। সঞ্চয়পত্র করা হয়েছিল পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য। এখানে কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না।
“প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর টাকা এখানে আসুক আমরা চাই, এজন্য এগুলোকে একটি বিধি-বিধানের মাধ্যমে নিয়ে এসেছি। প্রথমে ২৫, পরে ৫০ এবং পরে যৌথ এক কোটি টাকা করলাম। তবে আজ যেটা করলাম কাল পরিবর্তন করতে হতে পারে, এটি বাস্তবায়ন হবে ১ এপ্রিল থেকে।”
অর্থমন্ত্রী বলেন, “পোস্ট অফিসে আমরা হাত দেইনি, সব চলে গেছে সেখানে বেশি ইন্টারেস্টের আশায়, সবাই এখন এ কথা বলছে। দেখি আমরা কিছু করতে পারি কিনা।”
ডাকঘরে গরিব ও প্রান্তিক মানুষ স্কিমগুলো নিয়ে থাকে, তাদের জন্য কিছু করা হবে কিনা জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, “এদের জন্য কিছু করতে হলে করব, আমাদের জানতে হবে তারা কারা, তাদের আইডেন্টিফিকেশন নম্বর দেব, যাতে বেশী কিনতে না পারে, সেটি আমরা দেখব। এসব মানুষদের জন্য ট্যাক্স রেইট রিকনসিডার করব, এখান থেকে ওখানে যেতে না পারে সেজন্য ব্যবস্থা করে দেব।“
অর্থমন্ত্রী বলেন, “মানুষ সুদ পরিশোধ করতে না পেরে আত্মহত্যা করছে, পৃথিবীতে কোনো দেশে এভাবে ব্যাংকে টাকা রাখলে ইন্টারেস্ট দেওয়া হয় না, উল্টো টাকা দিতে হয়। যেদেশে ব্যবসা আছে সেদেশে ব্যাংকে টাকা রাখে না। আমাদের কাছে সবাই সমান, ব্যবসায়ীদের ইফেকটিভ রেইটে টাকা দিতে হবে, এটি আমাদের কমিটমেন্ট। না হলে ব্যবসা প্রসার হবে না, ছেলেমেয়েদের কর্মসংস্থান হবে না। “