নানা অনিয়মের অভিযোগের মধ্যে অনুষ্ঠিত ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন বাতিলের দাবিতে মঙ্গলবার বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে ভোট বর্জনকারী বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীরা।
সোমবার হলগুলোতে ভোটগ্রহণ শেষে গণনা চলার মধ্যে বিকাল ৫টায় উপাচার্য ভবনের সামনে সমাবেশে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাম সংগঠনগুলোর প্যানেলের ভিপি প্রার্থী লিটন নন্দী।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্যানেল, স্বতন্ত্র জোটের প্যানেল, স্বতন্ত্র অন্য প্রার্থী ও তাদের প্রতিনিধিরাও এই সমাবেশে ছিলেন।
বিকাল ২টায় ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার আগেই কারচুপির অভিযোগ তুলে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিলেন ছাত্রলীগ বাদে অন্য প্রায় সব প্যানেলের প্রার্থীরা।
ছাত্র ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী বলেন, “নির্বাচন বর্জনকারী সব দলের ও প্যানেলের প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে বলছি, ফল বাতিল ও ভিসির পদত্যাগের দাবিতে মঙ্গলবার সকাল ১০টায় রাজু ভাস্কর্যে ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দুটি শর্তও দেন এই ভিপি প্রার্থী।
“ডাকসু নির্বাচন যদি বাতিল করা না হয় এবং আজ রাতের মধ্যে ফল ঘোষণা করা হয়, তাহলে আগামীকালের কর্মসূচি থাকবে। আপনার এটাকে ছাত্র ধর্মঘট হিসেবে নেবেন না। সবাই ক্যাম্পাসে আসবেন, কিন্তু ক্লাসে যাবেন না।”
তার এই কর্মসূচি ঘোষণার মধ্যেই বিভিন্ন হলে ভোট গণনা চলছিল; দুই-একটি হলে ফলও ঘোষণাও হচ্ছিল।
সমাবেশের আগে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে কারচুপি ও বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগ দিয়ে আসেন ভোট বর্জনকারী প্রার্থীরা।
এরপর তারা উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। সেখানে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করে ক্যাম্পাসে মিছিল করেন তারা।
উপাচার্য অধ্যাপক মো. আকতারুজ্জামান বলেছেন, ‘দুয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া’ এ নির্বাচন ‘উৎসবমুখর’ হয়েছে।
সরকার সমর্থক সংগঠন ছাত্রলীগও দাবি করেছে, ভোটগ্রহণ সুষ্ঠু হয়েছে।
২৯ বছর পর অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হলে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরুর কথা থাকলেও ব্যালট পেপার নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে রোকেয়া হল ও বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলে ভোটগ্রহণ বিঘ্নিত হয়।
এর মধ্যে কুয়েত মৈত্রী হলের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সেখানে ভোট শুরুর আগেই বস্তাভর্তি ব্যালট পেপার পাওয়া গেছে, যেগুলোতে ভোটের চিহ্ন দেওয়া ছিল। আর দুপুরে রোকেয়া হলে ভোটগ্রহণ কক্ষের পেছনে আরেকটি কক্ষে ব্যালট পেপার বোঝাই ট্রাংক পেলে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা কারচুপির অভিযোগ এনে তা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।