ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হিসেবে মো. আছাদুজ্জামান মিয়ার চাকরির মেয়াদ এক মাস বাড়িয়েছে সরকার।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে তার চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার দিন মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. ওলিউর রহমান স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘অবসরোত্তর ছুটি বাতিলের শর্তে ১৪ আগস্ট ২০১৯ থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত (এক মাস) ডিএমপি কমিশনার পদে মো.আছাদুজ্জামান মিয়াকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করা হলো’।
এতে আরও বলা হয়, এই নিয়োগের শর্তাবলী অনুমোদিত চুক্তিপত্র দ্বারা নির্ধারিত হবে।
দীর্ঘ সময় দায়িত্ব পালনের পর আছাদুজ্জামানের চাকরির মেয়াদ শেষ হয় ১৩ আগস্ট। এদিনই আনুষ্ঠানিক বিদায় নিয়ে অবসরোত্তর ছুটিতে যাওয়ার কথা ছিল তার।
আছাদুজ্জামান মিয়া ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি ডিএমপির কমিশনার হিসেবে যোগ দেন। এই পদে দায়িত্ব পালনকালেই তিনি ডিআইজি থেকে অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতি পান। ডিএমপির ইতিহাসে তিনি দীর্ঘ সময় কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া তার দায়িত্বকালে পুলিশকে জনসম্পৃক্ত করতে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ নেন। পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও নাগরিক সুরক্ষায় নেওয়া তার উদ্যোগগুলোও প্রশংসিত হয়।
তিনি পুলিশের জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে ঢাকায় বিট পুলিশিং ব্যবস্থার প্রবর্তন ও পুলিশভীতি দূর করতে উঠান বৈঠকের ব্যবস্থা শুরু করেন। এ ছাড়া অনেকটা নিজের উদ্যোগেই বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়াদের তথ্য ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সিটিজেন ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিআইএমএস) পদ্ধতির প্রচলন করেন। এর মাধ্যমে ঢাকায় ভাড়াটে ও বাড়ি মালিকদের তথ্য সংরক্ষণ করা হয়। অপরাধ দমনে এ পদ্ধতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।
ডিএমপি কর্মকর্তারা বলছেন, আছাদুজ্জামান মিয়া পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে টানা ৯২ দিন অগ্নিসন্ত্রাস চালানো হয়, যা তিনি শক্ত হাতে দমন করেন। এ ছাড়া কোটা সংস্কার আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন ও ভ্যাট আন্দোলনের নামে নানা নাশকতাও তার নেতৃত্বে দমন করা হয়।
২০১৬ সালে গুলশানে জঙ্গি হামলার পর বিদেশিদের আস্থা ফেরাতে তিনি বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম চালান। এ ছাড়া জঙ্গি দমনেও শক্তভাবে অভিযান পরিচালনা করা হয়। নিরাপত্তার জন্য ঢাকার বিভিন্ন সড়ক, অলিগলিও তিনি সিসিটিভির আওতায় নেন।
এ ছাড়া মাদকবিরোধী জোরালো অভিযানও হয় তার আমলে। এর বাইরে তিনি নিজের ইউনিটের পুলিশ সদস্যদের জন্য নানা কল্যাণমূলক কাজের প্রবর্তন করেন। এ সময়ে ডিএমপির নানা অবকাঠামোগত উন্নয়নও হয়।